জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর  অনেকে দিল্লির সঙ্গে তাঁবেদারির সম্পর্ক করতে চায়। তারা দিল্লির কাছে অধীনস্তের কথা স্বীকারও করে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই- দিল্লির অধীনতার সম্পর্ক করে বাংলাদেশে আর রাজনীতি করা যাবে না। কারণ বাংলাদেশের মানুষ আর দিল্লির দাসত্ব চায় না।  

শুক্রবার রাজধানীর শান্তিনগরে জাতীয় নাগরিক কমিটির পল্টন থানার উদ্যোগে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, আলী আহসান জোনায়েদ, যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, সাইফ মোস্তাফিজ, সহ-মুখপাত্র আরেফিন মোহাম্মদ, কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম শাহরিয়ার, মশিউর রহমান, শাহবাগ থানা প্রতিনিধি হাসান আহমেদ সুমন, পল্টন থানার  সংগঠক অলি উল্লাহ প্রমুখ।  

মতবিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন শাহবাগ থানার সংগঠক কাজী ফখরুল ইসলাম। 

আখতার হোসেন বলেন, গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া তরুণ ছাত্ররা রাজনৈতিক দল করবে। তরুণদের এ দল গঠন আজ অনেকের সহ্য হচ্ছে না। তারা বলছে- কেন তরুণরা রাজনৈতিক দল করবে? অথচ এ তরুণরাই বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছে। 

‘আমরা বলতে চাই- বাংলাদেশে আর কখনোই যেন ফ্যাসিবাদ, জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়ন ও গণহত্যা ফিরে না আসে, সেজন্যই তরুণরা রাজনৈতিক দল নিয়ে আসছে৷এ দলে বাংলাদেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আস্থা রাখতে চায়।  ইতোমধ্যে দেশব্যাপী গণজোয়ারও সৃষ্টি হয়েছে।  

আওয়ামী লীগকে কোনো কর্মসূচি করতে দেওয়া হবে না- হুঁশিয়ারি দিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব বলেন, যারা বাংলাদেশকে লুটেপুটে খেয়েছে, দেশের মানুষের ওপর জুলুম ও নির্যাতন করেছে; সেই ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ নাকি ফেব্রুয়ারি মাসে কর্মসূচি দিয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের তরুণরা ওই ফ্যাসিবাদী শক্তিকে কোনোভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে দেবে না।  

জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস হবে ইতিহাসের ঐতিহাসিক মাস। কারণ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণ ছাত্র নেতাদের হাত ধরে ফেব্রুয়ারিতে নতুন রাজনৈতিক দল আসবে। এজন্য তরুণরা দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে যাবেন এবং তারা তরুণদের কাছে থেকে কী ধরনের রাজনৈতিক দল চায় তা শুনবেন। দেশের মানুষের মতামতের ভিত্তিতে নতুন রাজনৈতিক দল আসবে।  

তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে। যে দল আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছাড়া যাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নাই; এমন একটা দলের বাংলাদেশে আর ভবিষ্যৎ নাই।  ছাত্রজনতা এ দলকে আর রাজনীতি করতে দেবে না। যারা দিল্লির প্রেসক্রিপশনে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন ও নির্বাচনে অংশগ্রহণের চেষ্টা করবে, তাদের চেষ্টা কখনোই সফল হবে না৷  

‘দিল্লির প্রেসক্রিপশনে একপেশে সংবিধান বাংলার মানুষের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। এ সংবিধান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং গণপরিষদ নির্বাচন দিয়ে নতুন সংবিধান তৈরি করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলবো- বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের ম্যান্ডেড দিয়েছে সংস্কার করার জন্য। আপনারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয় যে, শুধু নির্বাচন দিয়েই সরে যাবেন। আপনাদের সংস্কার করে যেতে হবে।