মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে দুই দিনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সাঈদী জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ছিলেন।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১৮ আগস্ট সারা দেশে বাদ জুমা দোয়া এবং ২৩ আগস্ট সারা দেশে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল। বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দলটির ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
এর আগে বুধবার জোহর নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সাঈদীর গায়েবানা জানাজার কর্মসূচি দিয়েছিল জামায়াতে ইসলামী। কিন্তু পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় এ কর্মসূচি স্থগিত করে দলটি।
জামায়াত আমির বলেন, আমরা আজ দুপুরে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সাঈদীর গায়েবানা জানাজা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। আল্লামা সাঈদীর গায়েবানা জানাজায় হামলা, ফুরকান উদ্দীনকে হত্যা করার প্রতিবাদে ধর্মীয় অধিকারের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ এবং সংবিধানে বর্ণিত অধিকার বাস্তবায়নে সহযোগিতা পরিবর্তে বাধাদান গ্রেফতার ও পুলিশের গুলিতে আহত করার প্রতিবাদে আগামী শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সারা দেশে দোয়া, বুধবার (২৩ আগস্ট) সারা দেশে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিল করা হবে।
এতে লিখিত বক্তব্য ও প্রশ্নের উত্তর দেন দলের ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, গত ১৩ আগস্ট বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে গাজীপুর শহিদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামার সময় তিনি হাসিমুখে উপস্থিত লোকদের সালাম দিয়ে কথা বলেছেন। সেই দৃশ্য সারা দুনিয়ার মানুষ দেখেছে। এর পর তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। বড়ই পরিতাপের বিষয়, তার পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে বারবার কারা কর্তৃপক্ষের নিকট আল্লামা সাঈদীর চিকিৎসার খবর জানতে চাইলে তাদের কোনো কিছুই জানানো হয়নি। তারা সাক্ষাৎ করতে চাইলেও তাদের সাক্ষাতের কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, আল্লামা সাঈদীর চিকিৎসা পারিবারিক তত্ত্বাবধানে বন্দোবস্ত করার ও একজন অ্যাটেনডেন্টকে তার সঙ্গে রাখার সুযোগ দেওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা সত্ত্বেও আল্লামা সাঈদীর পরিবার কোনো সাড়া পাননি। জীবনের শেষ মুহূর্তে তাকে স্ত্রী এবং সন্তানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি মৃত্যুর পরও তার স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যদের তার মৃত মুখ পর্যন্ত দেখতে দেওয়া হয়নি। এটা শুধু মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনই নয়, অমানবিকও বটে।
আরও পড়ুন: ‘পুলিশ প্রশাসন গণমাধ্যম সবই নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার’
কেন্দ্রীয় প্রচার-মিডিয়া সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দের সঞ্চালনায় এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আ. হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমির আ. রহমান মুসা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মাহফুজুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন, কামাল হোসেন প্রমুখ।