Logo
Logo
×

রাজনীতি

হাসিনা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লুটপাটের উৎসবে মেতেছিলেন: সাকি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৫, ১০:১৬ পিএম

হাসিনা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লুটপাটের উৎসবে মেতেছিলেন: সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, হাসিনা তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লুটপাটের উৎসবে মেতে উঠেছিলেন। দেশ থেকে টাকা পাচার করেছেন, কেউ কথা বললে তাকে গুম করা হয়েছে, খুন করা হয়েছে, রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে।

সোমবার আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) উদ্যোগে চলমান গণইফতার কার্যক্রমের ১৬তম দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, লুটেরাদের শাসনব্যবস্থা বদলিয়ে জনগণের শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। খেটে খাওয়া মানুষের শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে পারলে গণতন্ত্র কায়েম হয়ে যাবে। এ বাংলাদেশ খেটে খাওয়া মানুষের বাংলাদেশ। 

পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর সভাপতিত্বে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গণইফতার কার্যক্রমে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বাচ্চু ভুঁইয়া, এবি পার্টির জাতীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ লোকমান, স্বেচ্ছাসেবা ও জনকল্যাণ বিষয়ক সহসম্পাদক কেফায়েত হোসাইন তানভীর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুগ্ম সদস্য সচিব বারকাজ নাসির আহমদ,পল্টন থানা আহ্বায়ক আবদুল কাদের মুন্সী, যুব নেতা ইমরান হোসেন শিবলু প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, এবি পার্টি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই গণইফতারের আয়োজন করছে যা একটি প্রসংশনীয় উদ্যেগ।

তিনি এমন আয়োজনের জন্য এবি পার্টিকে ধন্যবাদ জানিয়ে জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, এমনি এমনিতো এ রাষ্ট্র আমরা পাইনি, যুদ্ধ করে আমরা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র পেয়েছি, যোদ্ধা হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষ। সম্পদ তৈরি করেন আপনারা আর ভোগ করেন অল্প সংখ্যক লোক। এভাবে চলতে পারে না। এ দেশ হবে খেটে খাওয়ার মানুষের। হাসিনা কী এমনি এমনি পালাইছেন। ১৬০০ মানুষের জীবনের বিনিময়ে হাসিনাকে পালাইতে হইছে। হাসিনা পালানোর মধ্যে দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টির সুযোগ হয়েছে, সেটি আমরা হেলায়ফেলায় বেহাত হতে দেব না। এজন্য পুরাতন রাজনীতি ছুড়ে ফেলে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মধ্যে দিয়ে জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্র গঠন করতে হবে। পুরাতন বন্দোবস্ত স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণে ব্যর্থ হয়েছে এজন‍্য ২৪ পরবর্তী গণঅভ্যুত্থানে এ সময়ে রাষ্ট্রকে জতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশের সকল নাগরিকের সমান মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। নতুন বাংলাদেশে কেউ খাবে কেউ খাবে না, তা হবে না।  মবের নাম করে আইনশৃঙ্খলা নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না।  

সভাপতির বক্তব্যে পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আপনারা তো ভালো নাই, ভালো থাকলে এখানে আসতেন না! এই রাষ্ট্রে শেখ হাসিনার মতো শাসকগোষ্ঠী কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে শাসন করেছে আমাদেরকে। যার ফলে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে হাসিনাকে পালাতে হয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে যেখানে অপরাধ শূন্যের কোঠায়, মানুষের অভাব পূরণের মধ্যে দিয়ে এটি সম্ভব হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আগে রাষ্ট্রের অভাব দূর করতে হবে, তারপর মানুষকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।  অভাব দূর করতে না পারলে শাস্তি দেওয়ার অধিকার নাই। উন্নত রাষ্ট্রগুলো আগে আমাদের চাইতে অনেক নিচে ছিল, ওরা এখন আমাদের চাইতে অনেক উন্নত, কারণ ওদের সমাজ পরিবর্তনের কিছু কাজপাগল দেশপ্রেমিক মানুষ ছিল। সেই উন্নত রাষ্ট্রগুলোর মতো আমরাও সমাজটাকে পরিবর্তন করতে চাই। আপনারা একতাবদ্ধ হয়ে আমাদেরকে জানান- আমরা প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হতে চাই, আমরা রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের নিকট প্রস্তাবনা দিয়ে আপনাদের কাজ শিখার ব্যবস্থা করব। আমাদেরকে নিজের ভাগ্যকে পরিবর্তনের লড়াই করতে হবে তাহলেই রাষ্ট্রের ভাগ্যও অটো পরিবর্তন হয়ে যাবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, আপনাদেরকে তিনটি কাজ করতে হবে, সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের বিচার কে করবে? আমার বোনের বিচার কে করবে? আমার রিকশাওয়ালা শহিদ ভাইয়ের বিচার কে করবে? 

বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আমার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের বিচার করবে না, জামায়াত ক্ষমতায় আসলেও করবে না। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের বিচার করে যেতে হবে এ সরকারকেই। বিচার ও সংস্কার শেষ করার পরই নির্বাচন করতে হবে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, নতুন রাজনীতির বন্দোবস্ত না হলে বাংলার জনগণ কখনো আপনাদের ক্ষমা করবে না। শুধুমাত্র পার্লামেন্টের সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে দেশ চালালে হবে না, আমার ফুটপাতের মানুষের মতামতও নিতে হবে। দেশটা আমাদের সবার এজন্য দেশের ভালোর জন্য আমাদের সকলকে ভালো কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।  

গণইফতার অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, এবি পার্টির ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ সম্পাদক অধ্যাপক আবু হেলাল, যুবপার্টির দপ্তর সম্পাদক আমানুল্লাহ সরকার রাসেল, নারী উন্নয়ন বিষয়ক সহসম্পাদক শাহিনুর আক্তার শিলা, সহদপ্তর সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, শরন চৌধুরী, সহঅর্থ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক ও সহপ্রচার সম্পাদক রিপন মাহমুদ, আজাদুল ইসলাম আজাদ প্রমুখ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম