Logo
Logo
×

রাজনীতি

নির্বাচনকে হাসি-তামাশা বাণিজ্য ও প্রহসনে পরিণত করেছে: রিজভী

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ০৭:৫৮ পিএম

নির্বাচনকে হাসি-তামাশা বাণিজ্য ও প্রহসনে পরিণত করেছে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, নির্বাচনকে এখন হাসি-তামাশা, বাণিজ্য ও প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। জনগণের কাছ থেকে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর জনপ্রতিনিধিত্ব এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দান-দক্ষিণা, খয়রাত, বিলি-বন্টন, ভাগ-বাটোয়ারা, উপহার করুণায় পরিণত হয়েছে। ২০১৪ সালে বিনা ভোটে অটোপাস এবং ২০১৮ সালে নিশিরাতের ভোট ডাকাতির পর এবার ভাঁওতাবাজির নামে সিলেকশন করা হচ্ছে। জনগণের চোখে ধুলো দিয়ে ৭ জানুয়ারি ভোটের নামে রাস্ট্রের শত শত কোটি টাকার শ্রাদ্ধ করা হবে। ইলেকশনের দিন রাতে পাঠ করা হবে গণভবনের তালিকা।
 
শনিবার বিকালে ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

রিজভী বলেন, টার্গেট করে বিভিন্ন সংস্থা দিয়ে অর্থ এবং এমপি বানানোর প্রলোভনে কিংস পার্টি ভুঁইফোড় পার্টিতে রাজনৈতিক নেতাদের ঢোকানো হচ্ছে। কোনো নীতিবান, আদর্শবাদী, দেশপ্রেমী রাজনীতিককে তারা নিতে পারছেন না। কতিপয় ডিগবাজিমার্কা-ভ্রষ্টচারী রাজনৈতিক ব্যক্তিকে নির্বাচনী রঙ্গমঞ্চের অভিনেতা বানাতে কব্জা করেছে। টাকার বিনিময়ে খরিদ হওয়া এসব রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের কেউ কেউ এখনই নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। কারণ তারা টাকা ও ক্ষমতার লোভে পড়ে ডিগবাজি দেওয়ার পর এখন বুঝতে পারছেন তাদের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে না। পাতানো খেলার সাজানো নির্বাচনে সরকার যাকে যাকে চাইবে, তারাই হবেন এমপি, তারাই হবেন ক্ষমতাশালী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মালিক জনগণ। সেই জনগণের সব মৌলিক অধিকার, ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে আজ অত্যাচারী শাসকের পদতলে রাখা হয়েছে। কেবল জনগণই নয়, গোটা দেশকে জিম্মি করেছে মাফিয়াচক্র।

রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জোটসঙ্গী একটি দলের শীর্ষ নেতা এই পাতানো নির্বাচনে যেতে না চাওয়ায়, বিভিন্ন এজেন্সি দিয়ে সেই নেতাকে একটি পাঁচতারকা হোটেলে জিম্মি করা হয়। পরে নির্বাচনের ঘোষণা দিতে বাধ্য করা হয়েছে। শেখ হাসিনার নির্দেশে নেতাদের বাড়ি বাড়ি হানা দিচ্ছে রাতের বাহিনী। এইভাবে জোড়াতালি দিয়ে নির্বাচনের পথে হাঁটছে মাফিয়াচক্র। তবে তুমুল আন্দোলনে-জনজোয়ারে এই নির্বাচনী নাটক ভণ্ডুল হয়ে যাবে। জনগণ আগামী ৭ জানুয়ারি দেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন দিবস উদযাপিত করবে।

তিনি আরও বলেন, সারা দেশের জনপদগুলোতে ভয়ার্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া গ্রেফতার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছে মানুষ। বহু গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। মনোনয়ন নিয়ে ইতোমধ্যে খুনোখুনি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনকে শেখ হাসিনা উৎসবের বদলে ভয়, আতঙ্ক ও শোকে পরিণত করেছেন। 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বর্তমানে দেশের অধিকাংশ জনগণের দিন কাটছে অভাবে-অর্ধাহারে-অনাহারে। এমনকি অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারও সংসারের টানাপোড়েনে বিপর্যস্ত। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে অনেক পরিবার। প্রতিদিন বেড়েই চলেছে চাল-ডাল-আলু-তেল-পেঁয়াজ-রসুন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। দেশে উৎপাদনশীল এসব পণ্যের সঙ্গে অন্য কোনো দেশের যুদ্ধের সম্পর্ক নেই। সরকারের মাফিয়া চক্রের কারণে এসব জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না।

রিজভী বলেন, সরকার একদিকে বলছে নির্বাচনে আসুন, অন্যদিকে বিএনপিসহ বিরোধী দলের সম্ভাব্য প্রার্থীসহ আন্দোলনে সক্রিয় ও সাহসী নেতাদের টার্গেট করে কারাদণ্ড দিচ্ছে। পুরোনো মামলায় সাজা দেওয়ার হিড়িক শুরু হয়েছে। নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে দুই বছরের নিচে কারোর সাজা হচ্ছে না। কারণ দুই বছরের সাজা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রতিবন্ধক। এসব কারাদণ্ড প্রদান করা হচ্ছে ‘আজব আদালত’ থেকে। যেখানে মৃত ও গুম হওয়া নেতাদেরও রেহাই নেই। মৃতদেরও সাজা দিচ্ছে। গত দেড় মাসে বিএনপির ৫৮২ জন নেতাকর্মীকে প্রহসনের বিচারে দণ্ডিত ঘোষণা করা হয়েছেন। আসামিদের অনুপস্থিতিতে চার্জগ্রহণ ও কারাগারে বন্দি অবস্থায় আসামিকে সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা শোনার সুযোগ না দিয়ে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করে দণ্ড ঘোষণা করা হচ্ছে। সব মামলার বাদী পুলিশ। 

বিএনপির এই নেতা বলেন, রাত-দিন আদালত খুলে আওয়ামী দলদাসরাই সাক্ষী-তারাই বিচারক। ফরমায়েশি রায়ও দেওয়া হচ্ছে প্রহসনের নির্বাচনের মতো। 

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত সারা দেশে ৩২৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই সময়ে ১৩ মামলায় এক হাজার ৪৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম