শিবির ইস্যুতে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব, নতুন দল গঠন নিয়ে চারভাগে বিভক্ত ছাত্র নেতৃত্ব

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪৮ পিএম

ফাইল ছবি
নতুন রাজনৈতিক দল গঠনকে কেন্দ্র করে ছাত্র নেতৃত্ব চারটি বলয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। শিবির ইস্যুতে দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করেছে। একটা অংশ ক্ষমতাবান, আরেকটা অংশ বঞ্চিত হচ্ছে বলে মনে করছেন নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব রাফে সালমান রিফাত।
বিবিসির প্রতিবেদনে করা হয়েছে, ছাত্র রাজনীতি করে আসা নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীকে আহ্বায়ক ও আখতার হোসেনকে সদস্য সচিব করে জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠন করা হয়।
নাগরিক কমিটি যখন ধীরে ধীরে তাদের পরিসর বড় করতে শুরু করে তখন তাতে যোগ দেন বাম ঘরানার ছাত্র সংগঠন ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র ইউনিয়ন, রাষ্ট্রচিন্তার অনেকে।
পাশাপাশি ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্র শক্তি, ইসলামী ছাত্র শিবির ও ছাত্র মজলিসহ কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের অনেকেও যোগ দেন এই প্ল্যাটফর্মে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক সংগঠনের বাইরে থাকা বিভিন্ন অ্যাক্টিভিস্টও এতে যুক্ত হন।
আবার কোনো ধরনের আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন না এমন কয়েকজন ব্যক্তিকেও ব্যক্তিগত যোগাযোগের ভিত্তিতে নাগরিক কমিটির সদস্য করা হয় বলে আলোচনা আছে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন রাজনৈতিক দল গঠনকে কেন্দ্র করে এই ছাত্র নেতৃত্ব চারটি বলয়ে বিভক্ত হয়ে গেছে গত কয়েকদিনে।
এর মধ্যে শক্তিশালী দুটি বলয়ের একটিতে রয়েছেন গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি থেকে আসা নেতারা। আরেকটিতে রয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবির ও বিভিন্ন ইসলামী দলের ছাত্র সংগঠনের সাবেক নেতারা।
নতুন রাজনৈতিক দলের আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, মুখ্য সংগঠক ও মুখপাত্র শীর্ষ এই চারটি পদ নিয়ে আগ্রহ সব গ্রুপের।
এর মধ্যে নাহিদ ইসলামের আহ্বায়ক হওয়ার বিষয়টি অনেকটা চূড়ান্ত হওয়ায় বাকি তিনটি পদের মধ্যে অন্তত একটি পদ পেতে চান কমিটিতে থাকা সাবেক শিবির নেতারা।
কেন্দ্রীয় কমিটি থাকা শিবিরের সাবেক একজন নেতা (নাম প্রকাশ করতে চাননি) বলেন, তারা এই বিষয়টি যখন নাগরিক কমিটির অভ্যন্তরীণ বৈঠকে তুলেছে তখন ‘শিবির’ পরিচয়ের কারণে তাদেরকে শীর্ষ চারটি পদে না আনতে প্রভাবশালী একটি পক্ষ আপত্তি তুলেছেন।
মূলত ওই ঘটনার পরই রোববার নাগরিক কমিটির কমিটিতে থাকা সাবেক শিবির নেতাদের কেউ কেউ জুলাই-অগাস্টের আন্দোলনে ছাত্র শিবিরের ভূমিকার বিষয়গুলো তুলে ধরে ফেসবুকে পোস্ট দেন।
যে কারণে এই ইস্যুটি গত কয়েকদিনে বিষয়টি নাগরিক কমিটির অভ্যন্তরে থাকলেও তা প্রকাশ্যে রূপ নেয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি ও নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব রাফে সালমান রিফাত বলেন, ‘এখানে একটা অংশ ক্ষমতায়িত হচ্ছে, আরেকটা অংশ বঞ্চিত হচ্ছে। এটা তো ন্যায্যতার প্রশ্ন। ফলে ভেতরের সূক্ষ্ম মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপারগুলো একটা সময় বাইরে চলে আসছে।’
দল শুরুর আগেই দ্বন্দ্বের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় এই বিষয়টি নিয়ে অনেকটা বিব্রত জাতীয় নাগরিক কমিটি।
মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, ‘তারা বিষয়গুলো এমন কোনো পাবলিক ফোরামে নিয়ে যাচ্ছে যেখানে সমাধানের চেয়ে বেশি সমস্যাই তৈরি করছে। তাদের ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না সেটার ব্যাপারেও আমাদের ফোরাম আলাপ করেছে। এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’