খালেদা জিয়ার বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা
‘সহানুভূতি ছাড়া গণতন্ত্র হয় না'
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৪, ১০:৩২ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
সহানুভূতি ছাড়া গণতন্ত্র হয় না বলে মন্তব্য করেছেন দেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
তারা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অবদান রয়েছে। এরপরও তার ওপর সরকার চরম নিষ্ঠুরতা চালাচ্ছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যুক্ত নেতাদের সঙ্গেও এত নিষ্ঠুর আচরণ করেনি ব্রিটিশরা। রাজনৈতিক কারণে খালেদা জিয়ার ভিত্তিহীন মামলায় সাজা হলেও তার জনপ্রিয়তা, বয়স, সামাজিক মর্যাদা, নারী, সর্বশেষ শারীরিক অবস্থাসহ সব দিক বিবেচনায় তার মুক্তি পাওয়ার কথা। কিন্তু সরকার তাকে সেই সুযোগ দিচ্ছে না।
রোববার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর লেখা ইংরেজি গ্রন্থ ‘বেগম খালেদা জিয়া : হার লাইভ, হার স্টোরি’-এর বাংলা সংস্করণ ‘খালেদা জিয়া : জীবন ও সংগ্রাম’ শীর্ষক গ্রন্থের প্রকাশনা উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় তারা এ কথা বলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দিয়ে সরকার খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই সরকার যদি বারবার ক্ষমতায় থাকে তাহলে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান এবং বিএনপির অস্তিত্ব টিকে থাকতে দেবে না।
আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমি আন্দোলনের মানুষ। বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে। খালেদা জিয়ার রাজনীতির প্রথম দিন থেকেই আছি। অনেক যুগান্তকারী কাজ করেছেন খালেদা জিয়া। আমাদের অনেক কিছু করার এখনো বাকি আছে। একটা বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যে আমরা আছি। তার মধ্যেও যা কিছু করা সম্ভব সবকিছু করার চেষ্টা আমরা করব।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান বলেন, গত ৭ জানুয়ারির পর দেশের অনেকেই বলছে, এই সরকার আগামী পাঁচ বছরই থাকবে। আবার অনেকে বলেন, যতদিন শেখ হাসিনা জীবিত আছেন, কেউ নড়াতে পারবেন না। কিন্তু এখন উনি নিজেই নিজেই নড়ছেন। পুলিশের সাবেক আইজি, সাবেক সেনাপ্রধান এবং একজন সংসদ সদস্য এই তিন ঘটনায় সরকার খুব বিব্রত গণমাধ্যমে এসেছে। এর দায় কার?
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা জামান বলেন, খালেদা জিয়া একজন জনপ্রিয় নেত্রী। আজকে তার ওপর জেল-জুলুম-নির্যাতন। উনি চিকিৎসা করার সুযোগ পাচ্ছেন না। অথচ চোখ দেখাতে আমাদের রাষ্ট্রপতি চলে যাচ্ছেন সিঙ্গাপুরে। যখন-তখন ফ্যামিলিসহ আরও অনেক নেতা চলে যাচ্ছেন সিঙ্গাপুর, লন্ডন, জার্মানিতে। অথচ খালেদা জিয়াকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহর সভাপতিত্বে ও কবি আবদুল হাই শিকদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান, গ্রন্থের অনুবাদক শাহরিয়ার সুলতান, ‘ইতি প্রকাশনা’র প্রকাশক জহির দীপ্তি এবং গ্রন্থের লেখক প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজ উলাহর সহধর্মিণী দিনারজাদি বেগম।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপি নেতা আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, মনিরুল হক চৌধুরী, আবদুস সালাম, আফরোজা খানম রীতা, এসএম আবদুল হালিম, হাবিবুর রহমান হাবিব, অধ্যাপক শাহিদা রফিক, অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলাম, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, বিজন কান্তি সরকার, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, জহির উদ্দিন স্বপন, শ্যামা ওবায়েদ, অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতে ইসলামীর মজিবুর রহমান, এনপিপির অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, সাম্যবাদী দল (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) হারুন চৌধুরী, গণঅধিকার পরিষদের (একাংশের) নুরুল হক নুর প্রমুখ।