Logo
Logo
×

রাজনীতি

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাই সবচেয়ে বড় সংস্কার: আবু হানিফ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১২ পিএম

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাই সবচেয়ে বড় সংস্কার: আবু হানিফ

জুলাই মঞ্চের শহিদি মার্চে সংহতি জানিয়ে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এ যাত্রাবাড়ী এলাকার মানুষের যে ভূমিকা ছিল তা অনস্বীকার্য। এ এলাকার মানুষ বুলেটের সামনে জীবনের মায়া ত্যাগ করে তারা হাসিনার পতন নিশ্চিত করেছে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলেও যাত্রাবাড়ী এলাকা নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে নাই। এই এলাকায় আওয়ামী প্রশাসন সবচেয়ে বেশি হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। এ হত্যা জড়িতরা অনেকে আটক হয়নি।

শনিবার জুলাই মঞ্চের ৫ম ও শেষ শহিদি মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। যাত্রাবাড়ী থানার সামনে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে এই শহিদি মার্চে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকারের নমনীয়তা এবং সরকারের ভেতর থেকে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে কেননা এই সরকার যাদের জীবনের বিনিময়ে ক্ষমতায় বসেছে তারা সেই শহিদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানী করছে, গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করে। গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যায় জড়িতরা রাস্তায় নামছে। প্রশাসনে থাকা আওয়ামী দুর্বৃত্তরা আওয়ামী লীগকে রাস্তায় নামার সুযোগ করে দিচ্ছে।

আবু হানিফ বলেন, এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বার বার সংস্কারের কথা বলছে। তারা গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করে কিসের সংস্কার করছে এটা জনগণের প্রশ্ন। এ সরকারের প্রথম এবং প্রধান কাজ হলো গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা, আর এটাই হবে বড় সংস্কার। সংস্কারের নামে তালবাহানা না করে দ্রুত সময়ের ভেতরে গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে। জুলাই মঞ্চ গত দুই মাস ধরে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে গণহত্যার বিচারের দাবিতে। সবার প্রতি আহ্বান আপনারা গণহত্যার বিচারের দাবিতে সোচ্চার হোন।

জুলাই মঞ্চের প্রতিনিধি সাকিব হোসেন বলেন, বর্তমান প্রশাসনে গণহত্যায় জড়িত বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের চাকরি এখনো বহাল রয়েছে, অধিকাংশকেই এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। গণহত্যার মামলাগুলোর কার্যক্রম এগোচ্ছে না। গণহত্যার শিকার শহিদ পরিবাররা বিচার নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন অবস্থায় রয়েছে। তারা মনে করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চলে গেলে তারা আর বিচার পাবে না। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম এখনো আশাব্যঞ্জক অবস্থায় পৌছায়নি।

সাকিব আরও বলেন, জুলাই মঞ্চের ৫ম ও সর্বশেষ শহিদি মার্চ শেষে উপস্থিত জনতা ও মঞ্চের প্রতিনিধিরা যাত্রাবাড়ী থানায় দায়িত্বরতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি এবং যাত্রাবাড়ী থানার ওসি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মাধ্যমে আইজিপির কাছে একটি বার্তা প্রেরণ করেন। বাংলাদেশে গণহত্যার শিকার প্রত্যেকটি পরিবার কাছে পুলিশের একটি প্রতিনিধি দল সশরীরে গিয়ে সেই পরিবারের কাছে ক্ষমা চাইবে এবং শহিদের কবর জিয়ারত করবে।

জুলাই মঞ্চের অন্যতম প্রতনিধি আরিফুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ৫৩ বছর ধরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যে দুর্বৃত্তায়ন গড়ে উঠেছে ২৪ এর বিপ্লব তারও বিরুদ্ধে বড় একটা বার্তা।  অথচ রাষ্ট্রে সে সকল সমস্যা রেখে এখন কেবল অতীতের মতই একটা নির্বাচনের জন্য সকলে উঠে পড়ে লেগেছে। আমরা স্পষ্ট বলতে চাই গণহত্যার বিচার, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল এবং প্রশাসনের হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় এনে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করার পূর্বে কোনো নির্বাচন দেওয়া হলে তা হবে ২৪ এর শহিদদের প্রতি অবিচার। যদি এই ইনটারিম সরকার নিজেদের উক্ত কাজগুলোর জন্য অযোগ্য মনে করে তাহলে অবিলম্বে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় সরকার গঠন করে উক্ত কাজগুলো করেই তবে নির্বাচন দিতে হবে।

আরেক প্রতিনিধি অর্নব হোসাইন বলেন, আমরা দেখতে পেয়েছি ডিএমপি কমিশনার অফিস থেকে গত ৯ এপ্রিল একটা প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে সব থানায়। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানের হত্যা মামলার আসামিদের ধরার আগে কমিশনার অফিসে অবহিত করতে। আমরা ডিএমপি কমিশনার অফিস থেকে আসা এই ধরনের কাজকে ফ্যাসিবাদের পাহারাদার হিসেবে দেখছি। এই প্রজ্ঞাপনের পরে ১৭ এপ্রিল আওয়ামী লীগ যাত্রাবাড়ী এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেছে। এর থেকে প্রমাণিত হয় আওয়ামী লীগ এখনো তাদের কিলিং মিশন আবারও বাস্তবায়ন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

যাত্রাবাড়ী এলাকায় নিহত ও আহতদের স্বজনরা সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। এসময় তারা শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবি করেন।

গণহত্যা বিচার আওয়ামী লীগ

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম