এইচএসসিতে পুরান ঢাকার কলেজগুলোর ঈর্ষণীয় ফলাফল
জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩১ পিএম
উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) এইচএসসি) পরীক্ষা-২০২৪ এর ফলাফল প্রকাশ হয়েছে মঙ্গলবার। সব বোর্ডের ফলাফল একসঙ্গে প্রকাশ করা হয়েছে। নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অনলাইনে একযোগে এই ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবারের মত এবারও ঈর্ষণীয় ফলাফল করেছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহ। ফল প্রকাশের পর আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠেন রাজধানীর পুরান ঢাকার কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা।
পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সেন্ট গ্রেগরি কলেজ, সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ ও কে. এল জুবিলি কলেজসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা যায়, ফলাফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছ্বাস যেন রূপ নেয় বাঁধভাঙা জোয়ারে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবক ও শিক্ষকরাও শরিক হন সে আনন্দে।
খ্রিষ্টান ধর্মগুরুদের দ্বারা পরিচালিত পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের সেন্ট গ্রেগরি স্কুল এন্ড কলেজে মোট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে ৩৭৮ জন। পাস করেছেন ৩৭৭ জন। যা মোট পরীক্ষার্থীর ৯৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০১ জন।
লক্ষ্মীবাজারের অপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স গার্ল স্কুল এন্ড কলেজে মোট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে ১৮৪ জন। পাস করেছেন ১৮২ জন। যা মোট পরীক্ষার্থীর ৯৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৮ জন।
কবি নজরুল সরকারি কলেজে মোট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে ১ হাজার ৬০৩ জন। পাস করেছেন ১ হাজার ৪৯৫ জন। যা মোট পরীক্ষার্থীর ৯৩ দশমিক ২৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২২৩ জন।
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে মোট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে ২ হাজার ১২৫ জন। পাস করেছেন ১ হাজার ৭০২ জন। যা মোট পরীক্ষার্থীর ৮০ দশমিক ০৯ শতাংশ। এছাড়া জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪২ জন।
পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজে মোট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে ৭৫ জন। পাস করেছে ৪৯ জন। যা মোট পরীক্ষার্থীর ৬৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। কিশোরীলাল জুবিলী স্কুল এন্ড কলেজ
মোট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে ১৯২ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৫২ জন, যা মোট পরীক্ষার্থীর ৭৯ দশমিক ১৭ শতাংশ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজে মোট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে ৮৫৬ জন। পাস করেছেন ৫৯৫ জন। যা মোট পরীক্ষার্থীর ৬৯ দশমিক ৫১ শতাংশ।
সেন্ট গ্রেগরি স্কুল এন্ড কলেজ থেকে জিপিএ-৫ সহ বিজ্ঞান বিভাগে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী আদিত্য কুমার বলেন, ফলাফলে আমি সন্তুষ্ট। দীর্ঘ পরিশ্রমের ফলে আজকের এই সফলতা। আমার মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা আছে। মেডিকেলে চান্স না হলে ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে চেষ্টা করবো।
এই বছর এইচএসসির অবশিষ্ট সাবজেক্টের পরীক্ষা না নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হয়।
এর আগে জেএসসি ও এসএসসির বিষয়ভিত্তিক ফলাফলের গড় করে বিগত সময়ে সাবজেক্ট ম্যাপিং পদ্ধতিতে ফল প্রকাশ করা হয়েছে। কোভিডের সময় এভাবে ফল ঘোষণা করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুন থেকে সারা দেশে একযোগে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। এবার সারা দেশে পরীক্ষার্থী ছিল ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার কারণে গত ১৮, ২১, ২৩ ও ২৫, ২৮ জুলাই এবং ১ ও ৪ আগস্টের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। সবশেষে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন সময়সূচি প্রকাশ করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। এরপর অবশিষ্ট পরীক্ষা না নেওয়ার দাবি করে পরীক্ষার্থীরা। আর অটো পাস ঘোষণা না দিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফলাফল ঘোষণার দাবি জানায় পরীক্ষার্থীরা। পরে অবশিষ্ট পরীক্ষাগুলো আর না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যেসব বিষয়ে পরীক্ষা হয়নি সেগুলোর ক্ষেত্রে সাবজেক্ট ম্যাপিং করা হয়।