বিএটি’র ভ্যাট ফাঁকি, ২০৫৪ কোটি টাকা পরিশোধে চিঠি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৪৮ পিএম
আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ফাঁকি দেওয়া ২ হাজার ৫৪ কোটি টাকা ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা দিতে ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকোকে (বিএটি) চিঠি দিয়েছে বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ-ভ্যাট)। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এ চিঠি দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, ২০১৬ সালের বিএটির অডিট রিপোর্ট যাচাই করে ২০০ কোটি টাকার বেশি তামাক পাতা ব্যবহারের তথ্য জানতে পারে এলটিইউ-ভ্যাট। অতিরিক্ত এ তামাক পাতা দিয়ে সিগারেট বানিয়ে বাজারে বিক্রি করা হয়েছে কি না, তা যাচাই করতে ২০১৮ সালের ২৯ মার্চ ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি ১৯১ কোটি টাকার অতিরিক্ত তামাক পাতা ব্যবহারের মাধ্যমে অতিরিক্ত ১ হাজার ৮১১ কোটি শলাকা সিগারেট বেশি উৎপাদন ও সরবরাহ করার অভিযোগ আনে। এতে সরকার ২ হাজার ৫৪ কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উলেখ করা হয়। এরপর চূড়ান্ত দাবিনামা জারি করতে ৭ সদস্যের আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তী সময়ে ২০২১ সালে ২ হাজার ৫৪ টাকা মওকুফ করে দিয়ে দাবিনামা জারি করে এলটিইউ-ভ্যাট।
এ বিশাল অঙ্কের ভ্যাট মওকুফ আইন অনুযায়ী করা হয়েছে কি না, তা পর্যালোচনা করতে ১৪ আগস্ট এনবিআরের সদস্য (মূসক নিরীক্ষা) ড. শহিদুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. আব্দুর রউফ, ঢাকা (উত্তর) ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান, ঢাকা (দক্ষিণ) ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার শওকত আলী সাদী, ঢাকা (পশ্চিম) ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার কাজী মুহম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং ঢাকা (পূর্ব) ভ্যাট কমিশনারেটের উপকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান। এই কমিটি দাবিনামা পর্যালোচনা করে দেখতে পায়, এলটিইউ গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি দ্বিধাবিভক্ত মতামত দিলেও একতরফাভাবে তৎকালীন কমিশনার বিএটির ভ্যাট মওকুফের আদেশ দিয়ে দাবিনামা জারি করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর গঠিত কমিটি ২ হাজার ৫৪ কোটি টাকা আদায় করতে আইনি কার্যক্রম গ্রহণ করতে এলটিইউ-ভ্যাটকে নির্দেশ দেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলটিইউ-ভ্যাটের এক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, এনবিআর-এর নির্দেশনা মোতাবেক পরিহার করা ভ্যাট পরিশোধ করতে ইতোমধ্যে ১৫ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে বিএটিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিএটির পক্ষ থেকে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে মতামত জানতে বিএটির বিজনেস কমিউনিকেশন ম্যানেজার ফুয়াদ বিন সাজ্জাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, এ বিষয়ে তাদের মনোনীত জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রতিবেদকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্ন ই-মেইল করা হলে তারা জবাব দেবেন। এরপর জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে লিখিত প্রশ্ন করা হলে বিএটির মুখপাত্রের বরাত দিয়ে জানানো হয়, বর্তমানে বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।