উইকেট নেওয়ার পর আমিরের উদযাপন। ছবি: জিও নিউজ
চলমান পাকিস্তান ক্রিকেট লিগ তথা পিসিএলে করাচি কিংসের হয়ে খেলছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নেওয়া তারকা পেসার মোহাম্মদ আমির। দেশের হয়ে ৬১ ওয়ানডে, ৫০ টি-টোয়েন্টি এবং ৩৬ টেস্টে অংশ নিয়ে ২৫৯ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। অন্যদিকে পেশোয়ার জালমির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় বাবর আজম।
করাচি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে টম কুলারের ৫০ বলে ৯০ এবং অধিনায়ক বাবর আজমের ৪৬ বলের ৬৮ রানে ১৯৯ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে পেশোয়ার জালমি।
টার্গেট তাড়া করতে গিয়ে শোয়েব মালিকের ৩৪ বলে ৫২ এবং অধিনায়ক ইমাদ ওয়াসিমের ৪৭ বলে অপরাজিত ৮০ রানের ব্যাটিং তাণ্ডবে জয়ের দুয়ারে পৌঁছে যায় করাচি কিংস। কিন্তু শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৬ রান। সেটি তাড়া করতে গিয়ে করাচি ১৩ রান করতে সক্ষম হয়। শ্বাসরুদ্ধকর ওই ম্যাচে মাত্র ২ রানে হেরে যায় আমিরের করাচি।
ওই দিন মোহাম্মদ আমিরের করা প্রথম ও ষষ্ঠ ওভারের পঞ্চম বলে বাউন্ডারি হাঁকান পেশোয়ার জালমির অধিনায়ক বাবর আজম। ওভারের শেষ বলে ডিফেন্স করেন বাবর। বলটি হাতে নিয়েই তার দিকে ছুড়ে মারেন করাচি কিংসের তারকা পেসার আমির।
বাবর আজমের দিকে বল ছুড়ে মারার সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর বিভক্ত হয়ে পড়েছেন টুইটার ব্যবহারকারীরা। অনেকেই বলছেন, জাতীয় দলে না ফিরতে পারার আক্ষেপ থেকেই হয়তো এমন আচরণ করছেন আমির।
সেই রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে পাকিস্তানি এ পেসারকে নিয়ে। স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ম্যাচের শুরুতে ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের হাসান নওয়াজ যখন ব্যাট করছিলেন, তখন আমির কট অ্যান্ড বোল্ড করেন।
এর পর পরই সতীর্থরা তার চারপাশে জড়ো হন। এ সময় আমির তার ঠোঁটে আঙুল রাখার অঙ্গভঙ্গি করেন। আক্রমণাত্মক শারীরিক ভাষার কারণে যা অনেকের কাছে অবমাননাকর বলে মনে হয়েছে। টুইটারে আমিরকে নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা।
মজার ব্যাপার হলো— এদিন বাবর আজমের প্রসঙ্গ টেনে নিয়ে আসেন টুইটার ইউজাররা। একজন ভক্ত বলেছেন, অনুগ্রহ থেকে এমন পতন। ভাই ইয়াংস্টার কো আউট কিয়া হ্যায় বাবর কো নি (আপনি বাবর আজমের নয়, একজন কম বয়সী খেলোয়াড়ের উইকেট নিয়েছেন)।
অনেকে এটিও মনে করেন যে, নওয়াজ একজন উদীয়মান খেলোয়াড়, যখন আমির আরও ‘বুড়ো’ খেলোয়াড়।
জিও টিভি জানিয়েছে, একজন ব্যবহারকারী আমিরের মনোভাবের নিন্দা করেছেন এই বলে যে, অন্যান্য ক্রিকেটার একজন পাকা খেলোয়াড়ের উইকেট নেওয়ার পরও এতটা গর্ব করেন বলে মনে হয় না।
অন্য অনেকে বিষয়টির আরও কঠোরভাবে সমালোচনা করেছেন। কেউ কেউ আমিরকে অবসর নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। অন্যরা বলছেন, খেলার প্রতি তার যে শ্রদ্ধার অভাব রয়েছে, সেটিই প্রদর্শন করেছেন তিনি।
তবে আমিরের অনেক ভক্ত তার আচরণকে ডিফেন্ড করার চেষ্টা করেছেন। তারা বলছেন, ফাস্ট বোলারদের আচরণ সাধারণত একটু অ্যাগ্রেসিভ হয়। আমিরের চেয়েও অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ক্রিকেটার রয়েছে।
একজন ব্যবহারকারী বলেন, আমি বুঝতে পারছি না- কেন মানুষ আজ আমিরকে নিয়ে ট্রল করছে? তিনি পারফরম করছেন এবং সেটিই উদযাপন করছেন। শাহিন (শাহিন আফ্রিদি) যখন সরফরাজের প্রতি এমনটা করেছিলেন, তখন মৌসুমি ভক্তরা বলেছিলেন— একজন ফাস্ট বোলার আক্রমণাত্মক ভাব দেখাতে বাধ্য।