Logo
Logo
×

রাজনীতি

কেন্দ্রীয় তিন নেতাকে সতর্ক করে রাজশাহী মহানগর বিএনপির চিঠি

Icon

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৭:৫৫ পিএম

কেন্দ্রীয় তিন নেতাকে সতর্ক করে রাজশাহী মহানগর বিএনপির চিঠি

বিএনপির কেন্দ্রীয় তিন নেতাকে সতর্ক নোটিশ দিয়েছে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি।

যাদের সতর্ক করা হয়েছে তারা হলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এবং রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সহ-সম্পাদক এবং রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন।

এ ঘটনায় রাজশাহীতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় তিন নেতাকে সতর্ক নোটিশ জারির বিষয়কে দলটির নেতাকর্মীরা নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেছেন।

জানা গেছে, গত ১৭ মার্চ রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ইশা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা ও সদস্য সচিব মামুন অর রশিদ স্বাক্ষরিত পৃথক পৃথক তিনটি চিঠিতে বিএনপির এই তিন কেন্দ্রীয় নেতাকে সতর্ক করা হয়েছে।

বিএনপি নেতা শফিকুল হক মিলনকে পাঠানো সতর্ক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দলীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও রাজশাহী মহানগর বিএনপিকে অগ্রাহ্য করে মহানগরের অধীনস্থ বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড কমিটিকে বাদ দিয়ে দলীয় ব্যানার ব্যবহার করে আপনি বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচি পালন করছেন। নিজ খেয়ালখুশি মতো এসব কর্মসূচিতে সাংগঠনিক পদ পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন যা গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ও সংগঠনের বিধিমালার চরম লঙ্ঘন। আপনার এমন কর্মকাণ্ডে রাজশাহীতে দলের ঐক্য বিনষ্ট করছে এবং দলের মধ্যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে, যা বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নির্দেশিত হয়ে সংগঠনের ঐক্য ও শৃঙ্খলার স্বার্থে আপনাকে এহেন কর্মকাণ্ড থেকে সর্বোতভাবে বিরত থাকতে সতর্কীকরণ করছি।

অন্যদিকে মিজানুর রহমান মিনু ও মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে দেওয়া সতর্ক চিঠিতে বলা হয়েছে- রাজশাহী মহানগর বিএনপির অধীন নগরীর ২, ৭, ১৩ ও ৩০নং ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে কিছুসংখ্যক ব্যক্তি, দলীয় পদে না থেকেও তারা মহানগর কমিটিকে অমান্য করে দলের নাম ব্যবহার করে বিতর্কিত কর্মসূচি পালন করে চলেছে। এসব কর্মসূচিতে আপনাদের মতো দায়িত্বশীল নেতা গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন; যা মহানগর বিএনপির ঐক্য ও শৃঙ্খলা বিনষ্ট হচ্ছে। ওই সব বিতর্কিত কর্মসূচিতে আপনাদের উপস্থিত না থাকাই বাঞ্ছনীয়। আপনাদের কাছ থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা দলীয় শৃঙ্খলা আশা করে। আপনারা চিঠি পাওয়ার পর সতর্ক হবেন।

বিএনপির তিন কেন্দ্রীয় নেতাকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করা প্রসঙ্গে রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুন অর রশিদ বলেন, এসব জটিলতা নিরসনে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামকে দায়িত্ব দিয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি। বেশ কয়েকবার এসব নিয়ে নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। তারপরও তাদের কাছে একই আচরণ লক্ষ্য করা গেছে। ফলে হাইকমান্ডের নির্দেশে তাদের চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গত বছরের আগস্ট মাসে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে রাজশাহী মহানগর বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ এনে লিখিতভাবে একটি অভিযোগ পাঠান চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু। পরে সেটি তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী চিঠি দিয়ে মিজানুর রহমান মিনুকে মিথ্যা অভিযোগ করায় সতর্ক করা হয়েছিল।

দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সতর্ক করা প্রসঙ্গে বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগরের সাবেক সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, তারা (আহ্বায়ক কমিটি) যেন মগের মুল্লুক পেয়ে গেছেন। এ বিষয়ে তাদের কাছেই জানতে চান কেন্দ্রীয় নেতাদের তারা চিঠি দিয়ে সতর্ক করতে পারেন কিনা।

মহানগর বিএনপির সতর্ক চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের নির্দেশনা অনুযায়ী মাঠে কাজ করছি। কেন্দ্রীয় কমিটির নেতার কোনো চিঠি দেওয়ার এখতিয়ার মহানগর কমিটির নেই। রাজশাহীতে তারা দলের নেতাকর্মীদের ভেতরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য এসব করছেন। দলের হাইকমান্ড এ বিষয়টি নিশ্চয় দেখবেন।

তিন কেন্দ্রীয় নেতাকে সতর্ক চিঠি দেওয়া প্রসঙ্গে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ইশা বলেন, ২০২১ সালে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি হওয়ার পর থেকে তারা বিভিন্নভাবে আমাদের অসহযোগিতা করে আসছে। যার কারণে মহানগর বিএনপি দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে আলাদা কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায় বিভিন্ন সময়ে। এতে দলের ঐক্য ও শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। এ কারণে কেন্দ্র থেকে নির্দেশিত হয়ে তাদের চিঠি দিয়ে  সতর্ক করেছি। আমাদের সতর্কবার্তা তারা মানতেও পারেন আবার নাও মানতে পারেন। তারা যদি না মানেন তবে আমরা সেটি কেন্দ্রকে জানাব। কেন্দ্র বিষয়টি দেখবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম