মাওলানা সাদকে নিয়ে যে হুঁশিয়ারি দিলেন হেফাজত আমির
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৭ পিএম
ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভির বাংলাদেশে আসার বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। তিনি বলেছেন, তওবা না করলে মাওলানা সাদ কান্ধলভিকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘দাওয়াত ও তাবলিগ, মাদারেসে কওমিয়া এবং দ্বীনের হেফাজতের লক্ষ্য’ শীর্ষক সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে হেফাজত আমির এ হুঁশিয়ারি দেন।
আমিরের বক্তব্য পাঠ করেন মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
হেফাজত আমির বলেন, ‘সরকারের প্রতি আমার দাবি হলো- যতদিন মাওলানা সাদ তার গোমরহী বক্তব্য থেকে তাওবা না করবেন, ততদিন তাকে বাংলাদেশে আসতে দেওয়া যাবে না। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা আলেমদের তত্ত্বাবধানে শুরায়ে নেজাম দ্বারা পরিচালিত হবে। কাকরাইল মারকাজের কার্যক্রম ওলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে চালু রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ওলামায়ে কেরামের দাওয়াতের মাধ্যমেই আজ পুরো বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে কুরআন ও সুন্নাহর সহীহ বাণী পৌঁছেছে। আলোকিত হয়েছে সারা বিশ্ব। দাওয়াতের উদ্দেশ্য হচ্ছে খালেকের সঙ্গে মাখলুকের তায়াল্লুক সৃষ্টি করে দেওয়া। আত্মভোলা মানবজাতিকে সঠিক পথের দিশা দেওয়া। এই দায়িত্ব আমার আপনার এবং উম্মতে মোহাম্মদী সবার। এই দায়িত্ব পালনের জন্যই মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) তাবলিগের কাজ শুরু করেছেন।’
হেফাজত আমির বলেন, ‘দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের বর্তমান মুরুব্বি মাওলানা সাদ বিভিন্ন সময় কুরআন, হাদিস, ইসলাম, নবী-রাসুল, নবুয়ত, সাহাবায়ে কেরাম এবং শরয়ী মাসআলা-মাসায়েল নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। তার বক্তব্যগুলো কুরআন-সুন্নাহবিরোধী, যা মেনে নেওয়া যায় না।’
তিনি বলেন, দ্বীনের বিভিন্ন বিষয়ে তার চিন্তাগত বিচ্যুতি ও বিচ্ছিন্নতা এবং অনেক বিষয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ও জুমহুরের মুত্তাফাকা তথা ঐকমত্য সমর্থিত মাসআলা ও মাজহাবের খেলাফ করার কারণে শরিয়ত মতে তার এতা’য়াত (মাওলানা সাদের আনুগত্য করার) জায়েজ নেই।
হেফাজত আমির করেন, ‘মাওলানা সাদ এসব আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য দারুল উলুম দেওবন্দসহ বিশ্ব আলেমদের কাছে চরম বিতর্কিত হয়েছেন। আলেমরা দায়িত্ব নিয়ে তাকে সংশোধনের চেষ্টা করেছেন। তিনি আলেমদের পরামর্শ গ্রহণ করে নিজের বক্তব্য সংশোধন করতে রাজি হননি।’
মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, ‘দাওয়াতে তাবলিগ প্রতিষ্ঠা হয়েছে দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে। যারা মাওলানা সাদের বিরোধিতাকারী আলেমদের দেওবন্দি, হেফাজতি বলছে তারা গোমরাহিতে (বিভ্রান্তিতে) আছে। হজরতজি ইলিয়াছ (রহ.) বলে গেছেন- যদি তাবলিগ থেকে ইলম ও জিকির উঠে যায়, তাহলে দাওয়াতে তাবলিগের কাজে গোমরাহি ঢুকে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘অতএব ব্যক্তি মাওলানা সাদের কারণে ছাত্র-জনতা ও আলেম-ওলামাদের আত্মত্যাগে অর্জিত স্বাধীন নতুন এই বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি হোক এবং অন্তর্বর্তী সরকার বেকায়দায় পড়ুক আমরা চাই না। আমি আশা করি, সার্বিক বিবেচনায় সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।’