শিবিরের সদস্য সম্মেলনে জামায়াত আমির
বাংলাদেশ আর কোনো চাঁদাবাজ আধিপত্যবাদ দখলবাজের স্থান হবে না
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৯ পিএম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বিগত সরকারের আমলে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছিল। চর দখলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে দখল করা, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও আধিপত্যবাদ বজায় রাখতে ক্যাম্পাসগুলোকে অস্ত্রাগারে পরিণত করেছিল। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই ব্যবস্থার কবর রচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশে আর কোনো চাঁদাবাজ, আধিপত্যবাদ ও দখলবাজের স্থান হবে না ইনশাআল্লাহ।
আজ মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলন-২০২৪ এর উদ্বোধনী সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদ (গত ৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হয়ে ৮ আগস্ট মারা যান) আলী রায়হানের সম্মানিত পিতা মো. মুসলেহ উদ্দিন।
উদ্বোধন ঘোষণাকালীন জুলাই বিপ্লবে হওয়া শহিদ আবু সাঈদ, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, ওয়াসিম, উসমানসহ শহিদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ, আওয়ামী আমলের অত্যাচারে আহত ও গুম হওয়া ভাইদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ স্টেজে উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, মাওলানা শামসুল ইসলাম ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতিবৃন্দ।
উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘বিগত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী দুঃশাসন বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ, বিশেষ করে ছাত্র ও যুবসমাজ কোনো দুঃশাসন মেনে নেয় না, সেটা চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে প্রমাণিত হয়েছে। স্বাধীনতার সাফল্যকে হাইজ্যাক করে একটা রাজনৈতিক দল দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করে রেখেছিল। কিন্তু ছাত্রসমাজ ১৫ বছরের মাথায় তাদের সেই দুঃশাসনকে পরাজিত করে নতুন বাংলাদেশের শুভ সূচনা করেছে। বাংলাদেশে আর কোনো আধিপত্যবাদ ও দুঃশাসন এদেশের জনগণ মেনে নিবে না।
সম্মেলনের সমাপনী বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এদেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের সেই মানুষের আকাঙ্ক্ষার জন্য ছাত্রশিবিরকে সকল ভয় উপেক্ষা করে ভূমিকা পালন করে যেতে হবে। ছাত্রশিবির চব্বিশের আন্দোলনে যেভাবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে আগামীতেও যে কোনো আন্দোলনে নেতৃত্বের ভূমিকায় অবর্তীর্ণ হতে হবে। এক্ষেত্রে আল্লাহকে ছাড়া আর কোনো শক্তিকে ভয় পাবে না। আল্লাহ তায়ালাই আমাদের জন্য যথেষ্ট।
সদস্য সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি কাজী ইবরাহীম, বিশিষ্ট ইসলামি ব্যক্তিত্ব ও তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার প্রাক্তন অধ্যক্ষ মাওলানা যায়নুল আবেদীন, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. শামছুল আলম, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ইসলামী ব্যক্তিত্ব মাওলানা সাইয়্যেদ কামালুদ্দীন জাফরী, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ড. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, গণঅধিকার পরিষদের (রেজা কিবরিয়া) ফারুক হাসান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠন সারজিস আলমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
বিদেশি মেহমানদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আনাদোলু গেঞ্জলিক দেরনেই-এর সহ-সভাপতি এমরুল্লাহ ডেমির, পেরসাতুয়ান কেবাংসান পেলাযার ইসলাম মালয়েশিয়ার সভাপতি জুল আইমান, হিকমত ইয়ুথ মিশরের সভাপতি ড. আবদুল্লাহ আহমেদ, ইসলামী বিশ্ব যুব ফোরামের সভাপতি ড. আশরাফ আওয়াদ, আংকাতান বেলিয়া ইসলাম মালয়েশিয়ার সভাপতি আহমদ ফাহমি মোহাম্মদ সামসুদিন।
ছাত্র নেত্ববৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, জাগপা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুর রহমান ফারুকী, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলন (ববি হাজ্জাজ)-এর সভাপতি মাসুদ রানা জুয়েলসহ বন্ধু প্রতীম ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।