৮৯তম জন্মদিন ছিল শুক্রবার। কিন্তু জš§দিন পালনের শক্তি ছিল না পঞ্চাশের দশকের গুণী ফুটবলার জহিরুল হকের।
শনিবার সকালে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তৎকালীন পাকিস্তান জাতীয় দলে খেলা এই বাঙালি ডিফেন্ডার (ইন্নালিল্লাহি ... রাজিউন)।
তিনি স্ত্রী ও চার ছেলেমেয়ে রেখে গেছেন। মিরপুরের বাসা সংলগ্ন আনসার ক্যাম্প জামে মসজিদে প্রথম এবং মণিপুরীপাড়ায় দ্বিতীয় জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।
জহিরুল হকের জš§ ১৯৩৫ সালের ৫ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে। পঞ্চাশের দশকে তুখোড় ফুটবলার ছিলেন এই রাইট-ব্যাক। ঢাকা মোহামেডানের জার্সিতে খেলেছেন ১৯৬০ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত। ঐতিহ্যবাহী মোহামেডানের অধিনায়ক ছিলেন পাঁচবার। কবির-আশরাফ-মারী ত্রয়ী যখন মাঠ মাতাচ্ছেন, সাদা-কালোর সেই দলের ডিফেন্স সামলেছেন জহির। সাতবার লিগ জিতেছেন।
১৯৫৪ সালে তেজগাঁও ফ্রেন্ডস ইউনিয়ন ক্লাব দিয়ে ঢাকার ফুটবলে তার যাত্রা শুরু। ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত এই ক্লাবে খেলে পরের দুই বছর খেলেন সেন্ট্রাল প্রিন্টিং অ্যান্ড স্টেশনারিতে। পুলিশ দলে খেলেন ১৯৫৯-এ।
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান দলে খেলেছেন ১৯৫৭-৬০ সাল পর্যন্ত। ’৬০ সালে ছিলেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান দলের অধিনায়ক। জাতীয় দলের জার্সিতে ১৯৬১ সালে ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুটি ম্যাচ খেলেন মিয়ানমার (তৎকালীন বার্মা) সঙ্গে। ১৯৬২ সালে খেলেছেন মালয়েশিয়ার মারদেকা কাপে।
ওই বছর জাকার্তা এশিয়ান গেমস এবং ১৯৬৪তে খেলেছেন চীনের পিকিংয়ে (এখন বেইজিং) দেশটির স্বাধীনতা দিবস টুর্নামেন্টে। ১৯৬৫ সালে রাশিয়ার বাকু ওয়েল মিল দলের বিপক্ষে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও করাচিতে খেলেছেন তৎকালীন জাতীয় দলের হয়ে। চারবার আগা খান গোল্ডকাপের ফাইনাল খেলেছেন। ১৯৬০ সালে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন।
চট্টগ্রামের হয়ে জিতেছিলেন বিভাগীয় শিরোপা। ১৯৬৪ সালে ক্রীড়ালেখক সমিতির বর্ষসেরা ফুটবলার হন। ২০০১ সালে পেয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার। ‘মোহামেডানের জহির ভাই’ খ্যাত জহিরুল হকের মৃত্যুতে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।