নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারে সিপিবির আহ্বান
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৯ পিএম
সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা এবং নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে আলোচনা শুরুর জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। বুধবার দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রেসিডিয়াম সভায় এ আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে সভায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সন্তোষজনক উন্নতি না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ক্ষিপ্ততার সঙ্গে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
সভায় জানানো হয়, বিভিন্ন দাবিতে ২১ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী সমাবেশের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটি।
সভায় জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে নিহত-আহতদের প্রকৃত তালিকা তৈরি, আহতদের সুচিকিৎসা ও পরিবারের পুনর্বাসনের দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি জানানো হয়। সভায় বলা হয়, গণঅভ্যুত্থানে কোনো দল বা গোষ্ঠী বিজয়ী হয়নি, অথচ দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন স্থানে দখলদারী, চাঁদাবাজির হাত বদল হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় বিতর্কিতদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। যেমন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনালের ৭১’র যুদ্ধাপরাধী ও ঘাতকদের পক্ষে যে আইনজীবী ছিল, তাকে চিফ প্রসিকিউটর হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যা দেশবাসীকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
সভায় সর্বত্র নীতিমালা তৈরি এবং দল নিরপেক্ষ দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ এবং বিতর্কিতদের অপসারণের দাবি জানান হয়। সভায় দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি, নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এ বিষয়ে উত্তরণে সিন্ডিকেট ভেঙে জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনার দাবিও জানানো হয়। সভায় পাচারের টাকা ফেরত আনা, ঋণখেলাপিদের কাছ থেকে টাকা আদায়সহ দুর্নীতি-লুটপাটের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ভূমিকা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্য, সংখ্যালঘু, মাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনার ওপর আঘাত-ভাঙচুর ও ‘মব জাস্টিস’ এর বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ ও ঐতিহ্য পুনর্নির্মাণের ঘোষণার দাবি জানানো হয়।
সভায় পার্টির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহীন রহমান, অধ্যাপক এ এন রাশেদা, লক্ষ্মী চক্রবর্তী, মোতালেব মোল্লা ও পরেশ কর। সভায় বিভিন্ন স্থানে পতিত স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িক অগণতান্ত্রিক অপশক্তির আস্ফালন চিহ্নিত করা ও রুখে দাঁড়াতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সভায় গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় স্বৈরাচারী ব্যবস্থার উচ্ছেদ ও বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়ার সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।