বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, অনেকেই প্রশ্ন করেন, আওয়ামী লীগকে কি নিষিদ্ধ করা দরকার?
শনিবার সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মানিকগঞ্জ জেলা শাখা কর্তৃক আয়োজিত স্থানীয় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে (বিজয় মেলা মাঠ) কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেছেন, সাংবাদিকসহ অনেকেই প্রশ্ন করেন, আওয়ামী লীগকে কি নিষিদ্ধ করা দরকার? আমি বলি, এটা এ দেশের জনগণের ব্যাপার। যারা দেশের মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে, লাশ পুড়িয়েছে, দেশের ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লুট করে পাচার করেছে, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে যারা হেফাজত করতে পারেনি, যারা ২০০৬ সালের ২৮শে অক্টোরব লাশের উপর নৃত্য করেছে, যারা বিডিআর হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে, যারা ২০২৪ সালের আগস্ট বিপ্লবের সময় প্রায় ২০০০ ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে, যারা গণতন্ত্রের কথা বলে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে তাদের কী জনগণ চায়? তারা কী এ দেশে রাজনীতি করার যোগ্যতা রাখে? জনগণ এই হত্যাকারীদের বিচার চায়। এ বাংলাদেশের মাটিতেই তাদের বিচার হতে হবে।
তিনি বলেন, স্বৈরাচারী হাসিনা পালিয়ে যেখানে যাবার কথা ঠিক সেখানেই গিয়েছে। তবে তিনি থেমে নেই। একের পর এক যড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে। জুডিশিয়াল ক্যু, আনসার কাণ্ড, গার্মেন্ট সেক্টরে অশান্তি, বিদ্যুৎ সেক্টরে যড়যন্ত্র, পুলিশ-জনপ্রশাসন সহ সর্বত্র যড়ষন্ত্রে চেষ্টা করে যাচ্ছে। দেশ প্রেমিক ছাত্র-জনতা, সেনাবাহিনী কোন যড়ষন্ত্রকেই সফল হতে দেয়নি।
তিনি আরও বলেন, দেশবাসী সজাগ আছে, আগামীতেও কোন যড়ষন্ত্রই সফল হতে দিবে না ইনশাল্লাহ্। বিগত জালেম সরকার জামায়াত-শিবির, বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের উপর অমানুষিক জুলুম নির্যাতন করেছে, হত্যা-গুম করেছে। এ সময় ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের জন্য যারা আন্দোলন করেছে তাদের এক সাথে থাকতে হবে। সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করলে আওয়ামী লীগের কবর রচনা হবে, ইনশাআল্লাহ।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বিগত ১৫ বছরে বিসিএস পরীক্ষা সহ সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতি করে আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের বিভিন্ন সেক্টরে চাকরি দেওয়া হয়েছে। আমরা সচিবালয়ে গেলে এখনও আওয়ামী দুর্গন্ধ পাই। দেশের প্রায় সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানেই ফ্যাসিবাদের দোসররা বসে আছে। এদের রেখে যদি কোন নির্বাচন দেওয়া হয় তা তো আগের মতই কারচুপির নির্বাচন হবে এবং মনে রাখতে হবে আবার ফ্যাসিবাদ ও তাদের মাস্টার মাইন্ড ফিরে আসার সুযোগ পাবে। তাই সকল ক্ষেত্রেই সংস্কার করে যত দ্রুত সম্ভব একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সংস্কার না করে যেমন নির্বাচন দেওয়া যাবে না, আবার খুব বেশি বিলম্ব করাও যাবে না। কারণ বিলম্ব করলে ফ্যাসিস্টরা ফিরে আসার পাঁয়তারা করবে। সম্ভব হলে আগামী ডিসেম্বরের পরেই নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। তবে বেশি তাড়াহুড়ো করে কোন মতে একটি নির্বাচন দিলে দেশের সকল অর্জন নষ্ট হয়ে যাবে। অবশ্যই সংস্কার করে যথাসম্ভব দ্রুত সময়ের মধ্যেই নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।