
প্রিন্ট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২৬ এএম
দায় কী শুধু সার্চ কমিটির?

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:২৬ এএম
-67e0d0ef2c159.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন
সাত মাস অতিবাহিত হয়েছে। এখনো নতুন কমিটি পায়নি দেশের সব ক্রীড়া ফেডারেশন। ৫২টির মধ্যে মাত্র ২১টিতে নতুন অ্যাডহক কমিটি মিলেছে। রোববার পর্যন্ত বাকিগুলোর কোনো খবর নেই। জানা গেছে, এরই মধ্যে সার্চ কমিটি সব ক্রীড়া ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের কমিটিই মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে প্রকাশ হচ্ছে না। এর মধ্যে সার্চ কমিটিকে কাজ শেষ করতে আর মাত্র এক মাস সময় বেঁধে দিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে চলছে সমালোচনা।
ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায়ের পরবর্তী সময়ে সংস্কারের ঢেউ আছড়ে পড়ে দেশের ক্রীড়াঙ্গনেও। জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশন থেকে শুরু করে জেলা ও বিভাগে কার্যক্রম শুরু করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। প্রথম দফায় ভেঙে দেওয়া হয় দেশের সব জেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটি। পরবর্তী সময়ে দেশের ক্রীড়া ফেডারেশনগুলো সংস্কারের লক্ষ্যে গত বছরের ২৯ আগস্ট ক্রীড়া সংগঠক জোবায়েদুর রহমান রানাকে চেয়ারম্যান করে গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যের সার্চ কমিটি।
বিভিন্ন ফেডারেশনের গঠনতন্ত্র সংস্কার করে ফ্যাসিবাদ সময়ের কর্তাদের পরিবর্তন করে ক্রীড়াঙ্গনকে এগিয়ে নিতে কাজ করে সার্চ কমিটি। দেশের প্রায় সব ক্রীড়া ফেডারেশনের যাবতীয় সংস্কারের মাধ্যমে সার্চ কমিটির করা অ্যাডহক কমিটি গঠনের সুপারিশও মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছে।
জানা গেছে, সার্চ কমিটির সুপারিশকৃত সেই কমিটি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে পড়ে থাকছে মাসের পর মাস। অনেক ক্ষেত্রে সার্চ কমিটির দেওয়া কমিটি অদৃশ্য ইশারায় পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছিল।
গত সাত মাসে মাত্র ২১টি ক্রীড়া ফেডারেশনের নতুন অ্যাডহক কমিটি ঘোষণা করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। গত বছরের ১৪ নভেম্বর প্রথম ধাপের নয়টি ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটি ঘোষণা হয়। এগুলো হলো-হকি, ব্রিজ, অ্যাথলেটিক্স, স্কোয়াশ, টেনিস, কাবাডি, বিলিয়ার্ড ও স্নুকার, বাস্কেটবল এবং দাবা ফেডারেশন।
৭৫ দিন পর ২৮ জানুয়ারি আরও সাতটিতে নতুন কমিটি ঘোষণা করে ক্রীড়া পরিষদ। এগুলো হলো-সাঁতার, টেবিল টেনিস, ভলিবল, কারাতে, ভারোত্তোলন, শরীরগঠন ও ফেন্সিং। তারও ৫০ দিন পর ১৯ মার্চ ঘোষণা করা হয় আরও পাঁচটি (হ্যান্ডবল, সাইক্লিং, কুস্তি, জুডো ও রাগবি) ক্রীড়া ফেডারেশনের নতুন কমিটি।
দেশের অন্যতম সফল ক্রীড়া ফেডারেশন শুটিং। কমনওয়েলথ গেমস থেকে স্বর্ণ ও রুপা জয়ের মতো কৃতিত্ব রয়েছে দেশের শুটারদের। অথচ গত সাত মাস অভিভাবকহীন সেই শুটিং। ফলে সামনে এগিয়ে যাওয়া নিয়েই সংশয়ে পড়েছেন শুটাররা। জানা গেছে, অনেক কমিটির মতো শুটিংয়েও সার্চ কমিটির দেওয়া সুপারিশ বলবৎ থাকছে না। তাদের দেওয়া কমিটি পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, সব ক্রীড়া ফেডারেশনের কমিটি নাকি মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে সার্চ কমিটি। কিন্তু তা প্রকাশ পেতে দেরি হচ্ছে। কেন দেরি হচ্ছে? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সার্চ কমিটির এক সদস্য হতাশা নিয়ে বলেন, ‘দেখুন, আমাদের কী করার আছে। আমরা কমিটি জমা দিয়ে রেখেছি। সেগুলো ঘোষণা না হলে কাজের গতি ধীর হয়ে যাবে স্বাভাবিক। অথচ এটা ছিল সর্বোচ্চ দুই-তিন মাসের কাজ। একটা বিষয়ের গতি থাকতে থাকতেই সেটা শেষ হওয়া উচিত।’
মুখে সংস্কার বলা হলেও এখন পর্যন্ত ক্রীড়াঙ্গনে দৃশ্যমান সংস্কার বলতে শুধু কিছু মুখ বদল হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ‘বঞ্চিত’ অনেককেই ফিরতে দেখা গেছে। আবার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বেশ কিছু সংগঠককে পুনর্বাসনের অভিযোগও রয়েছে। কিছু সাবেক খেলোয়াড়, সংগঠককে সামনে আনা হয়েছে। নতুন এসেছেন অনেকে, বাদ পড়েছেন পুরোনো অনেক মুখ। ফেডারেশনগুলোর জন্য সভাপতি পেতে শুরুর দিকে একটু সমস্যা হলেও সেটা কেটেছে। তাহলে আর বাধা কোথায়? সার্চ কমিটি মনে করছে, সরকার দ্রুত কমিটিগুলো অনুমোদন করলে সংস্কার প্রস্তাবে বেশি সময় লাগে না। কিন্তু ক্রীড়া পরিষদ কমিটি ঘোষণা করতে সময়ক্ষেপণ করায় সমালোচিত হচ্ছে সার্চ কমিটি।