‘মিয়ানমার বোম্বিং করছে, আমাদের মন্ত্রিসভার নবাব বাহাদুররা শান্তিতে ঘুমাচ্ছেন’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৫১ পিএম
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ বলেছেন, ‘মিয়ানমারের মতো একটি দেশ বাংলাদেশের ওপরে বোম্বিং করছে। সীমালঙ্ঘন করছে। আমাদের লোকজন সীমান্তে মারা যাচ্ছে। অন্যদিকে আমাদের মন্ত্রিসভার নবাব বাহাদুররা শান্তিতে ঘুমাচ্ছেন। বাংলাদেশকে রক্ষায় কোনো ব্যবস্থা তাদের নেই। এখন পর্যন্ত বর্ডারে কূটনৈতিক সভা হয়নি। আমরা কি মিয়ানমার থেকেও নিচে পড়ে গেছি? বাংলাদেশের আজকে এই দুর্দশা কেন?’
বুধবার দুপুরে রাজধানীর মগবাজারে এলডিপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
অলি আহমদ বলেন, ‘সরকারের দুর্বলতার কারণে দেশের সীমান্তে আজ এই অবস্থা। কারণ, তারা (সরকার) অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি স্বাধীন নয়। দুইদিন আগে ভারতের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক অজিত দোভাল এসেছিলেন। তিনি পরামর্শ দিয়ে গেছেন আগামী দিনে কিভাবে বাংলাদেশ চলবে। দোভালেরা বাংলাদেশ চালাচ্ছেন। শেখ হাসিনা (প্রধানমন্ত্রী) যদি চালাতেন, তাহলে আরও কিছু ভালো হতো। ভারতীয়দের দিয়ে বাংলাদেশ নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘সরকারকে পদ্মা সেতু থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করা উচিত। ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তে সেসব কর্মকাণ্ড হচ্ছে, সেখানে সরকার নীরব ভূমিকায়। এটা একটা স্বাধীন রাষ্ট্র। আমরা যুদ্ধ করে এই দেশকে স্বাধীন করেছি। আওয়ামী লীগের লোকেরা এই দেশ স্বাধীন করে নাই। এখন ভুয়া মুক্তিযুদ্ধের সনদ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা বানানো হচ্ছে। এসব ভাওতাবাজি করে দেশ পরিচালনা করতে পারবেন না।’
সরকারের উদ্দেশে এলডিপির প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এবারো বিরোধী দল থেকে নেতাদের নির্বাচনে (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ) নেওয়ার জন্য আপনারা (সরকারি দল) চেষ্টা করেছেন। কয়েকজন কুলাঙ্গার ও চরিত্রহীন ব্যক্তি ছাড়া কেউ আপনাদের সঙ্গে যায়নি। আগামীতেও যাবে না। আমরা এলডিপি বিএনপির সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে আগামী দিনে কী কর্মসূচি হবে, তা পালন করব। সবার (নেতাকর্মীদের) প্রস্তুতি থাকতে হবে। আমাদের কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ।’
অলি আহমদ বলেন, ‘বর্তমান সরকার পুলিশকে ব্যবহার করে শান্তির্পূণ কর্মসূচি পালন করতে দিচ্ছে না। কিছুদিন আগে রাজধানীর উত্তরায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানকে মিছিলে বাধা দেওয়া হয়েছে। তাকে মিছিল করতে দেয়নি। আমরা পুলিশদের বলব- আপনারা আমাদের ট্যাক্সের টাকায় চলেন। আপনাদের দায়িত্ব পুরো জাতির ওপরে। শুধু আওয়ামী লীগকে রক্ষা করা আপনাদের দায়িত্ব না। বিভিন্ন বাহিনীতে ও চাকরিতে যারা আছেন, তাদেরকে অনুরোধ করব আল্লাহকে ভয় পান। জনগণের প্রতি দায়িত্বশীল হোন। কোনো ব্যক্তি বা দলের প্রতি আপনারা দায়িত্বশীল হবেন না। আমাদের কর্মসূচিতে বাধা দিবেন না। আমরা কোনো অন্যায় কাজ করব না। ’
জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা সফল হয়েছেন। আমরাও আপনাদের নিয়ে সফল হয়েছি। আগামী দিনে আপনারা আমাদের কর্মসূচি সফলে ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নেমে আসবেন। অন্যথায় স্বৈরাচারীর হাত থেকে দেশ কখনো মুক্ত হবে না। দেশের অর্থনীতির মুক্তি হবে না। বিরাজনীতিকরণ হবে না। ’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক এমপি নুরুল আলম তালুকদার, ড. নিয়ামুল বশির, ড. আরঙ্গজেব বেলাল, অ্যাডভোটেক এসএম মোর্শেদ, উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাল হোসেন মিয়াজী।