গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হলে বিপ্লবীদের নিশ্চিহ্ন করে দিত হাসিনা: মঞ্জু
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৯ পিএম
আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, ‘জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতা নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। যদি এই গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হতো তাহলে আমরা যারা আন্দোলনে ছিলাম, ছাত্র-জনতা যারা বিপ্লবে শামিল হয়েছিল- সবাইকে ফ্যাসিস্ট হাসিনা নিশ্চিহ্ন করে দিত।’
শনিবার বেলা ১১টায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী চারিয়া বোর্ড স্কুল সংলগ্ন এফএম কনভেনশন হলে এবি পার্টির উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের স্মরণে আয়োজিত মুক্ত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মঞ্জু বলেন, শত সহস্র জীবন ও রক্তসাগর পেরিয়ে যে অর্জন তার আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে নতুন করে গড়তে হবে।
এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলমের সভাপতিত্বে ও দলের চট্টগ্রাম উত্তর জেলার ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক সাংবাদিক জিয়া চৌধুরী এবং মোরশেদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবার ও আহতদের সম্মাননা স্মারক এবং অনুদান হস্তান্তর করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মজিবুর রহমান মঞ্জু আরও বলেন, চট্টগ্রামের কৃতিসন্তান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ফ্যাসিস্ট হাসিনা জেলে ঢুকাতে চেয়েছিল, আল্লাহর কী মর্জি তিনি আজ বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।
এ সময় ফ্যাসিস্ট হাসিনার সময় কাঁচা মরিচের কেজি ছিল ১২০০ টাকা, ব্যাংক লুট করে কানাডা, লন্ডন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, বেগম পাড়ায় হোটেল ও মার্কেট বানানোর বিষয়টি উপস্থিত জনসাধারণকে স্মরণ করিয়ে দেন মঞ্জু।
তিনি বলেন, দেশের আজ যেদিকে তাকাবেন সেদিকেই সব শূন্য। ব্যাংকে আপনাদের যে টাকা আছে তা তুলতে পারবেন না।
মঞ্জু আহত ও নিহত পরিবারের দিকে তাকিয়ে বলেন, আপনাদের এই ত্যাগ জাতি কখনও ভুলতে পারবে না। তিনি বাংলার আপামর জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাধ্যমে আহত ও নিহতদের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
মঞ্জু পরে চট্টগ্রাম-৫ (বায়েজিদ একাংশ এবং হাটহাজারী) আসনের জন্য এবি পার্টির পক্ষে লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলমকে পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময় দিদারুল আলম বলেন, এবি পার্টি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি, এই নতুন যাত্রায় আমরা একটি সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ এবং সমতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ উপহার দিতে পারব।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এবি পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট গোলাম ফারুক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
এবি পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও অনিরাপদ রাখব না। ছাত্র-জনতা, সেনাবাহিনী থাকতে বাংলাদেশে আর ফ্যাসিস্ট আমল ফিরে আসতে দেওয়া হবে না। আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী বাংলাদেশকে গড়ে তুলব।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এনায়েত উল্লাহ পাটোয়ারী বলেন, পত্রিকায় ও সোশ্যাল মিডিয়ায় আহতদের আহাজারি দেখতে আমাদের ভালো লাগে না। অবিলম্বে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
স্মরণসভা, দোয়া ও আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- এবি পার্টির কেন্দ্রীয় সহকারী সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার লোকমান, চট্টগ্রাম মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় সহকারী সদস্য সচিব ছিদ্দিকুর রহমান, ফটিকছড়ি উপজেলা বিএনপির সভাপতি কর্নেল (অব.) আজিমুল্লাহ বাহার, ছাত্র পক্ষের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মুহাম্মদ প্রিন্স, এবি পার্টির হাটহাজারী উপজেলার নেতা মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু,বোরহান উদ্দিন, ছাত্রনেতা আব্দুল কাদের, এবি পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর যুগ্ম সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার যায়েদ হাসান চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম বাবুল, সহকারী সদস্য সচিব আব্দুর রহমান মনির, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ সোহরাব হোসেন পিয়াস, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হাটহাজারী উপজেলার প্রতিনিধি ইয়াকুব ওয়াসিব, স্থপতি তানভীর মাসুদ, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধা সামিন রহমান, মো. সাইম, দিলদার, আব্দুল আলিম, মাইমুন নূর চৌধুরী, তামিম, সিনান, শহিদ ইউসুফের স্ত্রী, শহিদ জামালের স্ত্রী, মির্জাপুর রুপায়ন সংঘের সাধারণ সম্পাদক জীবন বড়ুয়া, কুলগাঁ সিটি করপোরেশন স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক আবু রাহেল ফয়সাল।
অনুষ্ঠানে মনোমুগ্ধকর দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন হাটহাজারী শাস্ত্রীয় সংগীত নিকেতনের শিল্পী সুমন দে ও তার দল।