হলফনামা বিশ্লেষণ: ফেরদৌস ও স্ত্রীর যত সম্পদ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৩৬ পিএম
স্ত্রীর সঙ্গে ফেরদৌস
চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদের সব ফার্নিচার ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রীও উপহারের। উপহার হিসেবে তিনি একটি রোলেক্স ঘড়িও পেয়েছেন। তার স্ত্রী তানিয়াও পেয়েছেন একটি রোলেক্স ঘড়ি। উপহার হিসেবে দুজনে পেয়েছেন ৬০ ভরি স্বর্ণও। ফেরদৌসের স্ত্রীর ১৫ লাখ টাকার ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ও ২৫ লাখ টাকার ফার্নিচার রয়েছে।
রিটার্নিং অফিসারের দপ্তরের মনোনয়নপত্র দাখিল করার সময় দেওয়া হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
ঢাকা-১০ আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন বাংলাদেশের এই জনপ্রিয় অভিনেতা।
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদের বছরে আয় অর্ধ কোটি টাকা। তবে পেশায় পাইলট তার স্ত্রী তানিয়া বছরে আয় করেন এক কোটি ৬৮ লাখের মতো।
হলফনামা বিশ্লেষণ করে আরও দেখা যায়, ফেরদৌসের বার্ষিক আয় ৫০ লাখ ৪৬ হাজার ৪৯৭ টাকা। এর মধ্যে ব্যবসা থেকে আয় ৪৭ লাখ ৯৯ হাজার ৫৮ টাকা। শেয়ার বা ব্যাংক আমানত থেকে আয় ২ লাখ ৪৭ হাজার ৪৩৯ টাকা।
ফেরদৌসের স্ত্রী তানিয়ার আয়ের হিসাবে দেখা যায়, বছরে চাকরি করে তিনি পেয়েছেন ১ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৬৬১ টাকা। শেয়ার বা ব্যাংক আমানত থেকে পান ১০ লাখ ৮৮ হাজার ৫০২ টাকা। এর বাইরে তিনি এ বছরে একটি ফ্ল্যাট বিক্রি থেকে ৩৬ লাখ ২৬ হাজার টাকা পেয়েছেন। অর্থাৎ তানিয়া ফেরদৌসের মোট বার্ষিক আয় ২ কোটি ৪ লাখ ১৬ হাজার ১৬৩ টাকা।
হলফনামায় নায়ক ফেরদৌস তার স্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন ২ কোটি ১৩ লাখ ৯৮ হাজার ২৬১ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ৩১ লাখ ২৮ হাজার ৬৫৮ টাকা, ব্যাংকে জমা আছে ৩১ লাখ ৫৬ হাজার ৯৯৭ টাকা, বন্ড, ঋণপত্র ও শেয়ারে বিনিয়োগ ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকা, ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ৫ লাখ ১৩ হাজার ৭৫৬ টাকার স্থায়ী আমানত, ৫৪ লাখ ১৮ হাজার ৫৪০ টাকার লাইফ ইন্সুরেন্স, ২০ লাখ টাকার ব্যক্তিগত গাড়ি, ১টি রোলেক্স ঘড়ি, ২০ ভরি স্বর্ণ ও ১০ লাখ ৫৫ হাজার ৩১০ টাকার ব্যবসায়ের পুঁজি।
ঢাকা-১০ আসনে নৌকার প্রার্থী ফেরদৌস আহমেদের অকৃষি জমির মধ্যে রয়েছে সাভারের আশুলিয়ায় ৭ কাঠা জমি, অর্জনকালীন তার আর্থিক মূল্য ছিল ১ লাখ ৬১ হাজার টাকা, আশুলিয়ায় আরও ৭ কাঠা জমি অর্জনকালীন এর আর্থিক মূল্য ১ লাখ ৫৪ হাজার টাকা, মিরপুরের বাউনিয়ায় ১৬ দশমিক ৫০ শতাংশ জমির অর্জনকালীন মূল্য ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা, ধামালকোটে মায়ের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ২২৫ অযুতাংশ জমি ও দুটি ফ্ল্যাট ও কার পার্কিং।
এছাড়া পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় শূন্য দশমিক ৩৩ একর জমি (অর্জনকালীন আর্থিক মূল্য ৮ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা, একই এলাকায় শূন্য দশমিক ২৬ একরের আরও একটি জমি (অর্জনকালীন আর্থিক মূল্য ৮ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা) এবং পূর্বাচলে ৫ কাঠার জমি, যেটির অর্জনকালীন মূল্য ১০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা দেখিয়েছেন ফেরদৌস।
ফেরদৌসের স্ত্রীর নগদ অর্থ রয়েছে ৪২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৩৬ টাকা, ব্যাংকে জমা আছে ৬৬ লাখ ৭১ হাজার ৭৮১ টাকা, বন্ড, ঋণপত্র ও শেয়ার ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা, ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ৪ লাখ ৪২ হাজার ৮৬৪ টাকার প্রভিডেন্ট ফান্ড, ১৫ হাজার টাকার গ্রুপ ইন্সুরেন্স, ১৭ লাখ ৯৪ হাজার টাকার লাইফ ইন্সুরেন্স।
রয়েছে ১ কোটি ৮৫ লাখ ১৩ হাজার টাকার গাড়ি, ৪০ ভরি স্বর্ণ, উপহার হিসেবে পাওয়া একটি রোলেক্স ঘড়ি, ১৫ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও ২৫ লাখ টাকার আসবাব।
অর্থাৎ ৪০ ভরি স্বর্ণ ও ঘড়ি ছাড়াও তানিয়ার ৪ কোটি ৮ লাখ ২০ হাজার ৮১ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে গাজীপুরের কালিগঞ্জে ৯৩ শতাংশ জমি যেটির অর্ধেক মালিক তিনি (মূল্য ৫৬ লাখ টাকা), মায়ের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া যশোরের কোতোয়ালির ১৬ দশমিক ৫২ শতাংশ জমি (যেটি অর্ধেক মালিক তিনি), ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ জমি (২৫ শতাংশ মালিক), পটুয়াখালীর কলাপাড়ার শূন্য দশমিক ১৫ একর জমি (মূল্য ১ লাখ ২৩ হাজার ২০০ টাকা) ও যশোরের কোতোয়ালির ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ জমি (২০ শতাংশ মালিক) ও ৩ তলা বাড়ি।
এ ছাড়া তানিয়ার রাজউকে ৬৭ লাখ ৮৪ হাজার ১৪২ টাকার ও বনানীর ডিওএইচএসে ২ কোটি ৯০ লাখ টাকার অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে।