সংস্কার ছাড়া জাতীয় নির্বাচন নয় বলে জানালেন গোলাম পরওয়ার
মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:২৪ পিএম
সংস্কার ছাড়া জাতীয় নির্বাচন নয় উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সংস্কার না করে এখন নির্বাচন দেওয়া হলে ২০১৪, ১৮ ও ২৪-এর মতো ভোট হবে। ছাত্র-জনতার এই রক্ত বৃথা যাবে। নির্বাচন ভালো করতে গেলে কমপক্ষে নির্বাচন কমিশন, পুলিশ বিভাগ, সিভিল বিভাগ, বিচার বিভাগসহ ৭-৮টি জায়গায় সংস্কার করতে হবে। এরপর সরকার নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন।
সোমবার দুপুরে মাদারীপুর শহরের লেকপাড়ের স্বাধীনতা অঙ্গনে জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, লগি-বৈঠার আমল থেকে ২০২৪-এর ৫ আগস্ট পর্যন্ত হাজার হাজার খুনের সমস্ত দায় শেখ হাসিনার। সব খুনের মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনা। এই শেখ হাসিনার নামে ২২৬টি মামলা হয়েছে, রেড অ্যালার্ট হয়েছে, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, দুদকে মামলা হয়েছে। যে ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের নেতাকর্মীদের ফাঁসি দিয়েছিল, সেই ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার ফাঁসির আয়োজন চলছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে। যেখানকার মাল সেখানেই গেছে। ভারতে সবে এখনো ষড়যন্ত্র করতেছে। কোনো ষড়যন্ত্রে কাজ হবে না। দেশের লোকদের অডিও-ভিডিও বার্তা বলে তোমরা অস্থির হইও না, আমি যেকোনো সময় ঢুকে পড়ব। আরে ঢুকে পড়ে দেখেন জনগণ আপনার কি করে। ৫ আগস্ট হেলিকপ্টারে পালিয়ে না গেলে গণভবনে লাখ লাখ মানুষ যেভাবে প্রবেশ করতেছিল, আপনার যে কী অবস্থা হতো এ দেশের জনগণ-জাতি ও দুনিয়া দেখতে পেত।
গত ১৫ বছর দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি মন্তব্য করে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ১৫ বছর নতুন প্রজন্মের যারা ভোটার হয়েছে, তারাসহ আমরা সবাই ৩টি নির্বাচনে ভোট দিতে পারি নাই। ভোটের দিন সকালে জনগণ ভোট দিতে যাবে, তখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, পুলিশ লীগ বাধা দিয়েছে। বলেছে ভোট হয়ে গেছে, তোমরা বাড়ি চলে যাও। যারা শেখ হাসিনা সরকারের বিরোধিতা করেছে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। যারা সরকারবিরোধী আন্দোলন করেছে তাদের চাকরি হয়নি। বিভিন্ন পরীক্ষায় পাস করেও যখন পুলিশি তদন্ত হয় তখন বলা হয় জামায়াত-শিবির পরিবারের সদস্য, তাই সরকারি কোনো চাকরি হয়নি। বিরোধী দল হলেই তাদেরকে আর সরকারি চাকরি দেওয়া হবেনা। ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরিসহ সব সুযোগ-সুবিধা একটি দল ও একটি পরিবারের কাছেই গত ১৫টি বছর জিম্মি ছিল।
জামায়াতে ইসলামী মাদারীপুর জেলা শাখার আমির মাওলানা মোখলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- জামায়াতে ইসলামী সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, মাদারীপুর জেলা শাখার সেক্রেটারি হাফেজ এনায়েত হোসেন, নায়েবে আমির হাফেজ কাজী ইয়াদুল হক্ব, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমানসহ অনেকেই।