বিশ্ব নারী দিবসে নারীর প্রকৃত মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় ছাত্রশিবিরের আহ্বান

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৮ পিএম

সংগৃহীত ছবি
নারী সমাজ মানব সভ্যতার অপরিহার্য অংশ। সভ্যতার বিকাশ ও উৎকর্ষ সাধনে নারীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। নারীর অধিকার সংরক্ষণ ও প্রকৃত মর্যাদা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
শনিবার ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এ সংক্রান্ত বিবৃতি প্রদান করেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, পরিবার ও সমাজ গঠন, জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা ও জাতীয় সংকট নিরসনে নারীর রয়েছে অসামান্য অবদান। গত জুলাই অভ্যুত্থানেও ছাত্র-জনতার সঙ্গে নারীরাও সম্মুখ সারিতে ছিলেন। গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার এ লড়াইয়ে অনেকেই শাহাদাত বরণ করেছেন। বিশ্ব নারী দিবসে আমরা তাদের বীরত্ব ও আত্মত্যাগ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। কিন্তু আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে নারীদের ওপর নির্যাতন, ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির ঘটনা বেড়েই চলেছে। গতকাল (৭ মার্চ) মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বিগত ৫ বছরে কমপক্ষে ১১৭৫৮ জন নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে এবং ধর্ষণের স্বীকার হয়েছে অন্তত ৬৩০৫ জন। আমরা নারীদের ওপর চলমান এই বর্বরতা ও নিপীড়নের তীব্র নিন্দার পাশাপাশি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ‘ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, ইসলামই নারীর সম্মান, মর্যাদা, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং উন্নয়ন-অগ্রগতিতে পথিকৃৎ হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে। ইসলাম আগমনের পূর্বে নারী ছিল চরম অবমাননা ও শোষণের শিকার। কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণকে অভিশাপ মনে করা হত। নারীরা সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল এবং সামাজিকভাবে ছিল না কোনো সম্মান । ইসলাম নারীকে যথাযথ সম্মান ও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। কন্যা, স্ত্রী ও মায়ের প্রতিটি পর্যায়ে ইসলাম নারীর অধিকার নিশ্চিত করেছে। নারীর নিরাপত্তা ও সমাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের পাশাপাশি ইসলামী অনুশাসনের বাস্তবায়ন অপরিহার্য।’
নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘বর্তমান সময়ে নারী স্বাধীনতার নামে নারীদের পণ্যায়ন করা হচ্ছে। মিডিয়া, ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি ও কর্পোরেট সংস্কৃতির মোড়কে তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে মুনাফা অর্জনের হাতিয়ার হিসেবে। কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য, পারিবারিক অবক্ষয়, নারীর প্রতি সহিংসতা ও নিরাপত্তাহীনতা আজ প্রকট আকার ধারণ করেছে।
নারী দিবসকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর নানাবিধ কর্মসূচি পালন ও উদ্যোগের ঘোষণা শোনা গেলেও বাস্তবে নারীদের অধিকার সংরক্ষণ করে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা এখনো গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। আমরা বিশ্বাস করি, নারীর প্রকৃত মর্যাদা কেবল তখনই প্রতিষ্ঠিত হবে, যখন আইনের যথাযথ প্রয়োগের পাশাপাশি সমাজে ইসলামী মূল্যবোধের সঠিক চর্চা নিশ্চিত হবে। বিশ্ব নারী দিবসে আমরা সমাজের সকল স্তরে নারীর সম্মান, নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করতে ইসলামের বিধান পরিপূর্ণভাবে অনুশীলন করার আহ্বান জানাচ্ছি।’