ইয়ারফোনে গান শুনতে শুনতে শরীরচর্চা-হাঁটাহাঁটি, কতটা স্বাস্থ্যসম্মত?
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১১ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
সকালবেলা হাঁটতে বেরিয়ে অনেকেই আছেন যারা কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে রাখেন। গান বা পডকাস্ট শুনতে শুনতে হাঁটাহাঁটি করতে পছন্দ করেন। এই অভ্যাস কি ভাল?
হালকা মিউজ়িক চালিয়ে হাঁটার পরামর্শ দেন অনেকেই। এতে হাঁটার ক্লান্তি কমে বলেই দাবি করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, হাঁটার সময়ে কানে একটানা উচ্চৈস্বরে কোনো শব্দ শোনাই উচিত নয়। খোলামেলা জায়গায় হাঁটলে, মন পুরোপুরি প্রকৃতি ও চারপাশের পরিবেশের দিকে দিতে হবে। তা হলেই যেমন মনোযোগ, একাগ্রতা বাড়বে, তেমনই হাঁটার ফলও পুরোদস্তুর পাওয়া যাবে।
ভারতের খ্যাতনামা মুম্বাইয়ের পিডি হিন্দুজা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শরীরের জন্য সবচেয়ে ভাল ‘সাইলেন্ট ওয়াকিং’।
ড. শিনা সুদ মনে করেন, মনিং ওয়ার্কে বেরিয়ে অথবা বিকেল-সন্ধ্যার সময়ে হাঁটতে বেরিয়ে অনেকেই কানে হেডফোন বা ইয়ারফোন গুঁজে রাখেন। সেখানে উচ্চস্বরে গান চলে। অথবা ফোনে কথা বলতে বলতেও হাঁটেন অনেকে। এই অভ্যাস শরীরের জন্য ভাল নয়। ৯০ ডেসিবেলের উপর শব্দ শুনলে শোনার ক্ষমতা কমে যেতে পারে। মিনিট ১৫ ইয়ারফোন ব্যবহার করলেই তার বড়সড় প্রভাব পড়বে মস্তিষ্কে।
তিনি বলছেন, ইয়ারফোন ব্যবহারের সময় এক ধরনের তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ সৃষ্টি হয়, যার ফলে তা বেশিক্ষণ মাথায় গেলে মাথা যন্ত্রণা, মাথা ঘোরা, বমি ভাব দেখা দিতে পারে। ইয়ারফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার মাইগ্রেনের সমস্যাও বাড়াতে পারে। অন্তঃকর্ণের মাধ্যমে দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রিত হয়। দীর্ঘক্ষণ সশব্দে ইয়ারফোন ব্যবহার করলে এই অংশের ক্ষতি হতে পারে। তখন সবসময়ে মাথা ঘুরতে থাকবে। হাঁটার সুফল আর পাওয়া যাবে না।
চিকিৎসকের পরামর্শ ১৫ থেকে ২০ মিনিটও যদি হাঁটেন, ওই সময়টুকুতে ফোন থেকে দূরে থাকুন। যতটা সম্ভব কথা না বলারই চেষ্টা করতে হবে। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন…
১) মনঃসংযোগ বাড়ে। চিন্তাভাবনা অনেক উন্নত হয়। মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের পরামর্শ, যত বেশি প্রকৃতির মাঝে থাকবেন ও প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখবেন, শব্দ শুনবেন, ততই মানসিক চাপ, উদ্বেগ কমবে। একটানা উচ্চস্বরে গান শোনার বদলে বৃষ্টির শব্দ, পাখির ডাক, গাছপালার শব্দ শুনলে মানসিক ক্লান্তি কেটে যাবে।
২) মোবাইলের দুনিয়া কেড়ে নিচ্ছে মুখোমুখি আলাপ, আড্ডার অবসর। সতর্ক না হলেই কিন্তু বিপদ! শরীর ও মনের চাই ‘ডিজিটাল ডিটক্স’। রোজের ব্যস্ততায় বিদ্যুতিন এই ডিভাইসগুলো থেকে দূরে থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু যে সময়টুকু হাঁটছেন, সেই সময়টাতে সমস্ত রকম বৈদ্যুতিন যন্ত্র থেকে দূরে থাকলেই ‘ডিজিটাল ডিটক্স’ হবে, যা অনেক মানসিক ব্যাধি থেকেও মুক্তি দেবে।
৩) দুশ্চিন্তা, নেতিবাচক চিন্তাভাবনা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। অফিসের হোক বা সাংসারিক জীবনের কাজের চাপ, চিন্তাভাবনা থেকে যে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়, তার থেকেও রেহাই পাওয়া যাবে।
৪) মনের চাপ কমলেই ভাললাগার অনুভূতি হবে। অনিদ্রা জনিত সমস্যা, অবসাদ থেকেও রেহাই পাওয়া যাবে।