Logo
Logo
×

রাজনীতি

আগামীর বাংলাদেশ হবে সবার, দল বা গোষ্ঠীর নয়: আমির খসরু

Icon

কুড়িগ্রাম ও উলিপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:০২ পিএম

আগামীর বাংলাদেশ হবে সবার, দল বা গোষ্ঠীর নয়: আমির খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আগামীর বাংলাদেশ হবে সবার বাংলাদেশ, একটি দল বা গোষ্ঠীর নয়।

মঙ্গলবার বিকালে কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার থেতরাই পাকার মাথায় অবস্থিত তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, আজকের এই দাবি আমাদের প্রাণের দাবি-আন্তর্জাতিকভাবে ন্যায়নীতির ন্যায্য দাবি। প্রত্যেকটি দেশে এই ধরনের যখন নদী বিভিন্ন দেশ দিয়ে প্রবাহিত হয়, সেখানে এগুলো পরিচালনার জন্য সবগুলো দেশের সমন্বয়ে হয় ও ব্যবস্থাপনা থাকে যৌথ। আজকের সেই ব্যবস্থাপনা ব্যর্থ হয়েছে। আজকের এই দাবি হচ্ছে সব ব্যবস্থাপনা ফিরিয়ে আনার। তিস্তা নদীর পানি বাংলাদেশের মানুষের ন্যায্য দাবি। এই দাবি পূরণ করতে হবে ভারতকে। 

তিনি বলেন, আমরা দেখেছি যখনই তিস্তার দাবি আসে তখনই পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ ফেনী নদীতে সাতটি চুক্তি হয়েছে। সেখানে ভারতের লাভ হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে যেখানে পানি পাওয়ার কথা সেখানে পিছিয়ে দিয়ে মরুভূমি করা হয়েছে। তিস্তা নদীকে ঘিরে মানুষের জীবন বাঁচার সংগ্রাম, সেখানে জীববৈচিত্র্য ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, তিস্তা নদীতে পানি না থাকায় ১৫ লাখ টন চাল ও গম কম উৎপাদন হচ্ছে। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফল শুরু হয়ে গেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের যে ডাক দিয়েছেন। এই ডাক বাংলাদেশের মানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছে। পানি যত দিন না আসবে ততদিন আন্দোলন অব্যাহত থাকবে ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’।

আমির খসরু বলেন, যেকোনো দাবি বাস্তবায়ন করতে গেলে জনগণের সমর্থন ছাড়া সেটা সম্ভব নয়। বিএনপি জনগণের সমর্থন নিয়ে এই আন্দোলন শুরু করেছে। বিএনপি জনগণের সমর্থন গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে, যা আমাদের আগামী দিনে কাজে লাগবে।

জানা যায়, ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তা নদী বেষ্টিত লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন করে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি। দুই দিনব্যাপী কর্মসূচির আজ শেষ দিন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান এসব সমাবেশে ভার্চুয়াল বক্তব্য রাখেন।

উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের পাকার মাথায় অবস্থিত তিস্তা নদীর তীরবর্তীতে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি উলিপুর শাখার আয়োজনে কর্মসূচিতে সাবেক উলিপুর বিএনপির সভাপতি হায়দার আলী মিয়া সভাপতিত্ব করেন।

সাবেক উলিপুর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান বুলবুলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ, যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বেবু, হাসিবুর রহমান হাসিব প্রমুখ।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, তিস্তা নদী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদে মিলিত হয়েছে। এর দৈর্ঘ্য ৪১৪ কিলোমিটার। বাংলাদেশে ১১৩ কিলোমিটার। বাংলাদেশের রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট,গাইবান্ধা এবং নীলফামারী জেলা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এর মধ্যে কুড়িগ্রামে ৪০ কিলোমিটার তিস্তা নদী। কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীতে ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট ২৭ কিলোমিটার। অতি ঝুঁকিপূর্ণ ২২ কিলোমিটার। প্রতিবছর গড়ে ২শ মিটার বা ৩-৪শ ফুট করে নদী ভেঙ্গে বসতবাড়ি, কৃষি জমি বিলীন হচ্ছে। তিস্তা নদীর স্থায়ীভাবে দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৫ কিলোমিটার ব্লক দিয়ে তীররক্ষা প্রকল্প এবং চলতি বছর অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন রোধে ৬কিলোমিটার পয়েন্টে ৪০ কোটি টাকার প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম