Logo
Logo
×

অর্থনীতি

বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াতের পদত্যাগ

Icon

মনির হোসেন

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৪, ১০:০৫ পিএম

বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াতের পদত্যাগ

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম/ফাইল ছবি

এবার পদত্যাগ করলেন শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রকসংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব বরাবর শনিবার তিনি ইমেইলে পদত্যাগপত্র পাঠান। শিবলী রুবাইয়াত যুগান্তরকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

তবে পদত্যাগ না করলে তাকে অপসারণের বিষয়টি যুগান্তরকে আগেই সরকারের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে অন্যান্য কমিশনারদের ব্যাপারেও। ইতোমধ্যে প্রাথমিক বার্তা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ বিএসইসিকে পুরোপুরি ঢেলে সাজানো হচ্ছে। এর ফলে দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ পাওয়ার আড়াই মাসের মধ্যে ভেঙে যাচ্ছে কমিশন। এর আগে শুক্রবার রাতে পদত্যাগ করেন বাংলাদেশ গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার।   

গত ২৮ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর বিরোধীতা সত্যেও চলতি বছরের ২৮ মে তাকে ৪ বছরের জন্য পুনঃনিয়োগ দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ২০২০ সালের ১৭ মে তাকে প্রথমবার বিএসইসির চেয়ারম্যান করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের পদত্যাগ

প্রথম মেয়াদের নিয়োগে নানাভাবে বির্তকিত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের এই অধ্যাপক। আলোচ্য সময়ে বিভিন্ন অপরাধ করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত বেপরোয়া ছিলেন তিনি। শেয়ারবাজারে কারসাজিসহ থেকে বিভিন্ন ধরণের সুবিধা নিয়ে দেশে ও দেশের বাইরে গড়েন সম্পদের পাহাড়। অপরাধের জন্য কারসাজির চক্রকে সঙ্গে নিয়ে বিশাল অসাধু সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। এই সিন্ডিকেটে কমিশনের ভেতরের কর্মকর্তা, স্টক এক্সচেঞ্জের পর্ষদের সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গ্যাম্বলার, ব্যবসায়ী, প্রভাবশালী আমলা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থমন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমের লোকজনও রয়েছেন। 

যুগান্তরের অনুসন্ধানে জানা গেছে- খেলাপি ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ২০২০ সালে বিএসইসিতে যোগদান করেন শিবলী রুবাইয়াত। এখানে আসার পর তার বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ ছিল অভিনব পদ্ধতিতে দুর্বল কোম্পানির পর্ষদ ভেঙ্গে কোম্পানি দখল। তার সময়ে তিন বছরে এভাবে ২৬টি কোম্পানির মালিকানা বদল হয়েছে। অপরাধীদের আশ্রয় স্থল হয়ে উঠেন তিনি। 

বিএসইসির জনবল নিয়োগ পদোন্নতিতে জালিয়াতি, দুর্নীতিগ্রস্ত কোম্পানির আগের মামলা বাতিল করে দিয়ে তাদেরকে অব্যাহতি এবং দুর্নীতিগ্রস্ত কোম্পানির আগের মামলা বাতিল করে দিয়ে তাদেরকে দায়মুক্তি দিয়েছেন তিনি। বিশাল সংখ্যক জনবল নিয়োগে জালিয়াতি ও আইনলংঘন করে পদোন্নতির ঘটনায় তাকে সহায়তা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বর্তমানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এবং বাংলাদেশ ইন্সষ্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেটের নির্বাহী চেয়ারম্যান মোহাম্মদ তারেক। আর জনবল নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে মৌখিক পরীক্ষা নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের সদস্য ড. মাহমুদ ওসমান ইমাম। এসব বিষয় নিয়ে যুগান্তরসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এর উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সংস্থা সরকারের কাছে রিপোর্ট পাঠালেও ওই সময়ে রহস্যজনক কারণে তা আমলে নেয়নি অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগসহ সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।

পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: অর্থ উপদেষ্টা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের ভুয়া ভর্তি, ব্যাপক সমালোচিত পুলিশের সাবেক আইজি বেনজির আহমেদকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভুয়া পিএইচডি ডিগ্রি দিয়ে সমালোচিত হন তিনি। এছাড়াও ছাগলকান্ডে চাকরি হারানো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মতিউর রহমানকে শেয়ারবাজারে সব ধরণের সহায়তা করেন শিবলী রুবাইয়াত।

বিএসইসির আগে তিনি সাধারণ বীমা করপোরেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একাধিকবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সিনেট সদস্য এবং কোষাধ্যাক্ষ হয়েছেন। পাশাপাশি বাণিজ্য অনুষদের ডিন হিসেবে চারবার দায়িত্ব পালন করেছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম