‘শেখ হাসিনার সরকার খুব চালাক-চতুর’, কেন বললেন মান্না
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:৪৮ পিএম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে চালাক ও চতুর বলে মন্তব্য করেছেন মান্না নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে কর্মসূচিটি পালন করে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’।
মান্না বলেন, ভারত আর চীনের মধ্যে প্রতিযোগিতা। তিস্তা যে কখন কাকে দিয়ে দেয় এই ভয়ে চীনের দিকে তাকিয়ে থাকে ভারত। ভারতের দিকে তাকিয়ে থাকে চীন। আর শেখ হাসিনার সরকার খুব চালাক-চতুর তো, দুই দিকে খেলার চেষ্টা করে। আমরা বলছি, খেলতে খেলতে এই খেলা শেষ হয়ে যাবে।
বর্তমান সরকারের কোনো দেশে কোনো ‘বন্ধু নেই’ দাবি করে তিনি বলেন, ‘বাইডেন সাহেব উনাকে (শেখ হাসিনা) চিঠি লিখেছেন। অত গুলগুলা ভাব হওয়ার দরকার নাই। ও (বাইডেন) বলেছে, তোমাকে এশিয়া প্যাসিফিকের সঙ্গে যুক্ত করে আমরা সম্পর্ক রাখতে চাই। তার মানে ‘আমার কথামত চলতে হবে এবং আমার টাকা (যেসব প্রকল্পে বিনিয়োগ অর্থ) দিয়ে দিতে হবে। কিন্তু পিটার হাস (ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত) বলেছেন, তারা বলছেন, ভোট কিন্তু ভালো হয় নাই। আর এই যে এত বেশি গপ্প করেন… ভারত-রাশিয়া-চীন আমাদের পক্ষে আছে। কী রকম পক্ষে আছে বলেন তো?’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি আরও বলেন, ‘বিদেশিরা ঋণের অর্থ শোধ করার তাগাদা দিচ্ছে। বাংলাদেশ বিদেশ থেকে ঋণ করেছে ১০০ বিলিয়ন ডলার। শোধ দেওয়ার সময় হয়ে গেছে। এখন সবাই টাকা চাচ্ছে। আমেরিকার-ইউরোপ তো চাপ দেয় নাই। কিন্তু চীন-রাশিয়া বলেছে, ‘তোমার সঙ্গে দোস্তি বন্ধুত্ব যাই থাকুক, টাকা দাও। সংবাদপত্রে এসেছে, ওরা টাকা চায়।’
তিনি বলেন, ‘এই সংসদ কাজ করতে পারবে না। হতাশা ওদের মধ্যে, আমাদের নয়। মানুষ আমাদেরকে বলছে, ‘আমরা ভোট দিতে যাইনি’। নিরীহ জনগণ আমাদের সর্বাত্মক সমর্থন জানিয়েছে।
‘আমরা এখন মানুষকে বলছি, সাহস করে রাজপথে মিছিলে আসুন। দেখবেন এই ঢাকা নগর মিছিলে মিছিলে সয়লাব হয়ে যাবে। তখন আওয়ামী লীগের লোকদের খুঁজে পাবেন না। খুব বেশি দিন নাই। আমরা সেই লড়াই চালাচ্ছি।’
৭ জানুয়ারি সরকার পক্ষের অবস্থার পরিবর্তন হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, ‘বরঞ্চ অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। আমি আপনাদের বলি, হতাশ হওয়ার মত কিছু নাই। হতাশ ওরা হবে। কারণ, এ ভোট দুনিয়ার কেউ স্বীকার করেনি। পুলিশ বুঝেছে, ব্যুরোক্রেসি বুঝেছে, পার্টি বুঝেছে এই ভোট ভোট নয়। এই ভোট কবার পরে জোট ভেঙেছে, এই ভোট করবার পরে নিজের দলের মধ্যে আম-জাম-ডাব গাছ সব এক… যেটা নৌকা, সেটাই ঈগল, সেটাই আবার ট্রাক…. দল আছে আর?’
মানববন্ধনে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘নৌকা এখন মার্কেট পাচ্ছে না। এটা এতটা ঘৃণিত প্রতীকে পরিণত হয়েছে যে, নৌকা থাকলে মানুষ এখন ভোট কেন্দ্রে যাবে না।’
দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় দাবি করে অবিলম্বে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার বিল পাস করে নতুন নির্বাচন দেওয়ার দাবি করেন তিনি।
নুর বলেন, ‘সরকারকে বলতে চাই, এই ৫ শতাংশ জনসমর্থন নিয়ে ৯৫ শতাংশ গণতন্ত্রকামী জনতার নেতৃবৃন্দকে আপনারা কারাগারে আটকিয়ে রাখতে পারবেন না। আপনারা যদি কারাগারে আটকে রাখেন, আপনারাও করুণ পরিণতি নিয়ে আসবেন।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণধর্ষণের ঘটনা তুলে ধরে গণঅধিকার পরিষদের একাংশের নেতা বলেন, ‘এই সাহস হয় কীভাবে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা যা ইচ্ছা তাই করবে। কিন্তু তারা করছে তো। তাদের বাধা দেওয়ার কেউ নেই। এটা শুধু জাহাঙ্গীরনগর নয়, এরকম ঘটনা বাংলাদেশে অহরহ ঘটছে বাংলাদেশে।’
মানববন্ধনে বিএনপির আবদুস সালাম আজাদ, কাজী রওনুকুল ইসলাম টিপু, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) নেতা আহসান হাবিব লিংকন, লেবার পার্টির একাংশের ফারুক রহমান, এনডিপির আবু তাহের, জাগপার একাংশের রাশেদ প্রধান ও বক্তব্য রাখেন।