বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ধর্মের ভিত্তিতে কাউকে দেশে বিভাজন তৈরি করতে দেওয়া হবে না। ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু শব্দ দুটি উৎপাদন করেছিল। তারা হিন্দুদের সংখ্যালঘু উপাধি দিয়ে তাদের সম্পদ লুটপাট করেছে। 

সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় সদর উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে পাগলা পীর বাজারে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াত আমির বলেন, আমরা হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান- সবাই এক সঙ্গে বসবাস করি। আমাদের যদি এখানে শান্তিতে বসবাস করার অধিকার থাকে তাহলে সব ধর্মের মানুষের সে অধিকার আছে। 

এ সময় কোনো পত্রিকার নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, আবুল বারাকাত নামের একজন বুদ্ধিজীবী পত্রিকায় লিখেছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দখলে এদেশের অন্যান্য ধর্মের মানুষের ৩৪ হাজার একর অবৈধ জমি রয়েছে। সরকার এই পাগলের বক্তব্যের সূত্র ধরে সারা দেশে খোঁজখবর করে এর কোনো সত্যতা পায়নি। 

ডা. শফিকুর রহমান এ সময় জোর দিয়ে বলেন, আমরা চাঁদাবাজি করি না, করতে দেব না। আমরা দখলদারিত্ব করি না, করতে দেব না। আমরা ঘুষ খাই না, খাইতে দেব না। 

জামায়াতে ইসলামীর আমির আরও বলেন, রংপুরের মানুষ তো খুব ভালো মানুষ। তাদেরকে কাজ করতে হবে। ইসলামি আন্দোলনকে আরও গতিশীল করতে হবে। এই রংপুরের সন্তান আবু সাঈদ নিজে শাহাদাত বরণ করে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে আগুন জ্বালিয়েছিল। সে বলেছিল, ‘বুকের ভেতর তুমুল ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’। 

বিডিআর হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পর তারা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ওপর আঘাত দিতে শুরু করে। কারণ তারা জানতো, জামায়াত দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব কারও কাছে বিলিয়ে দিতে রাজি হয়নি। বিক্রি করতে রাজি হয়নি এবং কোনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেনি। তারা ক্ষমতায় যাবার জন্য বিডিআর হত্যাকাণ্ডের মতো জঘন্যতম ঘটনা ঘটিয়েছিল।

শীর্ষ নেতাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ তিলে তিলে গড়ে ওঠা জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিচারিক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দুনিয়া থেকে বিদায় করেছে। বর্তমানে রাজপথের স্লোগান হলো ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। জামায়াতের স্লোগানও ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস। 

তিনি বলেন, রংপুরের সন্তান জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম এখনো কারাগারে। আমরা তার মুক্তির দাবি জানাই। 

সবাইকে অনুরোধ জানিয়ে জামায়াত নেতা বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো বিক্রির পর হজম করে ফেলেছে ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ। এরা এখন দেশটাকে অস্থির করার চেষ্টা করছে। ভিন্ন নামে ভিন্ন ভাবে তাদের এই কর্মকাণ্ড চলছে। সবাই সজাগ থাকবেন। দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। 

সদর উপজেলা জামায়াতের সভাপতি মোজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন, জামায়াতে ইসলামীর শুরা সদস্য মাহবুবুর রহমান বেলালসহ স্থানীয় নেতারা। 

ডা. শফিকুর রহমান মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় দলের জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন।