বাংলাদেশি ব্যাটারদের বদান্যতায় মিরপুর টেস্টের প্রথম দিনে ১৬ উইকেটের পতন হলেও আজ দ্বিতীয় দিনে বোলাররা উইকেট নিতে পেরেছে মাত্র ৭টি।
মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৩ উইকেটে ১০১ রান হলেও এখনো ইনিংস হারের শঙ্কায় শান্ত বাহিনী।
যদিও দিনের একেবারে শেষ বলে উইকেট হারাতে বসেছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়। তবে বেনিফিট অব ডাউট বলেন বা আম্পায়ারের বদান্যতা বলেন, ব্যাট মাটি থেকে কিঞ্চিৎ উপরে থাকতে দেখা গেলেও এ যাত্রায় বেঁচে ফিরেছেন তরুণ এই ওপেনার। অপরাজিত আছেন ৩৮ রানে।
অন্যপ্রান্তে মাত্র ২৬ বলে ৩১ রান নিয়ে এখনো আস্থার প্রতীক হয়ে টিকে আছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল খ্যাত মুশফিকুর রহিম। কাল অবশ্যই তার উইলো থেকে ফাস্টেস্ট ফিফটিসহ সেঞ্চুরি দেখার অপেক্ষায় টাইগারভক্তরা।
অন্যদিকে প্রথম ইনিংসে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩০ রানের ইনিংস খেলা জয়ের ব্যাট থেকেও যদি এ ইনিংসে আরেকটা ভালো ইনিংস আসে, সেটা মন্দ হবে না। ৫টি চারের মার দেখা গেলেও, কিছুটা অধৈর্য হতেও দেখা তাকে। যাই হোক এসবই খেলার অংশ।
যদিও অধিনায়ক তথা লর্ড শান্ত আউট না হলে স্কোরটা আরও একটু ভালো দেখাতো। প্রথম ইনিংসে ৭ রানে আউট হওয়া শান্ত এ ইনিংসে আউট হয়েছেন সেট হয়েই। তার ২৩ রানের ইনিংসে ছিল ৩টি চারের সঙ্গে ইনিংসের একমাত্র একটা ছক্কাও।
এর আগে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা ছিল সেই হতাশাজনক। যেখান থেকে দলটা যেন বের হতে পারছে না কিছুতেই। প্রথম ইনিংসে ডাক মারা সাদমান এ ইনিংসেও যথারীতি ব্যর্থ, আউট হয়েছেন মাত্র ১ রানে। একই ওভারে উইকেট দিয়ে আসেন লিটল মাস্টার খ্যাত মুমিনুল।
রাবাদার জোড়া আঘাতে ফিল সিমন্সের প্রথম এসাইনমেন্ট যখন গুরুতর হুমকির মুখে, ঠিক তখনই ৫৫ রানের জুটিতে সেই হুমকি থেকে মাস্টারকে বাঁচানোর চেষ্টা দেখান দুই ছাত্র জয় ও শান্ত। মহারাজ এসে লর্ডকে তুলে নিলেও ছোটখাট মুশফিক ও জয়ের ব্যাটে ইনিংস হার এড়ানোর জন্য লড়াইটা ভালোই সামাল দিচ্ছে বাংলাদেশ।
বাকিটা সময়ই বলে দেবে অর্থাৎ বুধবার তৃতীয় দিনই দেখাবে আসলে কোন পথে হাঁটছে টাইগাররা। যদিও মিরপুরের পিচ প্রথম দিনের থেকে এখন যথেষ্টই সংযত। ব্যাট করতে তেমন অসুবিধা হচ্ছে না ব্যাটারদের। যেটা সবাইকে চোখে আঙুল না, ব্যাট দিয়েই দেখিয়ে দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ দিকের ব্যাটারা। আসলে ব্যাটার ছিলেন মাত্র একজন, তিনি ভেরাইন্নে। অনবদ্য ব্যাটিং শৈলী প্রদর্শন করে রীতিমতো সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন উইকেট কিপার এই ব্যাটার। সঙ্গে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে প্রথম ফিফটি আদায় করেছেন বোলার উইয়ান মুল্ডার, যে কারণে তাকে অলরাউন্ডারও বলা হয়েছে। এছাড়া পিয়েডও যে কি করতে পারেন সেটাও হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে তাইজুল-নাঈমরা।
মূলত এই তিন জনের দারুণ ব্যাটিংয়ের কারণে ২০২ রানের বড় লিড নিতে পারে সফরকারীরা। তাইজুলের আগের দিনের ৫ উইকেট আর একমাত্র পেসার হাসান মাহমুদ ৩টি ও মিরাজের ২ উইকেটের কল্যাণে ৩০৮ রানে অলআউট হয় প্রোটিয়ারা। এর আগে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় মাত্র ১০৬ রানে।
এখন স্বাগতিকরা যদি টেস্ট মেজাজে খেলতেই না পারে তাহলে সেই যা হবার তাই হবে, ইনিংস হার, ঠেকাবে সাধ্য কার?