‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ নিয়ে কী ভাবছে বিএনপি-জামায়াত?
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৯ পিএম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে সমুন্নত রাখতে আগামীকাল মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করবে। সেই ঘোষণাপত্রে পরবর্তী বাংলাদেশের স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা, অভিপ্রায়, লক্ষ্য ও ইশতেহার লিপিবদ্ধ থাকার কথা জানা গেছে।
ইতোমধ্যে জুলাই
বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের খসড়ার একটি কপি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে ১৯৭২ সালের
রচিত সংবিধানের বাতিল চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে
নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চেয়ে ’৭২ এর বন্দোবস্ত ও
১/১১ এর বন্দোবস্ত বাতিল চাওয়া হয়েছে খসড়া ঘোষণাপত্রে।
এছাড়া ফ্যাসিস্ট
হাসিনা সরকারের সময় গুম, খুন ও গণহত্যার সুবিচার ও এসব অপকর্মে জড়িত কর্মকর্তা কর্মচারীদের
রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখার কথা বলা হয়েছে।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী
ছাত্র আন্দোলনের ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ খসড়া প্রকাশিত হলেও তা নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতে
ইসলামী এখনই পরিষ্কার কোনো মন্তব্য করতে চাইছে না।
বিষয়টি নিয়ে
সোমবার রাতে বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্ষদ জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় আলোচনা হবে বলে
জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার আগে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে
চান না তিনি।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা
হলে তিনি যুগান্তরকে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ হয়েছে গণতন্ত্রের জন্য, এরশাদের
বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে গণতন্ত্রের জন্য, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিগত ১৫ থেকে
১৬ বছর মানুষ জীবন দিয়েছে, গুম হয়েছে, খুন হয়েছে গণতন্ত্রের জন্য, মানুষ তার মানবাধিকার
ও নাগরিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য। সুতরাং সাংবিধান হোক, আর যেটাই হোক, সিদ্ধান্ত হবে
জনগণের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার ও সংসদের মাধ্যমে। এর বাইরে কোনো গোষ্ঠী, দল বা কোনো
গ্রুপের কিছু করার সুযোগ নেই।
অবশ্য বৈষম্যবিরোধী
ছাত্রদের এ উদ্যোগকে স্বাধীন মতপ্রকাশের জায়গা থেকে ‘স্বাগত’ জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
আগামীকাল ‘ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের পর বিস্তারিত জেনে দলীয়ভাবে অবস্থান পরিষ্কার করার কথা
জানিয়েছেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
তবে জামায়াতের
কেন্দ্রীয় নেতা ও প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘ছাত্র নেতৃত্ব
তাদের বক্তব্য তুলে ধরার কথা বলেছে। যে কেউ তাদের বক্তব্য দিতে পারে। যেমন জামায়াতে
ইসলামী ১০ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে, বিএনপি ৩১ দফা দিয়েছে। সেই জায়গা থেকে আমরা
তাদের উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছি।’
‘জুলাই বিপ্লবের
ঘোষণাপত্র’ দেওয়া হবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে। আর এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে
তাদের সহযোগিতা করছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগের
নির্বাচনি জোটে থাকা দলগুলো বাদে বাকি সব দলের নেতাদের শহিদ মিনারের এই কর্মসূচিতে
আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
তবে মঞ্চে রাজনৈতিক
কোনো দলের নেতারা থাকবেন না। মঞ্চে থাকবেন জুলাই অভ্যুত্থানের শহিদ পরিবারের সদস্য
ও আহত ব্যক্তিরা। তাদের সঙ্গে থাকবেন গত ৩ আগস্ট ঘোষিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
১৫৮ সদস্যের সমন্বয়ক টিমের সদস্যরা। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক উপদেষ্টাও অনুষ্ঠানে
থাকতে পারেন।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী
ছাত্র আন্দোলন রোববার সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে, তারা আগামীকাল বিকালে ঢাকার কেন্দ্রীয়
শহিদ মিনারে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ দেবে।