দেশে সবার প্রতি সমান আচরণ করা হচ্ছে না: কর্নেল অলি
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৫:০৯ পিএম
![দেশে সবার প্রতি সমান আচরণ করা হচ্ছে না: কর্নেল অলি](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2023/02/17/image-646114-1676632183.jpg)
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, ‘দুর্নীতি ও দুঃশাসন সর্বস্তরে ব্যাপকতা লাভ করেছে। মনে হয় সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা গরিবের টাকা লুটপাটের জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনী দেশের উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং করতে দিচ্ছে না। তারা সরকারের আজ্ঞাবহ হিসেবে কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশ বাহিনী জনগণের পুলিশ হতে পারেনি। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে দেশে সবার প্রতি সমান আচরণ করা হচ্ছে না। জনগণকে মনের কথা প্রকাশ করতে দিচ্ছে না সরকার। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এই অবস্থায় দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই সরকারের পতনের জন্য দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে হবে।’
শুক্রবার বিকালে রাজধানীর পূর্বপান্থপথ এফডিসি সংলগ্ন এলডিপির কার্যালয়ের সামনে দলটির আয়োজিত পদযাত্রা কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পদযাত্রা কর্মসূচি এলডিপির কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে মালিবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
কর্নেল অলি বলেন, ‘কেউ আমাদের শত্রু না। কারো প্রতি আমাদের ব্যক্তিগত আক্রোশ নেই। দেশে গণতন্ত্র, শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন দেশপ্রেমিক সরকার।’
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশের খেলাপি ঋণের শীর্ষে আছে ১০টি ব্যাংক। যার মধ্যে ৩টি ব্যাংকই সরকারি। মুদি এবং পান দোকানদারের নামে হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ উত্তোলনের প্রমাণ রয়েছে। এগুলোর সঙ্গে সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা জড়িত না থাকলে তা কখনই সম্ভব নয়। দেশে আমদানি হ্রাস পেয়েছে। অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। রপ্তানিও কমে গেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রায় ১১টি জাহাজ পণ্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। কয়েক মাস যাবত তারা জরিমানা দিয়ে আসছে। ডলারের অভাবে মালামাল খালাস করা সম্ভব হচ্ছে না।’
‘বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন কমে যাচ্ছে। প্রবাসীরা আগের মতো সরকারকে বিশ্বাস করতে পারছে না। পূর্বের মতো বৈধপথে টাকা পাঠাচ্ছে না। কারণ তারা মনে করে আমরা গরিবেরা অমানসিক পরিশ্রম করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশে পাঠাই। আর ধনীরা বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য তা বিদেশে পাচার করে।’
কর্নেল অলি বলেন, ‘দিন দিন বৈদেশিক মুদ্রা আয় ও ব্যয়ের মধ্যে পার্থক্য বাড়ছে। সর্বোপরি বিদেশি ঋণের কিস্তি ও সুদ নিয়মিত পরিশোধ করা হচ্ছে না। যাতে করে অর্থনীতিতে অব্যাহতভাবে ধস নামছে। বর্তমানে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৭৪০ টাকা।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা বৈদেশিক মুদ্রা পাচারের জন্য বিভিন্নভাবে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ৫০ থেকে শতভাগ বাড়ানোর কারণে ব্যয়ের পরিমাণও ২ থকে ৪ গুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই টাকা তারা মিলেমিশে লোপাট করছে।’
এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদের সভাপতিত্বে পদযাত্রা কর্মসূচিতে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল আলম, ড. নেয়ামূল বশির, ড. আওরঙ্গজেব বেলাল, অ্যাডভোকেট এসএম মোরশেদ, অধ্যক্ষ স্যাকলায়েন, উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান, অধ্যাপিকা মোছা. কারিমা খাতুন, যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাল হোসেন মিয়াজি, সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম মিয়া, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল হাসেম, প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিলু, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক কবির উদ্দিন, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ আবদুস সামাদ, ঢাকা মহানগর পশ্চিম এলডিপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাদাত হোসেন মানিক, উত্তর এলডিপির সাধারণ সম্পাদক অবাক হোসেন রনি, ঢাকা মহানগর পূর্বের সভাপতি মো. সোলায়মান, গণতান্ত্রিক যুবদলের সভাপতি আমান সোবহান, গণতান্ত্রিক শ্রমিক দলের সভাপতি মামুন, গণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি খালিদ বিন জসিম, গণতান্ত্রিক আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট নূরে আলম, গণতান্ত্রিক ছাত্রদলের সভাপতি মেহেদী হাসান মাহবুব, গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি খোকনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন।