বার্সার তিন ফুটবলার
স্পেন ও বার্সেলোনার কিংবদন্তি আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা পেশাদার ফুটবল থেকে অবসর নিয়েছেন। জাতীয় দল ও কাতালান ডেরা ছেড়ে মাঝে অখ্যাত কিছু ক্লাবে খেললেও নিজেদের অবসরের ঘোষণাটা দিলেন ক্যাম্প ন্যুতে ফিরে। কারণ এখানকার লা মাসিয়া থেকেই যে ইনিয়েস্তার বেড়ে ওঠা। তার অবসরে একসময়ের সতীর্থ লিওনেল মেসি, নেইমার জুনিয়র থেকে শুরু করে ফুটবলের রথী-মহারথীরাও শুভকামনা জানিয়েছেন।
ইনিয়েস্তার প্রথম যাত্রা মাত্র ১২ বছর বয়সে লা মাসিয়ায়। এরপর বার্সেলোনায় খেলেছেন ২০১৮ সাল পর্যন্ত। নিজের শৈশব–কৈশোর ও সবচেয়ে সুখের সময়টা যেখানে কাটিয়েছেন, সেই ক্লাব ছেড়ে যোগ দেন জাপানের ভিসেল কোবেতে। ক্লাবটিতে পাঁচ বছর কাটিয়ে গত মৌসুমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্লাব এমিরেটসে খেলেছেন। এরপর গত সোমবার সামাজিকমাধ্যমে দেওয়া এক ভিডিওবার্তায় ৪০ বছর বয়সে স্পেনের ২০১০ সালের বিশ্বকাপজয়ী এ মিডফিল্ডার অবসরের ঘোষণা দেন।
যেখান থেকে শুরু, সেই ঠিকানা ক্যাম্প ন্যুতে সপরিবারে ইনিয়েস্তা আবারও ফিরেছেন বিদায়বেলায়। নিজের সাফল্যমণ্ডিত ক্যারিয়ারের জন্য কৃতিত্বও দিয়েছেন বার্সাকে—এই চারজনের সঙ্গে এখানে থাকতে পেরে আমি ভাগ্যবান, যারা এই সফরে ছিল— আমার বাবা-মা, আমার দাদা এবং আমি। প্রায় ৩০ বছর পর খুব গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ মুহূর্তে আমরা এখানে এসেছি, দারুণ ব্যাপার। লা মাসিয়া আমাকে আজীবনের জন্য বদলে দিয়েছে। আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার ভাষা নেই। আমার জন্য বার্সায় আসাটা একটা স্বপ্ন ছিল এবং আমি সেটা পূরণের দিকে মনোযোগ দিয়েছিলাম, যা চেয়েছিলাম তার থেকে মনোযোগ কখনো সরাতে পারিনি।’
অল্প সময়ের মধ্যে শুভেচ্ছা বার্তা পেয়ে যান দীর্ঘ সময়ের সতীর্থ মেসির কাছ থেকে। এই আর্জেন্টাইন মহাতারকাসহ লা মাসিয়ায় একসঙ্গে তারা কয়েকজন বেড়ে উঠেছেন। লম্বা সময় খেলতে গিয়ে জিতেছেন অসংখ্য ট্রফি। সাবেক এই সতীর্থের অবসরে আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন মেসি, ‘তুমি জাদুকরী সতীর্থদের একজন এবং আমি যাদের সঙ্গে খেলতে সবচেয়ে বেশি উপভোগ করতাম, তাদের একজন। বল তোমাকে মিস করবে, সঙ্গে আমরাও। তোমাকে শুভকামনা, একজন কিংবদন্তি।’
২০০৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়কালে মেসি-ইনিয়েস্তা একসঙ্গে বার্সেলোনার হয়ে চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন। এরই মাঝে ২০১৩ সালে তাদের সঙ্গে কাতালান ক্লাবটিতে যুক্ত হন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার। তিনি সাবেক সতীর্থ ইনিয়েস্তার জন্য বার্তা পাঠিয়েছেন। সামাজিকমাধ্যমে নেইমার লিখেছেন—‘সেরা একজন মিডফিল্ডারের সঙ্গে আমি অসাধারণ কিছু মুহূর্ত কাটানোর সুযোগ পেয়েছি। তোমার সঙ্গে খেলতে পারা আনন্দের, একসঙ্গে আমাদের অনেক জয় এসেছে। অনাগত জীবনের জন্য শুভকামনা জানাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, ফুটবল ক্যারিয়ারে ইনিয়েস্তা হয়তো সবচেয়ে বড় সাফল্য হিসেবে মনে রাখবেন ২০১০ বিশ্বকাপ জয়কে। ওই আসরের ফাইনালে তার একমাত্র গোলেই নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে স্প্যানিশরা প্রথমবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন খেতাব পান। জাতীয় দলের ২০০৮ ও ২০১২ সালে টানা দুটি ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জয়েও বড় অবদান ছিল এই মিডফিল্ডারের। এ ছাড়া তিনি বার্সেলোনা মূল দলের হয়ে মোট ৬৭৪ ম্যাচ খেলেছেন। জিতেছেন ৪টি চ্যাম্পিয়নস লিগ, ৯টি লা লিগা, ৬টি কোপা দেল রেসহ ৩২টি শিরোপা।