‘হিংসা হানাহানি ছাত্র-জনতার সফল অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র’
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৪, ১১:৩৩ পিএম
এবি পার্টির সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সৌজন্য
হিংসা-হানাহানি, জ্বালাও পোড়াও ছাত্র-জনতার সফল অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, এটা যারা করছে তাদেরকে অবিলম্বে এসব বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টি।
আজ বুধবার পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ আহ্বান জানান এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম আহবায়ক প্রফেসর ডাঃ মেজর (অবঃ) আব্দুল ওহাব মিনার, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট গোলাম ফারুক, বিএম নাজমুল হক, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া, আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব এবিএম খালিদ হাসান ও আমিনুল ইসলাম এফসিএ ও মহানগর উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসাইন।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আমরা দীর্ঘ সময় ধরে একটি ফ্যাসিবাদি দখলদার সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আসছি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ২/৩ সপ্তাহ ধরে যে পরিমাণ নির্যাতন সরকার চালিয়েছে তা অবর্ণনীয়। এই আন্দোলন সফল করতে ছাত্র-ছাত্রীরা যে অকুতোভয় ভূমিকা রেখেছে, যেভাবে অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েছে, সাধারণ মানুষ যেভাবে আন্দোলনে শরিক হয়েছে, জীবন দিয়েছে তা অভাবনীয়।
তিনি এই আন্দোলনের ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ আবু সাঈদ, মুগ্ধ সহ সকল শহীদকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আমরা শেখ হাসিনাকে বলেছিলাম, সঠিক পথে চলেন, রাজনৈতিক দল গুলোকে নিঃশেষ করবেন না। তিনি শোনেননি, তিনি বলেছেন শেখ হাসিনা পালায়না, আজ তিনি ঠিকই আওয়ামীলীগের সকল নেতাকর্মীকে ফেলে পালিয়ে গেছেন। কেথায় পালালেন? আমরা বলেছিলাম ভারত তাকে ক্ষমতা রাখছে, আজ সেটাই প্রমাণ হলো, তিনি শেষ পর্যন্ত ভারতেই পালালেন।
তিনি বলেন, আমি গ্রেফতার হওয়ার পর বিএনপি মহাসচিব সহ অনেক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ খোঁজ খবর নিয়েছেন সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তিনি সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমাদের গর্বের সেনাবাহিনী শেষ পর্যন্ত দেশবাসীর পক্ষ নিয়েছেন, স্বৈরাচারের দোসর হননি।
মজিবুর রহমান মঞ্জু পুলিশ বাহিনীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, জনগণের প্রথম আস্থার জায়গা পুলিশ। যারা নানা অপকর্ম করে এই আস্থা ভঙ্গ করেছেন তারা আত্মসমর্পণ করেন, যারা সৎ কর্মকর্তা ছিলেন আপনারা এই পুলিশ বাহিনীকে পুনর্গঠন করুন যেন জনগণের আস্থা আবার পুলিশের প্রতি ফিরে আসে।
মঞ্জু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. ইউনুসের প্রতি পূর্ণ সংহতি জানিয়ে বলেন, এই সরকার গঠিত হলে এবি পার্টি আন্তরিকতার সাথে তাদের গঠনমূলক সকল কাজে সার্বিক সহায়তা করবে। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি বাংলাদেশের উন্নয়নে পাশে থাকার অনুরোধ জানান। তিনি ভারতের বিবেকবান জনগণকে এই ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ভারত আমাদের সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশী, কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য ভারতের সরকার আমাদের জনগণের সাথে সম্পর্ক না করে একটি ব্যক্তিকেন্দ্রীক সম্পর্কে জড়িয়েছে, এমনকি ভারত একজন খুনী শাসককে আশ্রয় দিয়েছে, এটা তাদের ভুল নীতি। আমরা আশা করবো ভারত বাংলাদেশের জনগণের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলবে।
তিনি বলেন, নতুন যে সরকার গঠিত হবে আমরা আশা করবো তারা দেশের সকল প্রতিষ্ঠান গুলোকে রিফর্ম করবে। যেন সরকারি প্রতিষ্ঠান গুলো জনগণের আস্থার জায়গায় পরিনত হয়।
তিনি দেশের জনগণ সহ সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা শান্ত থাকুন। আমরা আর একটিও মৃত্যু দেখতে চাইনা। বিজয় অর্জনের পর আমাদের তা রক্ষা করতে হবে। বিজয়কে ধ্বংস করে এমন কোন কাজ আপনারা করবেন না। তিনি আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের নেত্রী পালিয়েছে কিন্তু আমরা দেশে আছি। যারা অপরাধ করেননি তারা সমস্যা মনে করলে, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগলে আমাদেরকে জানান। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবি পার্টির যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, এবি পার্টির সহকারী সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ লোকমান, শাহ আব্দুর রহমান, এম আমজাদ খান, সিদ্দিকুর রহমান, যুবপার্টির আহবায়ক শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল হালিম খোকন, গাজী নাসির, যুগ্ম সদস্য সচিব সফিউল বাসার, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, যুবনেতা তোফাজ্জল হোসেন রমিজ, নারী নেত্রী সুমাইয়া শারমিন ফারহানা, আমেনা বেগম, রুনা হোসাইন, যুবনেত্রী শাহিনুর আক্তার শীলা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এনামুল হক, মশিউল আজম সাকিব, আব্দুল হালিম নান্নু, মশিউর রহমান মিলু, আব্দুর রব জামিল সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।