সরকার দেশে একদলীয় বাকশাল কায়েম করতে চায়: জামায়াত নেতা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০৫:৪৯ পিএম
সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশকে রাজনীতিশূন্য করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল।
বুলবুল আরও বলেন, ‘সরকার আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ শীর্ষ নেতাদেরকে অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দি করে রেখেছে। এভাবে সরকার পরিকল্পিতভাবে এদেশকে রাজনীতি শূন্য করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করতে চায়।এরই ধারাবাহিকতায় ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে প্রহসন ও নাটক মঞ্চস্থ করেছে। জনগণ ভোটদান থেকে বিরত থেকে সরকারকে তাদের জবাব দিয়ে দিয়েছে।’
জামায়াতে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কদমতলী উত্তর থানার উদ্যোগে বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীতে অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য ও কদমতলী উত্তর থানা আমীর আব্দুর রহিমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ড. মোবারক হোসাইন।
এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন থানা কর্মপরিষদ সদস্য ওমর ফারুক, দুলাল মিয়া, মিজানুর রহমান, আব্দুল হালিম, আবু বকর সিদ্দিক, শাহাদাত হোসেনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
শীতবস্ত্র বিতরণকালে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘সারা দেশে তীব্র শীতে অসহায় মানুষ নিদারুণ কষ্টের মধ্যে রয়েছে অথচ সরকারের সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকার জণগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ায় জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সব তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। সেই সঙ্গে প্রকৃত দেশপ্রেমিক, সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব তৈরির মাধ্যমে জনগণের সব সমস্যার সমাধানে সচেষ্ট রয়েছে। যা ইতোমধ্যেই দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে এবং তাদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের সীমিত সামর্থ্য সত্বেও মানবতার কল্যাণেই আমাদের সব প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মানবতার কল্যাণে কাজ করা আমাদের ইমানি দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে বিশ্বাস করি। কারণ এটা ইসলামের নির্দেশ। এ নির্দেশ থেকেই জামায়াতে ইসলামী তার ৪ দফা কর্মসূচির মধ্যে ৩য় দফা কর্মসূচিতে সমাজসেবা কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত রেখেছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ এক মহাসংকট অতিক্রম করছে। রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক সংকট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার হরণ করা হয়েছে। দেশের মানুষের মৌলিক মানবাধিকার ভুলুন্ঠিত। দুর্নীতি, লুটপাট, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচার করা হয়েছে। দেশে আজ ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। কথা বলার অধিকার নাই, মত-প্রকাশের অধিকার নাই, রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করার অধিকার নাই। বিগত ১৫ বছরে জামায়াতে ইসলামীর ২৫১ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।’
জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, ‘এই আওয়ামী অপশক্তির হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে সুরক্ষা করতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে ঐক্যবদ্ধ দুর্বার গণআন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।’
তিনি দেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে রাজপথে ঐতিহাসিক অবদান রাখতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।