নির্বাচনে প্রার্থিতায় আর কোনো বাধা থাকল না দুলুর
নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫৩ পিএম
নাটোরের নলডাঙ্গায় ১৮টি বাড়িতে গানপাউডার দিয়ে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট মামলায় বিভিন্ন ধারায় সাত বছর করে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ ৯৪ জনকে আপিলের রায়ে খালাস প্রদান করেছেন আদালত।
বুধবার বেলা ১২টার দিকে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক এএফএম মারুফ চৌধুরী এ রায় প্রদান করেন। এই মামলায় খালাস পাওয়ায় জাতীয় সংসদসহ যেকোনো নির্বাচনে প্রার্থী হতে আর কোনো বাধা নেই দুলুর।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি নলডাঙ্গা উপজেলার রামশার কাজীপুরে ১৮টি বাড়িতে গান পাউডার ছিটিয়ে ও পেট্রল দিয়ে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগে একই এলাকার আনিছুর শাহের ছেলে আসাদুজ্জামান আসাদ (পরবর্তীতে নলডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান) ঘটনার তিন বছর পর ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দীনের শাসনামলে ২০০৭ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নলডাঙ্গা থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ ১০৫ জনের নাম উল্লেখ করেন।
মামলার বাদী বলেন, ঘটনার সময় মামলার প্রধান আসামি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু সরকারের উপমন্ত্রী থাকায় তখন তিনি মামলা দায়ের করতে পারেননি। একই বছরের ২৬ জুলাই নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রওনক মাহমুদ মামলায় ৪৩৬ ধারাসহ বিভিন্ন ধারায় প্রধান অভিযুক্ত অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ ৯৪ জনকে ৭ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১১ জনকে খালাসের আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে রায়ের ১১ দিন পর একই বছরের ৬ আগস্ট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু নিজে ও তার ভাই নুরুন্নবী তালুকদার, আতিকুর রহমান তালুকদার, আবিদুর রহমান তালুকদার, নজিবুর রহমান তালুকদার ও তাদের ভাতিজি জামাই জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজসহ ৩০ জনের পক্ষে এবং তার ভাই রফিকুল ইসলাম তালুকদার ২০০৯ সালের ৬ আগস্ট তিনিসহ ৩৮ জনের পক্ষে নাটোরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন।
দীর্ঘ আপিল শুনানি শেষে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক এএফএম মারুফ চৌধুরী বুধবার সব আসামিকে খালাস প্রদান করেন।
নাটোর আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন তালুকদার টগর বলেছেন, বিচারক মামলার পর্যবেক্ষণে বলেছেন- দুলুর ভাতিজা যুবদল নেতা সাব্বির আহম্মেদ গামা হত্যাকাণ্ডের পর বিষয়টি ভিন্ন খাতে নিতে সেই হত্যা মামলার আসামি ও তাদের স্বজনরা পরিকল্পিতভাবে দুলু ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে ঘটনার তিন বছর পর কাউন্টার মামলা হিসেবে এ মামলা দায়ের করেছিলেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ও নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শরিফুল হক মুক্তা জানান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক নিষ্পত্তিকৃত মামলার আপিল শুনানি শেষে বুধবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক দণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামিকে খালাস প্রদান করেছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু এ মামলায় খালাস পাওয়ায় জাতীয় সংসদসহ যেকোনো নির্বাচনে প্রার্থী হতে আর কোনো বাধা নেই। এমন রায়ে আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলে মনে করেন এই আইনজীবী।