আ.লীগের চেয়ে বড় চোর সারাবিশ্বে পাওয়া যাবে না: মির্জা ফখরুল
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৩, ০৩:৩০ পিএম
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসলে আওয়ামী লীগ হলো চোর। সব ক্ষেত্রে তারা চুরি করে। এর চেয়ে বড় চোর সারাবিশ্বে খুঁজে পাওয়া যাবে না।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি ঘোষিত 'আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে; ২৭ দফা রূপরেখার গুরুত্ব ও অপরিহার্যতা' শীর্ষক এ আলোচনাসভার আয়োজন করে ১২-দলীয় জোট।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশের নির্বাচনি ব্যবস্থা নষ্ট করে ফেলেছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্টে যে নির্বাচন হয়, সেটি ঐতিহাসিক এবং তাৎপর্যপূর্ণ। সেই নির্বাচনকে সবাই সম্মানের চোখে দেখে। কিন্তু গতকাল বুধবার নির্বাচন ঘিরে যা ঘটেছে তা দেশের নির্বাচনব্যবস্থার জন্য কলঙ্কজনক ঘটনা। আমরা ধিক্কার ও নিন্দা জানাচ্ছি। এটা প্রমাণ করে দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নেই। এখন মনে হয় যে সরকারও নেই। কারণ সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনব্যবস্থা তারা ভেঙে দিয়েছেন। আগে প্রেসক্লাবের নির্বাচনব্যবস্থা নষ্ট করেছে। তারা এভাবে দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের ‘সংবিধান বিতর্ক’ বইয়ের রেফারেন্স দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘৭২ সালের সংবিধান প্রণয়নের আগে ১৯৭১ সালের আগে দুটো নির্বাচন হয়েছিল। একটি পাকিস্তান জাতীয় সংসদের, আরেকটি প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন। এর পর পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্যদের দিয়ে সংবিধান রচনার জন্য গণপরিষদ গঠন করেছিলেন। যারা দেশের বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় সংবিধান রচনা করেছিলেন। যেখানে গণতন্ত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানবাধিকার সুরক্ষা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কিন্তু তার কোনটা আজকে আছে?’
তিনি বলেন, অবৈধ প্রধানমন্ত্রী জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছেন। আর বলেন গণতন্ত্রের কথা। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমানও বলেছিলেন, গণতন্ত্রের কথা। আজকে কোন রাষ্ট্রে বাস করছি আমরা। সত্য কথা বললে বলা হয় আমরা নাকি সমস্যা তৈরি করতে যাচ্ছি। তারা দেশের ভোট ও নির্বাচনব্যবস্থা নষ্ট করেছে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিষয়টি তারা ধ্বংস করে ফেলেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে কষ্ট হয় যে, যখন দেখি কিছু বুদ্ধিজীবী এই নেত্রীকে সাপোর্ট করে। তার অন্যায়গুলোকে সমর্থন করেন। এই বাংলাদেশ কি আমরা চেয়েছিলাম? চিৎকার দিয়ে বলতে পারি আমরা এই বাংলাদেশ চাইনি। আজকে দেশের মানুষ ভাত পায় না, চাল পায় না। একজন শ্রমিক তার ছেলেকে প্রোটিন হিসেবে ডিমও খাওয়াতে পারে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের দাবিতে ৭৩ দিন হরতাল করেছিল। আজকে তারা সেটা বাতিল করে ফেলেছে। এখন দেশের অস্তিত্বের প্রশ্ন! আমাদের আন্দোলন চলছে। ইতোমধ্যে আমাদের আন্দোলনে ১৭ জন ভাই প্রাণ দিয়েছে। আসুন আমরা সবাই মিলে কঠোর আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারব।
১২-দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা ও জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজউদ্দিন টিটুর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বীরপ্রতীক, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান আব্দুল করিম আব্বাসী, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রকিব, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান কারি মুহাম্মদ আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, সিনিয়র সহসভাপতি মুফতি শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সিনিয়র সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, ন্যাপ-ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিমসহ ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।