Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

এনসিপির অনুষ্ঠানে মানুষের ঢল

বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠনের প্রত্যাশা

এই দলে ক্ষমতালোভী কোনো মানুষ থাকবে না

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠনের প্রত্যাশা

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র (এনসিপি) আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ছুটে আসেন ছাত্র-জনতা। তাদের স্বপ্ন এনসিপির নেতৃত্বে গঠিত হবে নতুন বাংলাদেশ। প্রত্যাশা এখানে বৈষম্য ও দুর্নীতির কোনো স্থান হবে না। সাধারণ মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের মতপ্রকাশ করতে পারবেন। দুর্নীতিমুক্ত দেশ হবে। বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে অধিকার বঞ্চিত মানুষ তাদের প্রাপ্য অধিকার বুঝে পাবেন। যুগান্তরের কাছে নতুন এই দল নিয়ে প্রত্যাশা ও ভাবনার কথা জানিয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা জনতা।

দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগতদের একজন মো. মোতালেব হোসেন। তিনি সমাবেশে এসেছেন নীলফামারী থেকে। শুক্রবার বিকালে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশস্থলের পাশে তার সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। মোতালেব বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা নতুন করে স্বাধীনতা পেয়েছি। বিগত ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ভয়ে মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারেননি। আমরা আজকে এমন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছি যেখানে সাধারণ মানুষ তাদের অধিকার বুঝে পাবেন। দেশ এমনভাবে পরিচালিত হবে যেখানে দেশের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন। এনসিপি এমন একটি দল হবে যেখানে ক্ষমতালোভী কোনো মানুষ থাকবে না।

টঙ্গী থেকে সমাবেশে আসেন ইদিশা হোসেন। নতুন এই দল নিয়ে তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ নাহিদ ভাইয়েরা অনেক ভালো কিছু করবেন বাংলাদেশের জন্য। আমরা যে বাংলাদেশ চাচ্ছি উনারা সেটি করতে পারবেন বলে বিশ্বাস করি। আমাদের ছাত্রসমাজের জন্য অনেক কিছু করতে পারবেন তারা। তিনি বলেন, আমরা নতুন কিছু চাচ্ছি। প্রকৃতপক্ষে চাচ্ছি উনারা আমাদের জনগণের জন্য কাজ করুক। আগের যে দলগুলো ছিল তারা কিন্তু জনগণের জন্য কাজ করেনি। তারা নিজেদের স্বার্থের জন্য কাজ করেছেন। আমরা চাচ্ছি আমাদের জন্য সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করুক। তিনি বলেন, এলাকায় ফিরে গিয়ে প্রথম কাজ হবে মানুষকে আমাদের পক্ষে সংগঠিত করা।

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা থেকে এসেছেন আরিফ আহম্মেদ তানভীর নামের এক যুবক। এক সময় দুবাই থাকতেন। বছর দুই হলো দেশেই ব্যবসা করছেন। তিনি যুগান্তরকে বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। এই নতুন বাংলাদেশে আবার যেন পরিবারতন্ত্র, স্বৈরশাসন ফিরে না আসে সেই উপলক্ষ্যে নতুন দল গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যাশা তরুণদের নিয়ে নতুন একটি বাংলাদেশ গঠন করা। সুন্দর এই বাংলাদেশে যেন বৈষম্যের কোনো ঠাঁই না হয়, সবার যাতে সমান অধিকার থাকে। শুধু নেতার ছেলে নেতা হবে তা যাতে না হয়। কৃষকের ছেলেও যেন রাজনীতিতে যুক্ত হতে পারে।

নতুন দল গুছিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রায় ২ মাস ধরে কাজ করছি। ইতোমধ্যে আমাদের উপজেলা কমিটি হয়ে গেছে। ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন কমিটি নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মূল শক্তি হচ্ছে জনগণ এবং ভোটার। তাদের কাছে না গেলে আমাদের দল কিন্তু আগাতে পারবে না। আমরা সেই লক্ষ্যে যেমন তরুণদের কাছে যাচ্ছি একইভাবে সাধারণ মানুষ, আমজনতার কাছেও যাচ্ছি। তাদের কাছে অনেক ভালো সাড়া পাচ্ছি।

নারায়ণগঞ্জের চিটাগাং রোড এলাকা থেকে সমাবেশে আসেন জান্নাতুল নাঈম শিলা নামের এক নারী। তিনি যুগান্তরকে বলেন, আমরা নারীদের সেফ জোন চাই। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি আমলে নারীরা সেফ (নিরাপদ) ছিলেন না। এখন আশা করছি নারীরা সেফটি পাবেন। সবকিছুতে চাঁদাবাজি, প্রভাব খাটানো, মারধর, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে আমরা মুক্তি পাব।

প্রত্যাশার বিষয়ে তিনি বলেন, আগে জেনারেশন গ্যাপ ছিল। বয়স্করা যেটা বলেছেন সেটাই করতে হয়েছে-ভুল বলুক আর রাইট বলুক। এখন যারা দল গঠন করলেন তারা (নতুন দলের নেতারা) ইয়াং। আশা করি তারা ইয়াং জেনারেশনেন মাইন্ড, মুভমেন্ট বুঝবেন। আমরাও সহযোগিতা করব। তবে গত ১৬ বছর অনেক সমস্যা তৈরি করে গেছে। সেগুলো খুঁজে বের করে সমাধান করতে হবে। এজন্য জনগণকেও নতুন নেতৃত্বকে সময় দিতে হবে।

শেরপুরের নকলা থানা এলাকা থেকে সমাবেশে আসেন সুজন মিয়া। তিনি যুগান্তরকে বলেন, নতুন এই দলের কাছে আমার প্রত্যাশা বৈষম্য দূর করা এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠন করা। আমার প্রত্যাশা, নতুন দল রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে দেশটাকে সুন্দরভাবে গোছাবে। আমরা সব শ্রেণির লোকদের কাছে যাচ্ছি যেন এই দলের প্রতি তারা আকৃষ্ট হন।

দিনাজপুর থেকে এসেছেন শেখ সুমন আলী। তিনি বলেন, আমরা সাধারণ মানুষ যেসব অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছি আমাদের সেই বঞ্চিত অধিকার এই তরুণ প্রজন্ম ফিরিয়ে দেবে। আমরা যেন সুন্দরভাবে জীবনযাপন করে বেঁচে থাকতে পারি-তরুণ প্রজন্মের কাছে এটাই চাওয়া।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম