Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

মুখে নয়, গণমুখী হোক বাস্তবে

Icon

আবু আলম মো. শহিদ খান

প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মুখে নয়, গণমুখী হোক বাস্তবে

গত ৩ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারীকৃত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীকে প্রধান করে ‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন’ নামে একটি কমিশন গঠন করা হয়। কমিশন ২০৫ পৃষ্ঠার বিশাল প্রতিবেদন দাখিল করেছে। কমিশন মনে করে, বাংলাদেশের জনপ্রশাসন সংস্কারের সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য বা রূপকল্প হবে একটি জনমুখী, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক, নিরপেক্ষ ও কর্মদক্ষ জনপ্রশাসন গড়ে তোলা; যা দেশের জনগণকে নিবেদিত ও সততার সঙ্গে সেবা প্রদানপূর্বক একটি সমৃদ্ধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতি গঠনে অবদান রাখবে। এককথায়-রাষ্ট্রের নাগরিকদের সেবা প্রদানের জন্য সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবে।

রূপকল্পটি চমৎকার। খুব ভালো কথা বলা হয়েছে। তবে প্রশ্ন হলো, সুশাসন প্রতিষ্ঠা এককভাবে জনপ্রশাসনের পক্ষে সম্ভব কি? সুশাসন একটি রাজনৈতিক অঙ্গীকার। শাসক দল না চাইলে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সুশাসন এবং জনবান্ধব, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন গড়ে তোলা সম্ভব নয়, তা গত ৭৭ বছরে বারবার প্রমাণিত হয়েছে। এর একমাত্র সমাধান হলো স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও পেশাদার জনপ্রশাসন গড়ে তোলা। স্বাধীন সিভিল সার্ভিস, পুলিশ সার্ভিস, জুডিশিয়াল সার্ভিস এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে না পারলে বাংলাদেশে গণতন্ত্র বা সুশাসন কোনোটাই নিরাপদ নয়।

আমরা যে আমলাতন্ত্র বা গণকর্মচারী পেয়েছি, তার শুরু হয় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে। ইংরেজ চলে যাওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্র উত্তরাধিকার সূত্রে ব্রিটিশ আমলাতন্ত্র পেয়ে যায়। কিন্তু সমস্যা হলো, ভারত স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও পেশাদার আমলাতন্ত্র লালন করলেও পাকিস্তান সেই পথে হাঁটেনি। ইংরেজদের কাছ থেকে পাকিস্তানের শাসনভার গ্রহণকারী জিন্নাহ, লিয়াকত আলী খান নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছিলেন না। মূলত অনির্বাচিত সামরিক কর্মকর্তারাই পাকিস্তান শাসন করেছেন। স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবুর রহমানও স্বাধীন, সৎ ও নিরপেক্ষ আমলাতন্ত্র গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। পরবর্তী শাসকরা একই পথে হেঁটেছেন। উত্তরোত্তর জনপ্রশাসন জনমুখী, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক, নিরপেক্ষ ও কর্মদক্ষ না হয়ে দলীয় প্রশাসনে পরিণত হয়। তাই জনপ্রশাসন সংস্কার এখন জরুরি গণদাবিতে পরিণত হয়েছে।

দেশের জনপ্রশাসন সংস্কারের লক্ষ্যে বিগত ৫৩ বছরে দুই ডজনের বেশি কমিশন ও কমিটি গঠিত হয়েছিল। কমিশনগুলো বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করেছিল। রাজনৈতিক নেতৃত্ব সব সুপারিশ গ্রহণ করেনি এবং যেসব সুপারিশ গ্রহণ করেছিলেন, তার বাস্তবায়নে তারা আন্তরিক বা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন না। স্বার্থগত কারণে তখনকার শীর্ষ আমলারা সংস্কার বাধাগ্রস্ত করে। চূড়ান্ত বিচারে রাজনৈতিক নেতৃত্বের আন্তরিকতা আর সদিচ্ছা না থাকলে সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা কখনোই সম্ভব নয়। এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। জনগণের অনেক প্রত্যাশার মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দলীয় সরকার অতীতে যেটি করতে পারেনি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেটি করতে পারবে, এটাই জনপ্রত্যাশা।

‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন’ অনেক সুপারিশ করেছেন। কিছু স্বল্পমেয়াদি, কিছু মধ্যমেয়াদি আর কিছু দীর্ঘমেয়াদি। বেশকিছু সংস্কার প্রস্তাব খুব যৌক্তিক মনে হয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে-রাজস্ব নীতি বাস্তবায়ন করার জন্য তিনটি আলাদা অধিদপ্তর যথা-(ক) আয়কর অধিদপ্তর, (খ) শুল্ক ও আবগারি অধিদপ্তর, (গ) মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) অধিদপ্তর গড়ে তোলা। সাবরেজিস্ট্রি অফিস দ্রুত ভূমি অফিসের নিয়ন্ত্রণে ন্যস্ত করা। মন্ত্রণালয়গুলোর সংখ্যা হ্রাস, মন্ত্রণালয়কে গুচ্ছে বিভক্ত করা, উপজেলা পর্যায়ে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট স্থাপন, মেধাভিত্তিক নিয়োগ ও বিসিএস পরীক্ষার সিলেবাস যুগোপযোগী করা, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পুনর্গঠন, জনপ্রশাসনে নৈপুণ্য বিকাশ ও সক্ষমতার উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ ও পেশাগত উন্নয়ন প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থায় সংস্কার, সততা, নিরপেক্ষতা, বস্তুনিষ্ঠতা, জবাবদিহি, স্বচ্ছতা ও নেতৃত্বের গুণাবলীর প্রতি গুরুত্বারোপ, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসাবে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ ও সিটি করপোরেশন অধিকতর কার্যকর করার জন্য সংস্কার করা। সবচেয়ে প্রাচীন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা। উপজেলা পরিষদ কার্যকর করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ।

জেনারেল এরশাদের শাসনামলে উপজেলা পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়। এর মাধ্যমে স্থানীয় উন্নয়নের দায়িত্ব উপজেলা পরিষদের ওপর ন্যস্ত করা হয়। এ ব্যবস্থা প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। তবে এরশাদ সরকারের পতনের পর গণতান্ত্রিক সরকারের সময় উপজেলা পরিষদের ক্ষমতা ক্রমেই হ্রাস করা হয়। একইভাবে স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে ক্রমান্বয়ে দুর্বল করে সর্বক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের একক কর্তৃত্ব এবং নিরঙ্কুশ ক্ষমতা নিশ্চিত করা হয়। এর মধ্য দিয়ে দেশে কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। দেশের সিভিল প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, এমনকি বিচার প্রশাসন নগ্ন দলীয়করণের শিকার হয়। মৌলিক মানবাধিকার অবলীলায় লঙ্ঘিত হয়। মত প্রকাশের স্বাধীনতা পদদলিত হয়। নির্বাচনি ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ে।

তবে ‘সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস’ গঠন, সেই সার্ভিসে ৫০:৫০ ভাগাভাগি, দেশের পুরোনো চারটি বিভাগের সীমানাকে চারটি প্রদেশে বিভক্ত করে প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা চালু করা ‘ক্যাপিটাল সিটি গভর্নমেন্ট’ বা ‘রাজধানী মহানগর সরকার’ গঠন ইত্যাদি নিয়ে বেশ সমালোচনা হচ্ছে। সংস্কার কমিশনের প্রধানের বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশের পরপরই ক্ষোভ জানিয়েছে প্রশাসন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্যাডার সমিতি এবং আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ। দাবি পৃথক হলেও এসব সুপারশিকে ‘বৈষম্যমূলক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন তারা।

কেউ কেউ মনে করেন, প্রদেশ গঠনের মাধ্যমে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ করা যাবে, রাজধানী ঢাকার ওপর চাপ কমবে এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, প্রস্তাবটি অযৌক্তিক, ব্যয়বহুল এবং জাতীয় ঐক্য, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি ডেকে আনতে পারে। প্রদেশে প্রদেশে রাজনৈতিক মতপার্থক্য, অন্তঃকলহ হবে জাতির জন্য মহাবিপর্যয়কর। বাংলাদেশে আটটি বিভাগ পৃথক প্রশাসনিক কাঠামো হিসাবে হয়তো কাজ করছে না। চারটি প্রদেশ গঠন করা হলে, বাকি চারটি বিভাগের মানুষ নিজেদের বৈষম্যের শিকার দাবি করে আন্দোলনে নেমে যেতে পারে, যা রাজনৈতিক জটিলতা বাড়িয়ে তুলবে। প্রতিটি প্রদেশের জন্য গভর্নর প্রাসাদ, সচিবালয়, আইনসভা, নতুন প্রশাসনকি কাঠামো এবং গণকর্মচারীদের জন্য বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা সৃষ্টির জন্য বিপুল বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে।

বাংলাদেশের জনপ্রশাসনের মূল্যবোধ হিসাবে নাগরিক সেবা, উন্নতমানের কার্যসম্পাদন, কার্যকর সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নির্ধারণ করার সুপারিশ করেছে ‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন’। ব্রিটেন, সিঙ্গাপুর, জাপান, চীন এবং উন্নত গণতন্ত্রের দেশগুলোতে সততা, সেবা, উৎকর্ষ, নিরপেক্ষতা, বস্তুনিষ্ঠতা, জবাবদিহি, স্বচ্ছতা ও নেতৃত্বের গুণাবলির প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। মূল্যবোধ সৃষ্টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ; তা করতে পারলে সুফল পাওয়া যাবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে দেশ পরিচালনার দাবিদার রাজনৈতিক দলগুলোর আদর্শ, মূল্যবোধ, দলের অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক চর্চা, নির্বাচনি সংস্কৃতির পরিবর্তন না হলে শুধু সংস্কারের মধ্য দিয়ে জনপ্রশাসনের মূল্যবোধ পরিবর্তিত হয়ে যাবে, এটা প্রত্যাশা করা যায় না।

গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্যই দরকার স্বাধীন, নিরপেক্ষ, মেধাবী, দক্ষ গণকর্মচারী। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারের কর্তৃত্বাধীন নির্বাহী বিভাগে দায়িত্ব পালন করবেন সংবিধান, আইন, বিধিবিধান অনুসরণ করে। কিন্তু গেল ৭৭ বছরে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের শাসকশ্রেণি রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠীগুলো গণকর্মচারীদের স্বাধীনভাবে আইন অনুসারে দায়িত্ব পালন করতে না দিয়ে বাধা সৃষ্টি করেছেন। সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেছেন জোর করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা আর ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। সেজন্যই নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে ক্ষমতার মসনদ চিরস্থায়ী করার চেষ্টা করা হয়েছে বারবার। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশ, জাতি, জনগণ।

’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির মননে নাগরিক রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠার বীজ রোপিত হয়। ’৭০-এর নির্বাচন এবং ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জনগণতান্ত্রিক, মানবিক, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলদেশ প্রতিষ্ঠার সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতা-পরবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে জনপ্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগ এবং সামরিক বাহিনীতে মুক্তিযোদ্ধা ও অমুক্তিযোদ্ধা বিভেদ শক্তিশালী রূপ নেয়। প্রতিযোগিতামূলক পদ্ধতি ছাড়াই রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রশাসনে নিয়োগ দেওয়া হয়। জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে পদোন্নতি দেওয়া হয়। অন্তর্ভুক্তিমূলক জনগণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার স্বপ্ন মুখ থুবড়ে পড়ে। রাষ্ট্রক্ষমতা ক্রমেই এককেন্দ্রিক হয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করে। একপর্যায়ে নৃশংস হত্যাকাণ্ড, ক্যু-পালটা ক্যুর মাধ্যমে দেশ ১৫ বছর ধরে সামরিক শাসনের বেড়াজালে আটকে যায়। পাকিস্তানের মতোই দেশ শাসন সামরিক-বেসামরিক শীর্ষ আমলাদের হাতে চলে যায়। সেই সময় ব্যবসা, অর্থ, ক্ষমতা ও পৃষ্ঠপোষকতা ভাগাভাগি করতে দেখেছি আমরা। শুরু হয় নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পালা। পতিত রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, সামরিক-বেসামরিক আমলারা রাজনীতিতে যোগ দিতে থাকেন। গোষ্ঠীতন্ত্রের বীজও রোপিত হয়। গণতন্ত্র আর সুশাসন নির্বাসিত হয়।

১৯৯০-এ স্বৈরাচার পতনের গণঅভ্যুত্থান আবার সুযোগ এনে দিয়েছিল নাগরিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার। ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে প্রবল গণ-আন্দোলনের মুখে সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পদত্যাগ ও ক্ষমতা হস্তান্তরের দালিলিক ভিত্তি ছিল তিন জোটের ঘোষিত রূপরেখা। এটি ছিল ক্ষমতা হস্তান্তর ও রাজনীতি-রাষ্ট্রপরিচালনার দলিল, যা পরে আর বাস্তবায়িত হয়নি। প্রত্যাশা ছিল, নির্বাচিত সরকারগুলো তিন জোটের রূপরেখা অনুসরণ করে দেশ পরিচালনা করবে; কিন্তু নব্বই-পরবর্তীকালে গোষ্ঠীতন্ত্র আবারও জেঁকে বসে।

২০২৪-এর জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের আবার সুযোগ এনে দিয়েছে জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং বিচারব্যবস্থায় মৌলিক সংস্কার করার। অধরা স্বপ্ন সুশাসন প্রতিষ্ঠা, উদার গণতান্ত্রিক মানবিক বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য আমাদের এখনই কাজ শুরু করতে হবে। গড়ে তুলতে হবে স্বাধীন, নিরপেক্ষ, দলীয় প্রভাবমুক্ত, মেধাবী, দক্ষ জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও বিচার প্রশাসন। নিয়োগ, পদায়ন, পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক বিবেচনা থাকবে না। গণকর্মচারীদের দিতে হবে আইনি সুরক্ষা। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। যতদিন পৃথিবী থাকবে, ততদিন সংস্কার হবে, কিন্তু ততদিন অন্তর্বর্তী সরকার থাকবে না, কাজেই অন্তর্বর্তী সরকারকে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সব সংস্কার বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। স্বল্পসময়ে যা কিছু বাস্তবায়ন করা সম্ভব, সেগুলো করে সব রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে নিতে হবে সংস্কার বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি। আমরা আর কেউ কথা রাখে না, এ অবস্থা দেখতে চাই না। (অনুলিখন : এমএ খালেক)

আবু আলম মো. শহিদ খান : সাবেক সচিব

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম