জুলাই আন্দোলনে হামলার অভিযোগ
ছয় ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর মুক্ত প্রাণ গোপালের মেয়ে

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৮:৫৩ পিএম

ফাইল ছবি
জুলাই আন্দোলনে হামলার অভিযোগে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাবেক বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক ডা. অনিন্দিতা দত্তকে ছাত্র-জনতা ৬ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখার পর সেনাবাহিনী উদ্ধার করে বাসায় পৌঁছে দিয়েছে।
অনিন্দিতা আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও শেখ হাসিনার স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্তের মেয়ে। রোববার দুপুর আড়াইটার পর সেনা সদস্যরা তাকে ধানমন্ডিতে তার বাসায় পৌঁছে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতলের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নোমান মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দীন।
তিনি বলেন, দুপুর আড়াইটার পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা ডা. অনিন্দিতা দত্তকে বাসায় পৌঁছে দিয়েছে। আমি যতদূর জেনেছি আমাদের প্রশাসন সেনাবাহিনীকে কল করেছিল। এছাড়া পুলিশও এসেছিল ঘটনাস্থলে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই চিকিৎসককে হাসপাতাল থেকে বের করে ধানমন্ডি পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে।
তার আগে সকাল ৮টায় অফিসে আসার পর থেকে একদল লোক অনিন্দিতা দত্তকে ক্যানসার ভবনে তার কার্যালয়ে আটকে রেখেছিল।
দুপুরে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. শেখ ফরহাদ যুগান্তরকে বলেন, ডা. অনিন্দিতা দত্ত প্রাণ গোপাল স্যারের মেয়ে। এখানে চাকরি করেন। তাদের বাড়ি কুমিল্লায় একটি পারিবারিক মামলা বা অনুরূপ ঝামেলা একদল লোক আজ তাকে এখানে অবরুদ্ধ করার চেষ্টা করে। মিডিয়াও নিয়ে এসেছিল। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে নিরপাত্তা দিয়ে রাখে। পরে আর্মি এসে বাসায় পৌঁছে দেয়। ওই সময় রেজিস্টার স্যার উপস্থিত ছিলেন, তিনি ভালো বলতে পারবেন। পরে রেজিস্টার ডা. নজরুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে করা হলে তিনি সাড়া দেননি।
অনিন্দিতা দত্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। বিভাগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ ব্লকে, ক্যানসার ভবনে। তার বাবা ডা. প্রাণ গোপাল ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তৎকালীন বিএসএমএমইউর উপাচার্য ছিলেন। ২০২১ সালে তিনি কুমিল্লা-৭ আসনের উপনির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, ৫ অগাস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর প্রাণ গোপাল দত্তের বিরুদ্ধে ঢাকা ও কুমিল্লায় কয়েকটি মামলা হয়েছে। সেসব মামলায় আসামি করা হয়েছে অনিন্দিতা দত্তকেও। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে পতনের পর থেকে অনিন্দিতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছিলেন না। দুদিন ধরে তিনি আসা শুরু করেছেন।
ওই চিকিৎসক বলেন, সকালে এক দল লোক এসে ক্যানসার ভবনের চার তলার একটি কক্ষে অনিন্দিতাকে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে শাহবাগ থানা পুলিশ ও বেলা দেড়টার দিকে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন।
অনিন্দিতা দত্তকে যারা অবরুদ্ধ করেছিলেন তাদের একজন রুবেল আহমেদ।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, অনিন্দিতা দত্তকে তারা অনেকদিন ধরে খুঁজছেন, কিন্তু পাচ্ছিল না। রোববার সকালে মামলার বাদী তাদের জানিয়েছেন অনিন্দিতা দত্ত এখানে (বিশ্ববিদ্যালয়ে) অফিস করছেন। ইনফরমেশন পেয়ে সকাল ৭টা থেকে আমরা এখানে অবস্থান করছি। আমাদের শাহবাগের ছাত্রদলের ছেলেপেলে যারা আছে তারা এখানে অবস্থান করেছেন। যারা আওয়ামী লীগ, ফ্যাসিস্ট যারা আছে তারা আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যেতে চাচ্ছিল, লুকাইতে চাচ্ছিল। রুবেল আহমেদ নিজেকে শাহবাগ থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি বলেন, সাদ্দামের নেতৃত্বে তারা এখানে এসেছেন।