দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে: মির্জা ফখরুল
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ১০:৫৫ পিএম
বাংলাদেশের অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে। এজন্য সবাইকে আন্দোলন করতে হবে।
শুক্রবার বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পুনর্মিলনীতে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এদিন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতা, বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ এখন সবচেয়ে বড় একটা সংকটের মধ্যে। গণতন্ত্রের জন্য যিনি (খালেদা জিয়া) সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তিনি এখনো আটক অবস্থায় আছেন। জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। এজন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার একটা আন্দোলন জরুরি। এটাকে আমি আলাদা করে দেখতে চাই না। গণতন্ত্রের আন্দোলনের সঙ্গে এটা অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
তিনি বলেন, রাজনীতিতে খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তার রাজনীতিতে আসা হচ্ছে গণতন্ত্রের পক্ষে। সর্বশেষ তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে মেনে নিয়েছেন। আমাদের যে গণতান্ত্রিক চর্চা, সেটা অনেক বড় সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন। শনিবার আমাদের একটা কর্মসূচি আছে। তার মুক্তির জন্য আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। আমরা যারা একসঙ্গে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি, তাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে অত্যন্ত দ্রততার সঙ্গে এই ভয়রাবহ ফ্যাসিস্টকে সরিয়ে জনগণের একটা রাষ্ট্র নির্মাণ করব।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বড় রাজনৈতিক দলগুলো এক মঞ্চে উঠতে না পারলেও যুগপৎভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই সিদ্ধান্তকে আমি মনে করি, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এটা একটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। আমি বিশ্বাস করি জনগণের পক্ষে সত্যের পক্ষে ও ন্যায়ের পক্ষে এবং রাষ্ট্র ও সমাজকে রক্ষা করবার যে আন্দোলন, সেই আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হতে পারে না।
পুনর্মিলনীতে অংশ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা বলেন, বর্তমান সরকার দেশের প্রতিটি সেক্টরকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দুর্ণীতির বিস্তার ঘটিয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা ও সরকাররের আমলারা বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছে। রাগববোয়ালরা এখন বিদেশে সেকেন্ড হোম বানিয়েছে। সরকার দুর্নীতিবাজদের সহযোগিতা করছে।
বক্তারা বলেন, ক্ষমতাসীনরা বাংলাদেশকে ভারতের কাজে ইজারা দিয়েছে। বিনিময়ে অবৈধভাবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে যেসব অসম চুক্তি হয়েছে সেখানে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের মধ্যদিয়ে ভারতের ট্রেন চলাচল এ দেশের মানুষ মেনে নিবে না। জনগণ শিগগিরই এই অবৈধ সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্রকে উদ্ধার করবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, গণফোরাম একাংশের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাসদের বজলুর রশীদ ফিরোজ, খালেকুজ্জামান, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, সমমনা জোটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণঅধিকার পরিষদ একাংশের নূরুল হক নূর, রাশেদ খান, এবি পার্টির মুজিবুর রহমান মঞ্জু, এলডিপির ড. নেয়ামুল বসির, ১২ দলীয় জোটের সৈয়দ এহসানুল হুদা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ অধ্যাপক আশরাফ আলী আখন্দ, জাগপার রাশেদ প্রধান, কবি মোহন রায়হান, কবি হাসান ফখরি, লেখক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বাবলা, জেএসডির কামালউদ্দিন পাটোয়ারী প্রমুখ।