কর্মী সম্মেলনে মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক
যুবসমাজকে দেশ-জনগণের পক্ষে সচেতন থাকতে হবে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৫৫ পিএম
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহ সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেছেন, ছাত্র-জনতার দুর্বার আন্দোলন ও এক সাগর রক্তের বিনিময়ে খুনি হাসিনার ফ্যাসিবাদি সরকার উৎখাত হওয়ার পরও ষড়যন্ত্রকারীরা থেমে নেই। বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও জনগণের শত্রুরা দেশকে অস্থিতিশীল করে ফায়দা লুটতে নানামুখী চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রের মোকাবিলায় দেশপ্রেমি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ বিশেষ করে যুবসমাজকে সজাগ থাকতে হবে। একইসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত গ্রহণযোগ্য পরিবেশ নিশ্চিত করে নির্বাচনের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। গুম, খুন, ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি ও লুণ্ঠনকারীরা যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে যুব জমিয়তের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা ফারুক এসব কথা বলেন। যুব জমিয়তের সভাপতি মাওলানা তাফহীমুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলন সঞ্চালনা করেন যুব জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইসহাক কামাল।
বক্তব্যে মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক আরও বলেন, আমাদের প্রতিটি নেতাকর্মীকে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর নেজাম প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সরব থাকতে হবে এবং এই লক্ষে তৃণমূল পর্যায়ে জনসংযোগ বৃদ্ধি করে গণমত তৈরি করতে হবে। ইসলাম, উম্মাহ ও দেশের স্বার্থে জমিয়তকে শক্তিশালী করতে হবে। এভাবে সংগঠনের সঙ্গে সর্বস্তরের গণমানুষকে সম্পৃক্ত করা গেলে জমিয়তকে উপেক্ষা করার কেউ সুযোগ পাবে না।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের গুরুত্বপূর্ণ সময় হল যৌবনকাল। যৌবনকালের ইবাদত মহান আল্লাহর খুবই প্রিয়। কিন্তু পতিত ফ্যাসিবাদি সরকার যুব সমাজকে অপরাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। তারা যুব সমাজের হাতে তুলে দিয়েছে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য। যার ফলে যুবসমাজের আদর্শিক ও নৈতিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় ঘটেছে। এরই পরিণাম স্বরূপ সমাজে খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, রাহাজানির সয়লাব চলছে।
তিনি আরও বলেন, যুব সমাজকে দক্ষ ও আদর্শ জনশক্তিতে পরিণত করে রাষ্ট্র বিনির্মাণে সুফল নিতে হলে পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমে আদর্শ ও চরিত্রবান হিসেবে তাদেরকে গড়ে তোলার বিকল্প নেই। সেক্ষেত্রে যুব জমিয়ত বাংলাদেশ-এর আজকের কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে দেশের যুবসমাজকে ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যুব জমিয়তের পতাকাতলে সমবেত হতে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা তাফহীমুল হক বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী ৫৩ বছরে যারাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসেছে প্রত্যেকেই যুব সমাজকে অপরাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। দিকভ্রান্ত ও বিভ্রান্ত যুবসমাজকে আদর্শবান রূপে গড়ে তুলতে যুবজমিয়ত বাংলাদেশ দেশব্যাপী বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহসভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার, মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজিজ, মাওলানা লোকমান মাযহারী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, অর্থ সম্পাদক মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন, যুব জমিয়ত বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুফতি গোলাম মাওলা, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি রিদওয়ান মাযহারী প্রমুখ।