ঢাকা-১ আসনে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে যত অভিযোগ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৪:০১ পিএম
ঢাকা-১ আসনে লাঙলের প্রার্থী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন চলছে গণনা। রোববার ভোট শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্রে নানা অনিয়মের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঢাকা-১ আসনে গতরাত থেকেই নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছেন আসনটির লাঙল প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম।
তিনি অভিযোগ করেছেন, গতকাল রাত থেকেই তার সমর্থকদের নানা রকম হুমকি আর ভয়ভীতি দেখাচ্ছে নৌকার সমর্থকরা। অনেকের বাড়িঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে বলেও অভিযোগ তার।
নারিশা কেন্দ্রে জাল ভোট
দোহারের নারিশা উচ্চ বিদ্যালয় ও নারিশা পশ্চিম চর প্রাথমিক বিদ্যালয়- এ দুটি কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে দুইজন। যারা ভোটার হিসেবে কোনো তথ্যপ্রমাণই দেখাতে পারেননি। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় তাদেরকে। পরে গণমাধ্যমের ক্যামেরা দেখার পর সরে যান। এছাড়া নৌকা প্রতীকের পক্ষ থেকে ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হয়েছে প্রিজাইডিং অফিসারকেও।
মুকসুদপুর ও বারুয়াখালীতে এজেন্ট ঢুকতে বাধা
এদিনে সকাল থেকেই আসনটির বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক ভয়ভীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মুকসুদপুর ও বারুয়াখালী বিদ্যালয় কেন্দ্রে লাঙ্গলের এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। নারিশা মালিকান্দা স্কুল ও কলেজে লাঙ্গলের নারী পোলিং এজেন্টরা তাদের কার্ড পাননি। রাইপাড়া ৮ নম্বর কেন্দ্রের টিম লিডারকে ভয় দেখানোর অভিযোগও রয়েছে। মরিচপট্টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুরোপুরি দখলে ছিল চুড়াইনের চেয়ারম্যান জলিলের ছেলে নাজমুলের। এসব খবর প্রচার করায় সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদেরও হুমকি দেওয়া হয়।
কেন্দ্রে শিশুদের লাইন
দোহারের মুকসুদপুরের শাইনপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে শিশুদের দিয়ে ভোট দেওয়ার অভিযোগ ও প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে অসহায় ছিলেন নির্বাচনি কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এ নিয়ে তার কিছু করার ছিল না।
তার দাবি, ঢাকা-১ আসনের বিভিন্ন কেন্দ্রে ভয়ভীতির কারণে ভোটার উপস্থিতি একেবারেই কম।
বারহা এবতেদায়ী মাদ্রাসা কেন্দ্রে সকালেই নৌকার এজেন্টরা ভোটকেন্দ্র দখলে নেয়। লাঙ্গলের এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগও ছিল এখানে। এছাড়া নবাবগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে নৌকার এজেন্টের বিরুদ্ধে নির্বাচনি বিধি ভাঙার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়া সকাল থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্রের সামনে জটলা পাকিয়ে পুরো এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় নৌকা প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। কিছু কিছু এলাকায় প্রশাসনও তাদের সহায়তা করে। কেন্দ্রের শৃঙ্খলা সাংবাদিক আসার আগে ভালো ছিল বলেও দাবি করেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
লাঙ্গলের দুই সমর্থককে মারধর করেছে নৌকার সমর্থকরা
শনিবার রাতে দোহারের মুকসুদপুরের ফুলতলা এলাকায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের দুই সমর্থককে বেধড়ক মারধর করে নৌকার সমর্থকরা। পরে মিথ্যা অভিযোগে তাদেরকে পুলিশে দেওয়া হয়।
জানা যায়, ভোটকেন্দ্রে যারা দায়িত্ব পালন করবেন সেই পোলিং এজেন্টদের থাকা ও খাওয়া খরচ নিয়ে লাঙ্গলের ওই দুই কর্মী বাংলাবাজার থেকে ফুলতলায় যাচ্ছিলেন। এ সময় ওই দুইজনকে বেদম মারধর করে তাদের মোবাইল ফোন আর সাথে থাকা খরচের টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এরপর বেশ কিছুক্ষণ তাদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে মুকসুদপুরের এক ফাঁড়িতে তাদের বিরুদ্ধে ভোট কেনার টাকা বিতরণের অভিযোগ করে ছাত্রলীগ নেতা সোহাগ ও তার সমর্থকরা।
যদিও পরে তাদের টাকা বিলানোর অভিযোগের কোনো প্রমাণ পায়নি ভ্রাম্যমাণ আদালত।
দোহার-নবাবগঞ্জ দুই থানা মিলে ঢাকা-১ আসন। যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দুই হেভিওয়েট জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম ও নৌকার প্রার্থী সালমান এফ রহমান। আসনটিতে ১৮৪টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়েছে।