যমুনা ফ্রিজ কুলিং পারফরম্যান্সে সেরা: মনিকা নাজনীন ইসলাম
গ্রুপ পরিচালক, যমুনা গ্রুপ
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মনিকা নাজনীন ইসলাম।
প্রশ্ন: ঈদ উপলক্ষ্যে আপনাদের প্রস্তুতি কেমন?
মনিকা নাজনীন ইসলাম : রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। একটা ভালোমানের রেফ্রিজারেটর শুধু খাবারের পচনই রোধ করে না, বরং খাবারের পুষ্টিমান ও সতেজতা রক্ষা করে জীবনযাপনেও অনেক স্বাচ্ছন্দ্য আনে।
ঈদ এলে রেফ্রিজারেটরের চাহিদা বেড়ে যাওয়া অনেকটা রীতিতে পরিণত হয়েছে। দৈনন্দিন প্রয়োজনের পাশাপাশি কুরবানির মাংস সংরক্ষণের জন্য অনেকে এ সময় রেফ্রিজারেটর বা ডিপ ফ্রিজ কিনে থাকেন। তাই সারা দেশে ফ্রিজের বাজার চাঙা থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে দেশের নাম্বার ওয়ান কোয়ালিটি রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ড ‘যমুনা’ তার সব শ্রেণি ও পেশার ক্রেতাদের আয় ও সামর্থ্য বিবেচনায় ৩০০টিরও অধিক ডিজাইন ও মডেলের রেফ্রিজারেটর বাজারে নিয়ে এসেছে।
ক্রেতারা যাতে অতি সহজে যুক্তিসঙ্গত মূল্যে টেকসই ও সর্বোচ্চ গুণগতমানের এবং ডিজাইনের রেফ্রিজারেটর কিনতে পারেন, সেজন্য সারা দেশে বিস্তৃত যমুনা প্লাজা ও ডিলারশপে আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে।
প্রশ্ন : আপনাদের কোন মডেলের ফ্রিজ বাজারে বেশি জনপ্রিয়?
মনিকা নাজনীন ইসলাম : যমুনার রেগুলার রেফ্রিজারেটর ছাড়াও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ইনভার্টার টেকনোলজির স্মার্ট ডাবলডোর, টি ডোর ও ক্রস ডোর রেফ্রিজারেটর এবং ডিপ ফ্রিজ ইতোমধ্যেই বাজারে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
অতি সম্প্রতি বাজারে এসেছে ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার টেকনোলজি সমৃদ্ধ দেশের প্রথম বিল্ড-ইন ব্লুটুথ মিউজিক সিস্টেম, স্মার্ট ওয়াইফাই কন্ট্রোল, ডিজিটাল টাচ ডিসপ্লে, মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে টেম্পারেচার কন্ট্রোলসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির স্মার্ট ফ্রিজ। সব মডেলের ফ্রিজে ক্রেতাদের ভালো সাড়া পাওয়া গেছে।
প্রশ্ন : বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশীয় ফ্রিজের বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাই?
মনিকা নাজনীন ইসলাম : গত এক দশকে ইলেকট্রনিক্স হোম অ্যাপ্লায়েন্স শিল্প খাতে দেশে বিপুল অগ্রগতি হয়েছে। একসময় পুরোপুরি আমদানিনির্ভর এ শিল্প বর্তমানে বেশিরভাগ ক্যাটাগরিতে লোকাল কোম্পানিগুলো আধিপত্য বিস্তার করে আছে। দেশব্যাপী বিস্তৃত বিদ্যুৎ সংযোগ, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি ও জীবনযাপনে পরিবর্তনের ফলে শহর কিংবা গ্রাম সর্বত্র রেফ্রিজারেটরের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। তাছাড়া দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ফ্রিজ উৎপাদন শুরু করায় পণ্যটির আকাশচুম্বী দামও কমেছে, ফলে এটি এখন আর নিতান্তই শখের জিনিস নয় বরং এটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে পরিণত হয়েছে। মার্কেট সংশ্লিষ্টদের মতে গত বছর প্রায় ৩০ থেকে ৩২ লাখ ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানির আধিপত্য ছিল প্রায় ৮০ শতাংশের কাছাকাছি।
প্রশ্ন : এ শিল্পের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো কী?
মনিকা নাজনীন ইসলাম : বৈশ্বিক করোনার করাল থাবা আর ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের দামামা গোটা পৃথিবীর অর্থনৈতিক বুনিয়াদ এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। তথাপি সরকারের দেওয়া শিল্পবান্ধব নীতি ও কর সহায়তার জন্য দেশের রেফ্রিজারেটর শিল্প ইতোমধ্যেই স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। দেশীয় শিল্পোদ্যোক্তারা বিপুল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করে তাদের নিজস্ব কারখানায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আর মেশিনারিজ স্থাপনের মাধ্যমে দেশেই তৈরি করছে আন্তর্জাতিক মানের রেফ্রিজারেটরসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্য। কিন্তু সরকারি আমদানি নীতির কারণে অবাধে বিদেশি পণ্য আমদানির ফলে দেশীয় শিল্প বিকাশে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাছাড়া কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে উচ্চমূল্যে এসব পণ্য আমদানি করা দেশের অর্থনৈতিক অপচয় মাত্র। অনেক সময় আমরা দেখতে পাই সরকারি অভ্যন্তরীণ কেনাকাটায় দেশীয় উৎপাদকদের তৈরি পণ্য উপেক্ষিত হয়, যা দেশীয় কোম্পানিগুলোকে পণ্য উৎপাদনে নিরুৎসাহিত করে।
প্রশ্ন : ভালোমানের ফ্রিজ বাছাইয়ে গ্রাহকদের আপনার কী পরামর্শ?
মনিকা নাজনীন ইসলাম : কুরবানির ঈদ সামনে রেখে অনেকেই রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ কিনে থাকেন। তাই ক্রেতার সাধ্যের মধ্যে ভালোমানের ফ্রিজ কেনার জন্য কিছু বিষয় জানা দরকার। তা না হলে হয়তো বেশি দাম দিয়েও ঠকতে পারেন।
গ্রাহক যে ফ্রিজটি কিনছেন সেটি সত্যিকার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী কিনা, কপার কন্ডেন্সারযুক্ত কিনা, উন্নতমানের কম্প্রেসারযুক্ত, ফুড গ্রেডেড মেটারিয়েলস, পরিবেশবান্ধব আর৬০০এ গ্যাস ব্যবহার করেছে কিনা, ফ্রিজের ক্যাপাসিটি ইত্যাদি বিষয় যাচাই-বাছাই করে গ্রাহক অবশ্যই তার পণ্যটি ক্রয় করবেন।
যমুনা ফ্রিজ দেশের ১ নম্বর কুলিং পারফরম্যান্স রেফ্রিজারেটর, যা ইতোমধ্যেই বুয়েট কর্তৃক পরীক্ষিত। যমুনা ফ্রিজের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে, যেখানে দেশের অন্যান্য ফ্রিজের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে সর্বোচ্চ ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যমুনা ফ্রিজে রয়েছে ৫ ওয়ে এয়ার ফ্লো ও ইভাপোরেট কুলিং সিস্টেম, উচ্চ ঘনত্ব সম্পন্ন ৮৫ এমএম ইউনিফর্ম ফোমিং ব্যবহার করা হয়। ফলে যমুনা ফ্রিজ লোডশেডিংয়ে টানা ৭২ ঘণ্টা এবং যমুনা ডিপ ফ্রিজে টানা ১২০ ঘণ্টা পর্যন্ত খাবারকে রাখবে সতেজ ও টাটকা। যমুনা ফ্রিজ তার উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সব স্তরে সর্বোচ্চ মানের কাঁচামাল ও স্টেট অব আর্ট টেকনোলজি ব্যবহার করে।
প্রশ্ন: এ শিল্পকে সুরক্ষা দিতে আর কী কী পদেক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে?
মনিকা নাজনীন ইসলাম : দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষা ও বিকাশ ত্বরান্বিত করার স্বার্থে সরকারে নীতি সহায়তা বাড়াতে হবে। সরকারি, আধা সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটায় দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার প্রদান করা উচিত। মুদ্রাস্ফীতি এবং ডলার সংকটের কারণে ফ্রিজ শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশ আমদানি করতে এলসি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
চলমান বৈশ্বিক অর্থনীতির এ সংকটকালীন সরকারি নীতিনির্ধারক পর্যায়ে দেশে তৈরি পণ্য উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে। ফ্রিজ উৎপাদনে আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ ও কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কহার হ্রাসসহ দেশীয় শিল্প বিকাশে সহায়তা করা প্রয়োজন।