ওষুধের দাম বাড়িয়ে জনগণকে নির্মম পরিস্থিতিতে নিয়ে যাচ্ছে সরকার: বিএনপি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:১৩ পিএম
ওষুধের দাম বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার দলটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম এক বিবৃতিতে বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে যখন দিশেহারা দেশের জনগণ, তখন ওষুধের দাম বৃদ্ধি করে দেশের জনগণকে এক নির্মম পরিস্থিতিতে নিয়ে যাচ্ছে এই অবৈধ সরকার।
ডা. রফিকুল বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের তথ্যমতে, চিকিৎসা ব্যয়ের ৬৪% ওষুধের পেছনে খরচ হয়, সেই ওষুধের দাম বৃদ্ধি করে যেন নির্মম এক প্রহসনের আয়োজন করল জনবিচ্ছিন্ন এ সরকার।
তিনি বলেন, ২০২২ সালে কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়া শুধুমাত্র ওষুধ কোম্পানিগুলোর সুপারিশে ২০টি জেনেরিকের ৫৩টি ওষুধের দাম বৃদ্ধি করে ওষুধ প্রশাসন, যা ছিল নজিরবিহীন। সেই সময় প্যারাসিটামল, হৃদরোগ, ব্যথানাশক ও গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের দাম ৫০—১৩৪% শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। ওষুধের দাম বৃদ্ধির এই রেশ কাটতে না কাটতেই অতি সম্প্রতি দেশের শীর্ষ ছয় প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত ২৩৪টি জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। যার সুবিধা নিচ্ছে অসাধু কিছু ব্যবসায়ী। ফলে ওষুধের মূল্য প্রকৃত মূল্যের তুলনায় অনেক বেশি খরচ দিয়ে কিনতে হিমশিম খাচ্ছে জনগণ।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, মারাত্মক ডেঙ্গুর এই প্রকোপের সময় ওষুধের এই লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি চরম বিপর্যয় নিয়ে আসছে। একই সঙ্গে জীবন রক্ষাকারী স্যালাইনের মূল্যবৃদ্ধি অমানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
ডা. রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, কোর্স সম্পন্ন না করে অ্যান্টিবায়োটিক বন্ধ করলে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স তৈরি হচ্ছে; যা শীর্ষ ১০টি জনস্বাস্থ্য হুমকির একটি। একই সঙ্গে ডায়াবেটিস কিংবা হৃদরোগের ওষুধের দাম বৃদ্ধিতে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
১৯৮২ সালের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১১(১) ধারা অনুযায়ী স্পষ্ট বলা আছে- সরকার অফিসিয়াল গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে ওষুধের দাম নির্ধারণ করতে পারবে। অথচ এই নিয়মের তোয়াক্কা না করে ২০২২ সালেই ওষুধ প্রশাসন দাম বাড়িয়েছে দুইবার।
তিনি বলেন, এভাবে দেশের প্রতিটি খাত ধ্বংসের সম্মুখীন। চিকিৎসা মৌলিক অধিকার, তাও আজ ক্ষুন্ন হচ্ছে। নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত এই সরকার কোনোভাবেই দেশের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা না করে এক চরম দুর্যোগের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না। অবিলম্বে স্বাস্থ্য খাতে এই বেহাল দশার সঙ্গে জড়িত অবৈধ সরকারের কুশীলবদের জবাবদিহিতার মুখোমুখি করতে হবে।