
প্রিন্ট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১৭ এএম

মোখতারুল ইসলাম মিলন
প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আরও পড়ুন
বিশ্বের সবচেয়ে বৃহত্তম ফুল র্যাফ্লেশিয়া। এর আকার, আকৃতি কিংবা জীবনধারার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। পৃথিবীর বিস্ময়কর উদ্ভিদগুলোর মধ্যে র্যাফ্লেশিয়া অন্যতম। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গহিন অরণ্যে এ ফুল দেখতে পাওয়া যায়। এটি পচা মাংসের গন্ধের জন্য কুখ্যাত। র্যাফ্লেশিয়া পরজীবী উদ্ভিদ হিসাবেও পরিচিত।
১৮১৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে র্যাফ্লেশিয়া প্রথম আবিষ্কৃত হয়। ব্রিটিশ অভিযাত্রী স্যার স্ট্যামফোর্ড র্যাফলস ও প্রকৃতিবিদ ড. জোসেফ আর্নল্ড প্রথম বিশদভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। তাদের নামে (Rafflesia arnoldii) নামকরণ করা হয়। র্যাফ্লেশিয়া প্রধানত ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনের ঘনবর্ষাবনে দেখা যায়। এটি Tetrastigma নামক লতাগাছে পরজীবী হিসাবে বেঁচে থাকে। কারণ এর নিজস্ব শেকড়, কাণ্ড বা পাতার অস্তিত্ব নেই।
র্যাফ্লেশিয়ার আকৃতি ও বৈশিষ্ট্য
এই ফুল বিশাল আকৃতির। র্যাফ্লেশিয়া ফুলের ব্যাস ৯১-১০০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। ওজন প্রায় ১০ কেজি। এ ফুলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য পচা মাংসের মতো গন্ধ। এ গন্ধ মাছি ও পতঙ্গ আকৃষ্ট করে, যারা পরাগায়নে সাহায্য করে। এর নিজস্ব ফটোসিন্থেসিস করার ক্ষমতা নেই। এটি লতাগাছের রস শোষণ করে বেঁচে থাকে। এ ফুল ফুটতে ৬-৯ মাস সময় নেয়। কিন্তু এটি মাত্র ৫-৭ দিন স্থায়ী হয়। এরপর এটি দ্রুত পচে যায়।
বর্তমানে Rafflesia প্রায় ২৮টি প্রজাতি বিদ্যমান। এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলো : Rafflesia arnoldii (সবচেয়ে বড়), Rafflesia keithii (মালয়েশিয়ায় পাওয়া যায়), Rafflesia manillana (সবচেয়ে ছোট প্রজাতি)।
র্যাফ্লেশিয়া প্রকৃতির এক অপূর্ব বিস্ময়। এটি শুধু বিশ্বের বৃহত্তম ফুলই নয়, বরং এর জীবনধারা ও গন্ধ একে আরও রহস্যময় করে তুলেছে। তবে বনাঞ্চল ধ্বংস ও অন্যান্য পরিবেশগত সমস্যার কারণে এ বিরল ফুলটি বিলুপ্তির হুমকিতে রয়েছে। সুতরাং এ ফুল সংরক্ষণে সবাইকে সচেতন হতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে মানুষ এ অদ্ভুত ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।