অভিষেকে ৬ উইকেট নিয়ে ৫৯ বছর আগের সুখস্মৃতি ফেরালেন জামাল
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৫১ পিএম
আমের জামালকে টেস্ট অভিষেকের দিনটায় খুব একটা ধারালো মনে হয়নি। খুব গতিময় নন তিনি, স্রেফ মিডিয়াম পেসার। স্কিলও বিশেষ কিছু চোখে পড়েনি। দ্বিতীয় দিনে সেই তিনিই জ্বলে উঠলেন দারুণভাবে। পাকিস্তানের এই পেসার নজর কাড়লেন ক্ষুরধার বোলিংয়ে। ৬ উইকেট নিয়ে ফিরিয়ে আনলেন পাকিস্তান ক্রিকেটের ৫৯ বছর আগের এক স্মৃতি।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলতি পার্থ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১১১ রানে ৬ উইকেট নিয়ে অভিষেক স্মরণীয় করে রাখলেন জামাল।
আরও পড়ুন: নিলামে মেসির সেই ৬ জার্সি বিক্রি
তার আগে টেস্ট অভিষেকে অস্ট্রেলিয়ায় ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি ছিল পাকিস্তানের আর কেবল একজন বোলারের। ১৯৬৪ সালের ডিসেম্বরে মেলবোর্নে ৮৯ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন আরিফ বাট।
জামালের মতো আরিফও ছিলেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার। তবে মিলটুকু এখানেই শেষ করতে চাইবেন জামাল। অমন অভিষেকের পরও আরিফের টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছিল যে তিন টেস্টেই!
সব দেশ মিলিয়ে সফরকারী বোলার হিসেবে অভিষেকে অস্ট্রেলিয়ায় ৬ উইকেট নেওয়ার কীর্তি আছে আর কেবল একজন বোলারের। তিনিও এই উপমহাদেশের এবং তিনিও ছিলেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার। ১৯৬৭ সালে অ্যাডিলেইডে ৬৭ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন ভারতের সৈয়দ আবিদ আলি।
টেস্ট অভিষেকে অস্ট্রেলিয়ায় ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি আছে আর ৬ জন সফরকারী বোলারের। তারা সবাই ইংল্যান্ডের। সেই তালিকায় আছেন ইতিহাসের প্রথম টেস্ট খেলা আলফ্রে শ ও সর্বকালের সেরাদের একজন সিডনি বার্নস। এ ছাড়া এই স্বাদ পেয়েছেন ববি পিল, কেন শাটলওর্থ, ফ্র্যাঙ্ক ফস্টার ও লেন ব্রাউন্ড।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই পার্থ টেস্টের প্রথম দিনে প্রথম উইকেট পেতে পারতেন জামালই। তার বলে উসমান খাজার ক্যাচ ছাড়েন আব্দুল্লাহ শফিক। তবে এ ছাড়া খুব কার্যকর মনে হয়নি তাকে। প্রথম দুই সেশনে দুই স্পেলে ৮ ওভার মাত্র বোলিং করে রান দেন ৪২।
আবার তাকে বোলিং দেওয়া হয় দ্বিতীয় নতুন বল নেওয়ার আগে। ততক্ষণে ৭২ ওভার পেরিয়ে গেছে। এবার স্পেলের প্রথম বলেই উইকেটের দেখা পান তিনি। যদিও তাতে বড় অবদান ব্যাটসম্যান ট্রাভিস হেডের। অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের শর্ট বলে র্যাম্প শটে থার্ডম্যানে ক্যাচ দেন হেড।
এরপর দিনের সবচেয়ে বড় শিকারও ধরেন জামাল। এবারের উইকেট দলীয় পরিকল্পনার ফসল। অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা ডেভিড ওয়ার্নারের জন্য শর্ট বলের কৌশল নেয় পাকিস্তান। সেই চেষ্টায় বল করে ওয়ার্নারের ব্যাটে ছক্কাও হজম করেন জামাল। তবে সেই কৌশলই কাজে লেগে যায়। আরেকট শর্ট বলে ক্যাচ তুলে দেন ১৬৪ রান করা ওয়ার্নার।
প্রথম দিনে ১২ ওভারে কোনো মেডেন ছিল না জামালের। ২ উইকেট নিয়েছিলেন ওভারপ্রতি পাঁচের বেশি রান দিয়ে।
দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার নিজের স্কিল দেখান তিনি। রাউন্ড দা উইকেটে করা অসাধারণ এক ডেলিভারিতে বাঁহাতি অ্যালেক্স কেয়ারিকে বোল্ড করে ৯০ রানের জুটি ভাঙেন এই পেসার। পরে মিচেল স্টার্কও জবাব পাননি জামালের আরেকটি দুর্দান্ত ডেলিভারির।
লাঞ্চের পর প্রথম বলেই খুররাম শাহজাদ বোল্ড করে দেন ৯০ রান করা মিচেল মার্শকে। এর পর আবার দৃশ্যপটে জামাল। তার বাড়তি বাউন্সে স্লিপে ধরা পড়েন প্যাট কামিন্স। অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ককে ফিরিয়ে অভিষেকে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন ২৭ বছর বয়সি পেসার। এর পর জশ হেজেলউডকেও আউট করে অস্ট্রেলিয়ান ইনিংস থামিয়ে নিজে ধরেন ষষ্ঠ শিকার।
পাকিস্তানের পেসারদের মধ্যে অভিষেকে সবশেষ ৫ উইকেট নিতে পেরেছিলেন তানভির আহমেদ। ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আবুধাবিতে ১২০ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।