‘ঘর পোড়ার মধ্যে আলু পোড়া খেতে চাওয়াদের বিষয়ে সতর্ক থাকুন’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৫ পিএম
বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেকে নানা বেসামাল ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।তিনি ‘ঘর পোড়ার মধ্যে যারা আলু পোড়া দিয়ে খেতে চায়’ তাদের ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অনেকে নানা বেসামাল ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য রেখে চলেছে। ঘর পোড়ার মধ্যে যারা আলু পোড়া দিয়ে খেতে চায়, তাদের ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে।
শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে এক প্রতিনিধি সভায় সাইফুল হক এসব কথা বলেন।
গত ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ ও সংস্কারের লক্ষে ছয়টি কমিশন গঠনের সিদ্ধান্তকে গুরুত্বপূর্ণ আখ্যায়িত করে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই জাতীয় সংসদের মধ্য দিয়ে সংস্কারকে টেকসই রূপ দিতে পারেন।
তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে দেশের লাখ লাখ শিক্ষার্থীদের গিনিপিগ বানানো হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের গোটা একটি প্রজন্মকে নিয়ে চূড়ান্ত স্বেচ্ছাচারিতা করা হয়েছে, ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা। উপযুক্ত শিক্ষার পরিবর্তে যে কোনোভাবে পাশ করানোই ছিল উদ্দেশ্য। তিনি একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী আধুনিক, বিজ্ঞানমনষ্ক, গণতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, একদিকে শিক্ষার বৈষম্য সামাজিক বৈষম্যকে প্রকট করে তুলছে, আবার অন্যদিকে সামাজিক বৈষম্যও শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্য বাড়িয়ে তুলছে।
সাইফুল হক আশা প্রকাশ করেন, রাজনৈতিক দল ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের মতামত এবং সম্মতির ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকার জরুরি কাজগুলো এগিয়ে নেবে।
তিনি উন্নয়নের নামে জনগণের সম্মতিহীন মেগা প্রকল্পগুলোর পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা করে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলো স্থগিত ও বাতিল করার দাবি জানান।বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, জনগণের অর্থে কথিত উন্নয়নের নামে লুটপাটের সাদা হাতি আর পোষা যাবে না।
বিপ্লবী ছাত্র সংহতির সাধারণ সম্পাদক ফায়েজুর রহমান মনিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সভায় সংহতি বক্তব্য দেন- শ্রমজীবী নারী মৈত্রীর সভাপতি নারী নেত্রী বহ্নিশিখা জামালী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আবু হাসান টিপু, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, বিপ্লবী যুব সংহতির আহ্বায়ক বাবর চৌধুরী ও সদস্যসচিব মীর রেজাউল আলম, বিপ্লবী ছাত্র সংহতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাসেল, বিপ্লবী ছাত্র সংহতির কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম অভি, তিথি সুবর্না, বিপ্লব হোসেন খান, রুপেন্টু চাকমা, সোহেল হোসেন, সাজ্জাদুল করিম আনভি, ফয়সাল আহমেদ মঈন, আল মামুন সৈকত প্রমুখ।
প্রতিনিধি সভায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতি ও ছাত্র আন্দোলনের কর্তব্য নিয়ে ছাত্র প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।
প্রতিনিধি সভায় আগামী ১৬ নভেম্বর বিপ্লবী ছাত্র সংহতির কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ছাত্রনেতা ফায়েজুর রহমান মুনিরকে আহ্বায়ক, রফিকুল ইসলাম অভিকে যুগ্ম আহ্বায়ক ও বিপ্লব হোসেন খানকে সদস্যসচিব করে ১৭ সদস্যের কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়।
প্রতিনিধি সভার শুরুতে ছাত্র শ্রমিক জনতার অভ্যুত্থানে নিহত শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়।
সম্মিলিত কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে প্রতিনিধি সভা সমাপ্ত হয়।