দখলদারিত্ব সন্ত্রাস চাঁদাবাজি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি বাম জোটের
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪০ পিএম
দেশের বিভিন্ন স্থানে দখলদারিত্ব, সন্ত্রাস চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। নেতারা বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান ও দখলদারিত্ব বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে দেশবাসী আশা করলেও তার উল্লেখযোগ্য প্রতিফলন এখনো দৃশ্যমান হচ্ছে না।
রোববার গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে একথা বলেন বাম জোটের নেতারা।
বিবৃতিদাতারা হলেন- বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সিপিবির সভাপতি মো. শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে যে এই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে কোনো বিশেষ দল বা গোষ্ঠী বিজয়ী হয়নি। ছাত্র-জনতার রক্তস্নাত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত বিজয়ে দেশবাসী আশা করেছিল যে, ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও অতীতের মতো দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি বন্ধ হবে। এটি হয়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথাযথ উন্নতি এখনও পর্যন্ত হয়নি। দেশের বিভিন্ন স্থানে পাল্টা দখলদারিত্ব, নীরব চাঁদাবাজি, হুমকি-ধমকি চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে দখলদারিত্ব, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় সৃষ্ট সংকটে ক্ষিপ্রতার সঙ্গে সমস্যা সমাধানের দৃশ্যমান উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।
বিবৃতিতে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনাসহ এ সময়ে ও অতীতে যেসব দখলদারিত্ব কায়েম হয়েছে তার অবসান ঘটাতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে নেতারা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদেরকে জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করার ঘটনায়ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে যদি কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কর্মকাণ্ডের অভিযোগ থাকে তাহলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অর্থাৎ শিক্ষা মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসনের কাছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি/আবেদন করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে গতকাল (শনিবার) ঢাকা মেডিকেল কলেজে সংগঠিত ঘটনার জেরে আজ সারা দেশে চিকিৎসকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা ও আজ আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে কারখানা ভাঙচুরসহ নৈরাজ্যকর ঘটনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অস্থিতিশীল করার সুগভীর চক্রান্ত বলে উল্লেখ করে অবিলম্বে শুরুতে এমন চক্রান্ত ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং চিকিৎসকদের ও শিল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম এখন পর্যন্ত টেনে ধরতে না পারায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, একদিকে দেশের এক বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এবং দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে নিম্ন আয়ের মানুষহ সাধারণ জনগণ বিশেহারা।
বিবৃতিতে অবিলম্বে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান নেতারা।