ঢালিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতিতে জড়িয়েছেন অনেক আগে। শিক্ষাজীবনে ছাত্ররাজনীতিতে আওয়ামী লীগে জড়িত ছিলেন। পরে রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দলে যোগ দেন। ২০০৯ সালে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যপদ গ্রহণ করে যোগ দেন সোহেল রানা।
এবার নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে এসেছেন এ শক্তিমান অভিনেতা। তার দলের নাম রাখা হয়েছে— বাংলাদেশ ইনসাফ পার্টি, যা ইংরেজিতে Bangladesh Justice Party হিসেবে পরিচিতি পাবে। গত বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে অভিনেতা মাসুদ পারভেজ সোহেল রানার সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই সভাশেষে এ নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ঘোষণা করেন তিনি।
রাজনীতিবিদ সোহেল রানার নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের তিন দিনের মাথায় আবার দলের নাম পরিবর্তন করলেন তিনি। এর আগে প্রাথমিকভাবে দলটির নাম রাখা হয় ‘বাংলাদেশ ইনসাফ পার্টি’, যাদের লোগোতে শোভা পেয়েছে শান্তির প্রতীক পায়রা। কিন্তু অনিবার্য কারণবশত সংশোধন করে নতুন দলের নাম রাখা হয়েছে— ‘বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টি’।
এ উপলক্ষে গতকাল রোববার (৬ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে নায়ক মো. মাসুদ পারভেজ সোহেল রানার সভাপতিত্বে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সভায় সবার কাছ থেকে ২০টিরও অধিক নাম প্রস্তাব আকারে আসলে সর্বসম্মতিক্রমে ‘বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টি’ গৃহীত হয়।
সভায় দীর্ঘ সময় ধরে দলের নীতি-আদর্শ, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি বিশ্লেষণ করা হয়। প্রত্যেকে তাদের নিজ নিজ মতামত প্রকাশ করেন এবং সভাপতি সেগুলো সমন্বয় করে দেশ ও জনগণের জন্য কল্যাণকর বিষয়গুলো সন্নিবেশিত করে দলের গঠনতন্ত্র ও ইশতেহার প্রণীত হবে বলে জানান।
এ অনুষ্ঠানে নতুন দলের বিশেষ সমন্বয়কারী ইঞ্জিনিয়ার ইকরামুল খানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী এম নাজিমুদ্দিন আল আজাদ, সিনিয়র সাংবাদিক ও লেখক সৈয়দ তোশারফ আলী, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাবেক উপমহাপরিচালক ড. ফোরকান উদ্দিন আহমেদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী, নৌবাহিনীর কমোডর (অব.) সানাউল নোমান, দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র সাব এডিটর ও ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার রিটের পিটিশনার মোহাম্মদ আবদুল অদুদ, সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের উপদেষ্টা ও জাতীয় ছাত্রসমাজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রফিকুল হাফিজ, রাজনীতিক ও লে. কর্নেল (অব.) সাব্বির আহমেদ, তরুণ আইনজীবী ব্যারিস্টার সানাউল্লাহ নূর সাগর, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট অশোক কুমার ঘোষ, রাজনীতিক ডা. সালাহ উদ্দিন ভুইয়া, বিএলডিপির প্রেসিডিয়াম মেম্বার এম আমানুল্লাহ, মহিলা নেত্রী আনোয়ারা ইসলাম রানী, হাসিবুল ইসলাম জয়, রাজনীতিক গুলজার হোসেন, রাজনীতিক হিরু রহমান, সাবেক রাষ্ট্রপতির উপ-প্রেস সচিব আবদুর রহিম মনোয়ারা তাহের মানু ও কাজী শামসুল ইসলাম রঞ্জন সাজিউল ইসলাম রকি, সারোয়ার হোসেন প্রমুখ।
এদিকে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে বা আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে ৫১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে সভা শেষে জানানো হয়।
উল্লেখ্য, শিক্ষাজীবনে ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সোহেল রানা। ১৯৬৫ সালে বৃহত্তর ময়মনসিংহ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৬৬ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের এজিএস, ১৯৬৮ সালে পুরো পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি।
ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের নেতা থাকলেও ২০০৯ সালে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যপদ গ্রহণ করে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন তিনি। পরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের নির্বাচনবিষয়ক উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ পান। এরপর জাতীয় পার্টি ছেড়ে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করলেন সোহেল রানা।