আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সাকিব আল হাসান কেন বেলিংয়ে নিজেকে তেমন ব্যবহার করলেন না, এই প্রশ্নের উত্তর বাংলাদেশ অধিনায়ক দিলেন এককথায়।
তিনি জানালেন, হাতে ৫-৬টা অস্ত্র থাকলে সব একসঙ্গে ব্যবহার করতে নেই। জয় পেয়েই তিনি খুশি। সফরকারীদের বিপক্ষে এই প্রথম টেস্টে মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশ জয় পায় সাত উইকেটে।
প্রশ্ন : যেভাবে চেয়েছিলেন সেভাবে কী দাপট দেখাতে পেরেছেন?
সাকিব : আমি খেলা শুরুর আগে কিছুই চাইনি। অবশ্যই জিততে চেয়েছি। জিততে পেরেছি, এতেই খুশি।
প্রশ্ন : তৃতীয়দিনের পারফরম্যান্সে আয়ারল্যান্ডের কৃতিত্ব, নাকি বাংলাদেশের সামর্থ্যরে ঘাটতি?
সাকিব : আয়ারল্যান্ড খুব ভালো খেলেছে বৃহস্পতিবার।
প্রশ্ন : আপনি এত কম বোলিং করলেন কেন?
সাকিব : সেরকম কোনো ব্যাখ্যা নেই। বোলিং বিশেষ একজনকে করতেই হবে, এমন কোনো কথা নেই। আপনার কাছে ৫-৬টা অস্ত্র থাকলে সব অস্ত্র সবসময় ব্যবহার করার দরকার নেই। আমি ছাড়া কি বাংলাদেশ দলের বোলিং চলে না? আমাদের যথেষ্ট বোলার আছে ২০ উইকেট নেওয়ার মতো, তাদের প্রতি আমার বিশ্বাস আছে। এটা তারা করে দেখিয়েছে। এমন এক উইকেটে খেলা হয়েছে, এমন উইকেটে আমরা বেশি খেলি না। প্রথম তিনদিন খুব ভালো ব্যাটিং উইকেট ছিল। মিরপুরে টানা তিনদিন উইকেট এত ব্যাটিংবান্ধব থাকে না।
প্রশ্ন : ৫-৬ এর জন্য বোলার খেলানোর কী পরিকল্পনা ছিল?
সাকিব : ২০ উইকেট নিতে হলে বোলিং অপশন বেশি লাগে এটার বিকল্প নেই। রক্ষণাÍক মানসিকতা থাকলে, ড্র করার চিন্তা থাকলে কম বোলিং অপশন নিয়ে খেলতে হবে। আর জিততে চাইলে, ৫-৬ জন বোলার লাগবে। বড় দলগুলো এই অবস্থায় আছে। ভারত, ইংল্যান্ড ৫-৬ জন বোলার আর ছয় ব্যাটার নিয়ে খেলে।
মিরাজ এমন ব্যাটার যে সাতে ব্যাট করতে পারে। তাহলে বোলিং অপশন বেড়ে যাচ্ছে। এটা দলের জন্য ভালো। সবাই বিশ্রাম পাবে, চাপ পড়বে না কারও ওপর। এখন তাইজুল অনেক বোলিং করছে। ভালো করছে। অপশন বাড়ানোর সুযোগ হচ্ছে।
প্রশ্ন : আয়ারল্যান্ডের বোলিং কী খারাপ?
সাকিব : হয়তো বেশিরভাগ ম্যাচেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করব আমরা। সবসময় হয়তো হবে না। কন্ডিশন, প্রতিপক্ষের ওপর সবকিছু নির্ভর করে। ধীরে ধীরে হয়তো পজিটিভ খেলার চেষ্টা করব।
প্রশ্ন : বাংলাদেশের পারফরম্যান্স?
সাকিব : আমি আগেই বলেছিলাম ২০২৩ সাল আমাদের খুব ভালো যাবে। এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপ আছে। পরের ছয় মাস যেন ভালো খেলতে পারি। প্রথম চার মাস ভালো খেলেছি। চেষ্টা থাকবে এটা ধরে রাখার। বেশিরভাগ ওয়ানডে খেলব, এই ফরম্যাটে আমরা অনেক ভালো।
প্রশ্ন : আইপিএলে খেলতে না পারায় মন খারাপ?
সাকিব : না। ভালো সুযোগ ছিল। বিশ্বকাপ ভারতে খেলতে পারলে ভালো হতো।
প্রশ্ন : বাংলাদেশের ক্রিকেটে উন্নতি কেমন হচ্ছে?
সাকিব : মানসিক উন্নতিই সবচেয়ে বড় উন্নতি। বিশ্বকাপে শেষ ম্যাচের সময় আলোচনা করেছি, হয়তো নিজেদের ছোট দল মনে করতাম। কিন্তু আমরা আসলে ছোট দল ছিলাম না। এই বিশ্বাস নিয়ে খেললে হয়তো সেমিফাইনালে যেতাম। হয়তো ওই জায়গাতেই ঘাটতি ছিল। এরপর ভেবেছি মানসিকতায় পরিবর্তন আনব। বিশেষ করে টি ২০ দলের সবাইকে দেখবেন মানসিক পরিবর্তন হয়েছে সবার।
প্রশ্ন : এই মুশফিককে কেমন দেখছেন?
সাকিব : মুশফিকের সঙ্গে খেলছি ২০০৩ থেকে। অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে একসঙ্গেই আছি। তখনও যেমন দেখেছি এখনও তেমনই। মাঝখানে অফ ফর্ম তো হয়ই। আপনার পরিবারের সবার সঙ্গে আপনার সবসময় সুসম্পর্ক থাকে না। আবার সবসময় খারাপ সম্পর্কও থাকে না। অভিজ্ঞতা থাকলে আপনি জানেন কীভাবে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নতুন খেলোয়াড়ের জন্য এটা কঠিন।