রুহুল কবির রিজভী
শেখ হাসিনার দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসালে নাশকতা তো হবেই
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২৭ পিএম
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, আপনারা যদি হাসিনার দোসরদের মেইন মেইন জায়গায় বসান তাহলে নাশকতা তো হবেই। ঘুরে ফিরে দেখছি দুটো শক্তিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বসাচ্ছেন। একটা স্বাধীনতা বিক্রি করার শক্তি আর একটা স্বাধীনতার বিরুদ্ধের শক্তি। তাদের বসানোর কারণেই যারা স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করে তারা ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না; যার কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়ছে।
তিনি বলেন, গড়িমসি না করে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। নির্বাচন হলে নির্বাচিত সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা থাকবে। একজন এমপিকে কিছু না কিছু ভালো কাজ করতে হয়। তবে শেখ হাসিনার এমপি নয়, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যাকে পছন্দ করে নির্বাচিত করবে সেই এমপি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা ১৬ বছর যুদ্ধ করেছি। আমাদের কথা হল যেই ক্ষমতা আসুক জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
শনিবার রাজধানীর জুরাইনে বিক্রমপুর প্লাজার সামনে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘ভয়ঙ্কর ডেঙ্গু’ হাসিনা বিদায় নিয়েছে, আরেক ডেঙ্গু হাজির হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, জুরাইন এলাকায় অনেক জলাবদ্ধতা রয়েছে। শেখ হাসিনার উদ্দেশ্য জনসেবা ছিল না, তার উদ্দেশ্য ছিল জনগণের টাকা মেরে বিদেশে পাচার করা। ম্যান পাওয়ার সিন্ডিকেট করে আওয়ামী সিন্ডিকেটবাজরা হাজার কোটি টাকা মেরে দিয়েছে। শেখ হাসিনা কিংবা তার পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বললে তাদের কারাগারে পাঠানো হতো।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রতি রাতে কারওয়ান বাজারে ৫০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি হয়, সেখানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে স্বাভাবিক। আপনারা কী করেন? এতদিনেও সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছেন না। জনগণতো বলবেই, শেখ হাসিনার সময়ে জিনিসপত্রের দাম বাড়তো এখনো বাড়ছে- তফাৎটা কী?
তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি কারাগার ছিল শেখ হাসিনার আয়নাঘর। তার বিরুদ্ধে যারা কথা বলেছে,গণতন্ত্রের পক্ষে যারা কথা বলেছে তাদেরকে সেই ঘরে বন্দী করে রাখা হতো। শুধু বিএনপি নেতা কর্মী নয়। এদেশের জনগণ যারা গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলেছে তাদের উপর জুলুম নির্যাতন চলেছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- সাবেক এমপি সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম ও সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. পারভেজ রেজা কাকন। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।
পরে বিকালে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ঢাকায় আহত সুমন, ইব্রাহিম, হৃদয় ও বৃষ্টিসহ বেশ কয়েকজন পথশিশুর সঙ্গে দেখা করে তাদের চিকিৎসার সার্বিক দায়িত্ব নেওয়ার বার্তা পৌঁছে দেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের ডা. জাহিদুল কবির, আরিফুর রহমান তুষার, ছাত্রদলের ডা. আউয়াল প্রমুখ।